পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার: নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ৭ খুন মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেন, র্যাব কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর (অব.) আরিফ হোসেন, লে. কমান্ডার (অব.) এমএম রানাসহ অন্যান্য আসামীরা কেউ জেলখানা আবার কেউ অসুস্থতার সনদ নিয়ে হাসপাতালে জামাই আদরে অবস্থান করছেন। এই লোমহর্ষক হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত আসামীদের সাথে এই জামাই আদরের আপ্যায়ন দেখে নারায়ণগঞ্জবাসী হতবাক।
গত সোমবার ২৯ ফেব্রুয়ারী এই মামলার ৩৫ জন আসামীর মধ্যে প্রধান আসামীসহ ২৩ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। এদিকে বিচার কাজ শুরুর আগে আদালতের এজলাস থেকে সাংবাদিকদের বের করে দেওয়ায় গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। পরবর্তীতে অবশ্য এজলাসে প্রবেশে কড়াকড়ি শিথিল করা হয়। আদালত ও সরকার কর্তৃক নিয়োজিত আইনজীবীদের আচার-আচরণে এই মামলার ভবিষ্যত নিয়ে খোদ আইনজীবীদের মধ্যেই দেখা দিয়েছে সন্দেহ। এদিকে নিহতদের স্বজনদের অভিযোগ আসামী পক্ষের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা মামলার সাক্ষীদের জীবন নাশের হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছে যাতে সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষী দিতে না যায়।
বাদী পক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আসামী পক্ষ গত সোমবার ২৯ ফেব্রুয়ারী আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ বানচাল করার চেষ্টা করেছিল। তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি বিজ্ঞ বিচারকের কারণে। আদালতে একটি মামলার বাদী ডা. বিজয় কুমার পাল সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। পরে তাকে ২২ আসামীর নিয়োজিত আইনজীবীরা পর্যায়ক্রমে জেরা করেন। গত ২৯ ফেব্রুয়ারী সোমবার জেরা শেষ না হওয়ায় আদালত ডা. বিজয় কুমার পালকে জেরা করার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আগামী ৭ মার্চ। এর আগে আগামী ৩ মার্চ অপর মামলার বাদী ডা. সেলিনা ইসলাম বিউটির সাক্ষ্য প্রদানের তারিখ ধার্য করা হয়েছে। যদিও বিউটি গতকাল সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতে পিপি এডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, ৭ খুনের ঘটনায় দায়েরকৃত ২ মামলার একটির বাদী ডা. বিজয় কুমার পাল সাক্ষী দিয়েছেন। সাক্ষী শেষে তাকে পলাতক ও উপস্থিত ২২ আসামীর আইনজীবীরা জেরা করেন। জেরা শেষ না হওয়ায় আগামী ৭ মার্চ পরবর্তী জেরার তারিখ ধার্য করা হয়েছে। এছাড়া অপর মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি আদালতে উপস্থিত থাকলেও সময় সংকুলান না হওয়ায় তার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ৩ মার্চ ধার্য করা হয়েছে। গত সোমবার (২৯ ফেব্রুয়ারী) সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঢাকা ও গাজীপুর থেকে ৫ এবং নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে ১৮ আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার ৩৫ আসামীর মধ্যে যারা উপস্থিত ছিলেন তারা হলেন, নূর হোসেন, লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর (অব.) আরিফ হোসেন, লে. কমান্ডার (অব.) এমএম রানা, হাবিলদার এমদাদুল হক, আরজিও-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া ও বিল্লাল হোসেন, সিপাহী আবু তৈয়ব, কনসটেবল শিহাব উদ্দিন, এসআই পুর্ণেন্দু বালা, ল্যান্স কর্পোরাল রহুল আমীন, এএসআই বজলুর রহমান, হাবিলদার নাসির উদ্দিন, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, সৈনিক নুরুজ্জামান, কনসটেবল বাবুল হাসান, সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর, মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনের সহযোগী মোস্তফা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দিপু, রহম আলী এবং আবুল বাশার।
এখনো পলাতক ১২ জন
সাত খুনের ঘটনায় আদালতে যে ৩৫ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠিত হয়েছে তার মধ্যে এখনো ১২ জন পলাতক রয়েছে। ওই ১২ জনের মধ্যে মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনের ৪ সহযোগী রয়েছেন। বাকীরা র্যাব-১১’র সাবেক সদস্য। সেলিম, সানাউল্লাহ সানা, শাহজাহান এবং জামাল উদ্দিন। র্যাব সদস্য-কর্পোরাল মোখলেছুর রহমান, সৈনিক আবদুল আলীম, মহিউদ্দিন মুন্সি, আল আমীন শরীফ, তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবীর, এএসআই কামাল হোসেন, কনসটেবল হাবিবুর রহমান।
চাঞ্চল্যকর এই মামলায় ৩৫ আসামীর মধ্যে মোট ২১ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। এছাড়া ঘটনার সাক্ষী হিসেবে ১৫ র্যাব সদস্যসহ ২০ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দুপুরে আদালত থেকে ফেরার পথে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোড থেকে অপহৃত হন। অপহরণের ৩দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয় জনের ও পরদিন ১ মে আরো একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
অস্ত্র মামলায় নূর হোসেন আদালতে
৭ খুন মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত ৩টি অস্ত্র মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছিলো। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (দ্বিতীয় আদালত) কামরুন্নাহারের আদালতে তাকে হাজির করা হয়।
এ ব্যাপারে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত অস্ত্র আইনের পৃথক ৩টি মামলায় ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে। বুধবার আদালত শুনানি শেষে আগামী ১৩ এপ্রিল ৩টি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।