Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আলোর নিচে অন্ধকার

প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৯ পিএম, ২ মার্চ, ২০১৬

নূরুল ইসলাম : এ যেন আলোর নিচে অন্ধকার। রাজধানীর গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের ওপর ও নিচে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। ওপরে ঝকঝকে যানজটমুক্ত রাস্তা হলেও নিচের রাস্তা ভাঙাচোরা, গর্ত-খানাখন্দ, ময়লা আবর্জনা আর ধুলাবালিতে সয়লাব। ফ্লাইওভারের পিলারঘেঁষে মোড়ে মোড়ে ট্রাক আর বাসস্ট্যান্ড। রাস্তা দখল করে হকারদের ব্যবসা, উন্মুক্ত ডাস্টবিন, ময়লা আবর্জনার ভাগাড় Ñ সব অনিয়ম যেন বাসা বেঁধেছে এখানে। মানুষ চলাচলের ফুটপাতসহ গাড়ি চলাচলের রাস্তাও বন্ধ করে বসানো হয়েছে অবৈধ দোকানপাট। দিনে-রাতে প্রকাশ্যে চলছে মাদক বেচাকেনা ও সেবন। বখাটে, স্থানীয় মাস্তান, ছিনতাইকারী ও মলমপার্টির সাথে দৌরাত্ম্য বেড়েছে প্রতারকচক্রের। খানাখন্দ ও গর্তভরা রাস্তায় চলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। নানা কায়দায় বাধা সৃষ্টির জন্য সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে নির্বিঘেœ বাস চলাচল করতে পারছে না। ফ্লাইওভারের নিচের এসব অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা দেখার যেন কেউ নেই। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ফ্লাইওভার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান অরিয়ন গ্রুপ ও পুলিশ সবাই নীরব। জানতে চাইলে ৪৯নং ওয়ার্ড কমিশনার বাদল সরদার এসব অব্যস্থাপনা ও বিশৃঙ্খল অবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তা মেরামত ও সংস্কারের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের মালিক সমিতির একজন নেতা জানান, আজ বৃহস্পতিবার এসব নিয়ে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সাথে পরিবহন মালিকদের বৈঠকে বসার কথা।
২০১৩ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করেন। ফ্লাইওভারটি খুলে দেওয়ার পর ঢাকার ব্যস্ততম প্রবেশপথ যাত্রাবাড়ী থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত রাস্তা যানজটমুক্ত হয়। কিন্তু ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তায় সব ধরনের অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, অব্যবস্থাপনা দানা বাঁধে। নির্মাণকাজ চলার সময় মাঝেমধ্যে ফ্লাওভারের নিচের রাস্তা সংস্কার করা হলেও উদ্বোধনের পর নিচের দিকে আর কেউ নজর দেয়নি। এতে করে দীর্ঘদিনে নিচের সবক’টি রাস্তা ভেঙে একাকার হয়ে কোথাও কোথাও ২-৩ ফুট গর্ত হয়ে গেছে। নির্মাণকাজের সময় ফেলে রাখা শুকনো মাটি, আবর্জনা, ধুলোবালিতে অন্ধকার। যে কেউ এই রাস্তা দিয়ে একবার গেলেই অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। বিশেষ করে যাদের শ্বাসকষ্ট রোগ আছে তাদের জন্য রাস্তাটি ভয়ঙ্কর বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, ফ্লাইওভারের নিচে কাজলা থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত রাস্তা অনেকদিন ধরে সংস্কার না করায় প্রতিদিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন রিকশা, বাইসাইকেল, মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহনের আরোহীরা। ঘন ধুলায় এই পথে হাঁটার সময় শ্বাস নেওয়াই কষ্টদায়ক। ফ্লাইওভার নির্মাণের সময় ভারী যন্ত্র আর গাড়ি ব্যবহারের কারণে এই রাস্তা ধীরে