Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকা বোর্ডে ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা

প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ভুলে ভরা প্রশ্নপত্রেই অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা বোর্ডের চলতি বছর এসএসসির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পরীক্ষা। ৪০টি বহুনির্বাচনী প্রশ্নের মধ্যে ভুল উত্তর রয়েছে চারটি প্রশ্নের। ফলে পরীক্ষা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন শিক্ষার্থীরা। মূল পাঠ্যবইয়ের প্রশ্ন ও উত্তরের সাথে পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তরের ভিন্নতার কারণে বিভ্রান্তিতে পড়ে অনেকেই ভুল উত্তর দিয়েছেন। আর এতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাপ্য নম্বর থেকে বঞ্চিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়, গত ১ মার্চ এসএসসির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের বহুনির্বাচনী এবং ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৪০ নম্বরের বহুনির্বাচনী পরীক্ষার প্রশ্নে দেখা যায়, এতে চারটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর নেই কিংবা একাধিক সঠিক উত্তর দেয়া হয়েছে। আর এতে বিপাকে পড়েন পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা। কোনো প্রশ্নে একাধিক সঠিক উত্তর আবার কোনো প্রশ্নে সঠিক উত্তর না থাকায় বিভ্রান্তিতে অনেকেই ভুল উত্তর দিয়েই এসেছেন। আর এতে প্রশ্নকর্তাদের ভুলের কারণে প্রাপ্য নম্বর থেকে বঞ্চিত হতে পারে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের প্রশ্ন Ñ প্রশ্নকর্তার ভুলে শিক্ষার্থীরা কেন নম্বরবঞ্চিত হবে? অবিলম্বে এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাও চেয়েছেন তারা। গত ১ মার্চ অনুষ্ঠিত ওই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র থেকে দেখা যায়, প্রশ্নপত্রে ১৬নং প্রশ্নের জন্য উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়, ‘ঢাকার রমিজ সাহেব তার পোশাক কারখানার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার নতুন কিছু মেশিন কিনলেন। ফলে তার কারখানায় আরও কিছু শ্রমিক নিয়োগ দিতে হয় এবং তার মুনাফা আগের চেয়েও বেড়ে যায়। উদ্দীপকের পর প্রশ্নে বলা হয়, রমিজ সাহেবের ১০ লাখ টাকা ব্যয়কে অর্থনীতির ভাষায় কী বলে? উত্তরে ক ও খ-তে বিনিয়োগ ও মূলধন রয়েছে। বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পাঠ্যবইয়ের বাংলা ভার্সনের (মুদ্রণ : নভেম্বর ২০১২) ১৫৪নং পৃষ্ঠাতে প্রদত্ত টীকায় অর্থ ও যন্ত্রপাতিকে মূলধন হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। আবার পৃষ্ঠা নং ১৫৫-তে প্রদত্ত টীকায় অর্থ ও যন্ত্রপাতিকে বিনিয়োগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর ফলে ১৬নং প্রশ্নে ক ও খ দুটি উত্তরই সঠিক হয়।
২৯নং প্রশ্নের আগে উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়, ‘জহির সাহেব বিদেশ ভ্রমণে যাবেন। সেজন্য তিনি তার ব্যাংক হিসেব থেকে টাকা তুললেন এবং ঐ ব্যাংক থেকেই বিনিময় বিল ভাঙিয়ে নিলেন।’ এই উদ্দীপকের প্রশ্নে বলা হয়, উক্ত ব্যাংকের আরও কাজ হলোÑ পল্লী অঞ্চলে স্বকর্মসংস্থানের জন্য ঋণ দেয়া, নোট প্রচলন করা এবং অলংকার গচ্ছিত রাখা। প্রশ্নটির উত্তর ১ ও ৩ হওয়ার কথা। কিন্তু উত্তরের ক্ষেত্রে ১ ও ৩-এর কোনো অপশন রাখা হয়নি। বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের ১৯৫নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে নোট প্রচলনের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। এছাড়া নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্যবই ফিন্যান্স ও ব্যাংকিংয়ের ১২০নং পৃষ্ঠায় রয়েছে নোট প্রচলনের ক্ষমতা বা এখতিয়ার একমাত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। ফলে এই প্রশ্নে সঠিক উত্তরের অপশন রাখা হয়নি। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্ত হয়েছেন। ২৯নং প্রশ্নে বলা হয়, ‘সামাজিক পরিবর্তনের অন্যতম উপাদান কোনটি? উত্তরে উল্লেখ রয়েছে Ñ শিক্ষা, নদী ভাঙা, যোগাযোগ, শিল্পায়ন। ইংরেজি ভার্সনেও একই প্রশ্ন এবং উত্তরের অপশন রাখা হয়। অথচ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের সামাজিক পরিবর্তন-সংক্রান্ত পাঠে কোথাও সামাজিক পরিবর্তনের অন্যতম উপাদান হিসেবে কোনো উপাদানকে চিহ্নিত করা হয়নি। তাছাড়া ইংরেজি প্রশ্নটির ক্ষেত্রেও একইভাবে উল্লেখ করা হয়নি। ৩০নং প্রশ্নের ক্ষেত্রে বাংলা ভার্সনের প্রশ্নে জাতিসংঘ শিশু অধিকার কনভেনশন অনুযায়ী শিশু কারা? এর উত্তরে অনূর্ধ্ব ১৬ ও অনূর্ধ্ব ১৮ রয়েছে। তবে ইংরেজি ভার্সনের প্রশ্নে তা ১৬ ও ১৮ বছরের বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, আমাদের প্রশ্ন আমরা করিনি, অন্য বোর্ড করেছে। সেই প্রশ্নে আমরা পরীক্ষা নিচ্ছি। বিষয়টি আমরা খোঁজ নেব কোন বোর্ড প্রশ্ন করেছে এবং কী কী ভুল করেছে। ভুল প্রশ্নের কী ব্যবস্থা নেবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাকা বোর্ডে ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