পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশের বীমা শিল্পের উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের কর আরোপ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বীমা মালিক ও নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। সংগঠনটির দাবি, বীমার বিভিন্ন স্তরে যেভাবে কর আরোপ করা হয়েছে তাতে গ্রাহকরা বীমা করতে আসবে না। এজেন্টরা বীমা কোম্পানির এজেন্ট হতে আগ্রহ হারাবেন। এতে বীমা কোম্পানিগুলোর পক্ষে টিকে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।
গতকাল বিআইএ’র কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে বীমা কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন দাবি তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন বিআইএ’র সভাপতি শেখ কবির হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিআইএ’র সহ-সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু, বিআইএ’র কার্যনির্বাহী সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, স্বদেশ লাইফের চেয়ারম্যান নুরুল আলম, নীটল ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান মনিরুল হক, মেঘনা লাইফ ও কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন পাভেল প্রমুখ। শেখ কবির হোসেন বলেন, আমাদের যে দাবি সেগুলো অতীতেও করেছি। এখন আবার করছি। প্রত্যেকবার বাজেটের আগে আমরা একই দাবি করি। কিন্তু এ পর্যন্ত আমরা কিছুই পাইনি। ‘আমাদের দাবিগুলোকে অর্থমন্ত্রী নীতিগতভাবে সমর্থন করেন। অর্থমন্ত্রীর অভিমত আমাদের দাবিগুলো পূরণ করা উচিত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও (এনবিআর) আমাদের দাবির সঙ্গে একমত। তারপরও আমরা কিছুই পাচ্ছি না। বীমা শিল্পের স্বার্থে আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা দাবিগুলো করেই যাব বলেন-শেখ কবির হোসেন।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের সার্কুলার অনুযায়ী জীবন বীমা পলিসির ডিপোজিট হোল্ডারদের মুনাফার ওপর ৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স কর্তন করা হয়। আবার এজেন্টদের কমিশনের বিপরীতে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর এবং ৫ শতাংশ উৎসে কর কর্তনের বিধান রয়েছে। এতে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর ডিপোজিট পলিসি হোল্ডারদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে এবং যারা বীমার এজেন্ট হন তারা এজেন্ট হওয়ার আগ্রহ হারাচ্ছেন। বীমা শিল্পের উন্নয়নে এসব বাধা দূর করার উপায় হিসেবে তিনি বলেন, ডিপোজিট হোল্ডারদের মুনাফার ওপর ৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স, এজেন্টদের কমিশনের বিপরীতে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর এবং ৫ শতাংশ উৎসে করের যে বিধান রয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে বীমা কোম্পানির ব্যবসা কমতেই থাকবে এবং কোম্পানিগুলোর পক্ষে টিকে থাকা কষ্টসাধ্য হবে। ২০১৪ সালের সার্কুলার অনুযায়ী কর কর্তন করায় ইতোমধ্যে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর ব্যবসা কমে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বীমা শিল্পের উন্নয়নে বাধা দূর করতে আরও তিনটি দাবি জানানো হয়। এরমধ্যে রয়েছে- পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা কোম্পানিগুলোর কর্পোরেট ট্যাক্সের হার অন্য খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানির মতো ২৫ শতাংশ করা। বর্তমানে তালিকাভুক্ত বীমা কোম্পানিগুলোকে ৪০ শতাংশ হারে কর্পোরেট ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের উপর ৪০ শতাংশ আয়কর নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ কবির হোসেন বলেন, ব্যবস্থাপনা খাতে অতিরিক্ত ব্যয় করলে আইন অনুযায়ী বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) জরিমানা করতে পারে। এটি নিতান্তই আইডিআরএ’র কাজ, আয়করের বিষয় না। কিন্তু ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খরচ করা হলে তার ওপর ৪০ শতাংশ আয়কর আরোপ করা হয়েছে। এতে দুর্বল কোম্পানিগুলোর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া ব্যয়ের ওপর আয়কর আরোপের কোন বিধান নেই। তাই অতিরিক্ত ব্যয়ের ওপর নির্ধারণ করা এই আয়কর প্রত্যাহার করতে হবে। এ সময় তিনি করমুক্ত ডিভিডেন্ট আয়ের সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে আড়াই লাখ টাকা করার দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনের শেষ অংশে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিআইএ’র সহ-সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, উন্নত দেশের জিডিপিতে বীমা কোম্পানির অবদান ৬০ শতাংশ পর্যন্ত আছে। কিন্তু আমাদের দেশে জিডিপিতে বীমার অবদান এক শতাংশ না। প্রণোদনা না দিলে এই শিল্প এগুবে না। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বীমা শিল্পের উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণে আইডিআরএ গঠন করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় গত ছয় বছরে বীমা শিল্পের উন্নয়নে আমরা আইডিআরএ’র মাধ্যমে সেরকম সাপোর্ট পাইনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।