ধীরে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সেই থেকে নজর না দেয়ায় রাস্তাগুলো এখন মরণফাঁদে রূপ নিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, যানজট কমানোর অজুহাতে নিচের রাস্তার দিকে একেবারেই নজর দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। ফ্লাইওভারের পূর্বপ্রান্ত কাজলা থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ছোটবড় খানাখন্দ রয়েছে অজ¯্র। ফ্লাইওভারের নিচে অনেকদিন ধরে জমে থাকা শুকনো মাটি ও শুকিয়ে যাওয়া ময়লা-আবর্জনা এলাকার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। ব্যস্ত এ রাস্তা দিনরাত সব সময়ই ঘন ধুলায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে। এতে আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা ভুগছেন সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে। স্থানীয়রা এখন বর্ষা আতঙ্কে ভুগছেন। তারা জানান, এখন যেমন ধুলার যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে, তেমনি বর্ষায় এই সড়কের দুই পাশের দোকানগুলোকে পোহাতে হয়েছে কাদার উপদ্রব। সায়েদাবাদ জনপদ মোড়ের দোকানদার শুক্কুর আলী বলেন, অব্যবস্থাপনার কারণে একসময়ের ব্যস্ত রাস্তার পরিবেশ বিষিয়ে উঠছে। এসব কারণে কাস্টমার কমে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা হয়েছে শোচনীয়। আমরাও তো অসুস্থ হয়ে পড়ছি। তিনি ডাক্তার আর কি বলবে, ধুলা খেয়ে যে অসুস্থ হচ্ছি সেটা তো নিজেরাই টের পাচ্ছি। একই অভিযোগ শ্যামলী পরিবহনের এক কাউন্টারম্যানেরও। তিনি বলেন, ফ্লাইওভার উদ্বোধনের পর প্রায় তিন বছর ধরে এ অবস্থা। পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে অনেক রিপোর্টও ছাপা হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার দেখি না। তবে এ অবস্থা বেশিদিন থাকবে না বলে আশার বাণী শোনালেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৯নং ওয়ার্ড কমিশনার বাদল সরদার। তিনি বলেন, রাস্তা সংস্কারের জন্য সিটি কর্পোরেশন আড়াইশ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে এক পাশের রাস্তার কাজ শুরু হয়ে গেছে। মাস খানেকের মধ্যেই সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে।
রাস্তা দখলের মহোৎসব
ফ্লাইওভারের নিচে ও আশপাশের এলাকা কুতুবখালী, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, কাজলা, টিকাটুলী, জয়কালি মন্দির, কাপ্তান বাজার, ধলপুর, চানখাঁরপুল ও গুলিস্তান এলাকা ঘুরে রাস্তা দখলের মহোৎসব দেখা গেছে। ফ্লাইওভারের নিচে যেখানে-সেখানে গড়ে উঠেছে ট্রাক, বাস, টেম্পো ও হিউম্যান হলার স্ট্যান্ড। যাত্রাবাড়ী থেকে সায়েদাবাদ হয়ে গুলিস্তানের দিকে আসার জন্য ডানে-বাঁয়ে দুটি করে লেন থাকলেও তা ব্যবহার করা হচ্ছে না। বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী থেকে আসার পথে এক লেন পুরোটাই খানাখন্দে ভরা। এ কারণে গাড়ি চলে এক লেন দিয়ে। জনপদ মোড় থেকে যাত্রাবাড়ীর দিকে যেতেও একই অবস্থা। বাঁয়ের লেন দখল করে রাখা হয়েছে বাস, ট্রাক বা পুরনো গাড়ি। জনপদ মোড়ের এক পাশে মিনি ট্রাক টার্মিনাল। এখানে গাড়ি ঘুরবে সে জায়গাটুকুও নেই। ঘুরতে গেলেই যানজট লেগে যায়। সায়েদাবাদ টার্মিনালের মুখের রাস্তা বেদখল হয়ে গেছে। টার্মিনালে প্রবেশ করার রাস্তাও বন্ধ রাখা হয় গাড়ি দিয়েই। পেছনের দিকে ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে কোনো গাড়ি টার্মিনালে ঢুকতে গেলেও রাস্তার কারণে বাধাপ্রাপ্ত হবে। এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ী ফাঁড়ির ইনচার্জ নাসির বলেন, রাস্তা দখল করে দোকান করা নিষেধ। আমরা প্রতিনিয়ত দোকানগুলো তুলে দিই। কিছুক্ষণ পর তারা আবার বসে। জনবলের অভাবে সার্বক্ষণিক সব দিকে নজর রাখা যায় না জানিয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ বলেন, আবার রাস্তা যাতে না দখল হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ধলপুর মোড় থেকে টার্মিনালের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটি জনপদ মোড়ের দিকে এসেছে তার একাংশ দখল করে নিয়েছে হকাররা। বাকি অংশে ফেলে রাখা হয়েছে ডাস্টবিন। সেখানে গড়ে উঠছে পাবলিকের প্র¯্রাবখানা। দুর্গন্ধে আশপাশে যাওয়াই যায় না। জনপদ মোড়ের দুটি লেন দখল করে নিয়েছে ফুটপাতের হকাররা। যে লেন দিয়ে গাড়ি টার্মিনালে প্রবেশ করবে সেই লেনও দখল করে রাখা হয়েছে। যাত্রাবাড়ীর দিকে সামাদ সুপার মার্কেটের সামনেও রাস্তা দখল করে বসানো হয়েছে ফার্নিচারের দোকান। যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে মাওয়া সড়কে যাওয়ার রাস্তাও দখল করে নিয়েছে মুন্সীগঞ্জের কয়েকটা বাস সার্ভিস। একই মোড় থেকে ডেমরার দিকে যাওয়ার রাস্তা দখল করে বাচ্চু নামে এক শ্রমিক নেতা টেম্পো স্ট্যান্ড বসিয়ে চাঁদাবাজি করছেন। যাত্রাবাড়ী থানার সামনে থেকে আবার রুট পারমিটবিহীন মিনিবাস সার্ভিস চলে চিটাগাং রোড পর্যন্ত। এক কারণে সেখানেও যানজট লেগেই থাকে। এসব অব্যস্থাপনার কারনে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সায়েদাবাদ টার্মিনালের যাত্রীদের। তারা টার্মিনালে আসতে গিয়ে বা নামতে গিয়ে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। একই কারণে বাস মালিকরাও আছেন অস্বস্তিতে। রাস্তা দখল, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও ধুলাবালির কারণে কাউন্টার বসিয়েও টিকিট বিক্রি করতে পারছেন না তারা। কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি না হওয়ায় প্রতিটি বাসেই বিশৃঙ্খল পরিবেশের কারণে যাত্রীর সাথে পরিবহন শ্রমিকদের হরহামেশাই বাক-বিত-া এমনকি মারামারির ঘটনাও ঘটছে। টার্মিনালের বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, আমরা বিষয়গুলো নিয়ে মেয়র সাহেবের সাথে আলোচনার জন্য শিগগিরই বসছি। আশা করছি তিনি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন। ৪৮নং ওয়ার্ড কমিশনার আবুল কালাম আনু ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তা, পরিবেশ যানাবাহন ও মানুষ চলাচলের জন্য অযোগ্য উল্লেখ করে বলেন, ইতোমধ্যে রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। রাস্তা হয়ে গেলে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজও হবে। তিনি বলেন, আশা করছি এক মাসের মধ্যে ফ্লাইওভারের নিচের পুরো চিত্রটাই পাল্টে যাবে।
ফ্লাইওভারের নিচে মাদকের রাজ্য
ফ্লাইওভারের নিচে চানখাঁরপুলের ফুটপাতে মাদকসেবীদের আস্তানা। রাতদিন মাদক বেচাকেনা চলে এখানে। ইয়াবা, হেরাইন, গাঁজা, প্যাথেড্রিনসহ সব ধরণের মাদক পাওয়া যায় ফ্লাইওভারের নিচে। অনেকটা নিরাপদ জেনেই মাদকসেবী ও বিক্রেতারা এই স্থানকে বেছে নিয়েছে। পথচারীরা এ পথে যেতে চান না। একদিকে উৎকট গন্ধ তার উপর মাদকসেবীদের উৎপাত। দিনের আলোতেও ছিনতাই হয়। স্থানীয়রা জানান, চানখাঁরপুল মোড় থেকে নিমতলী গেট পর্যন্ত ফুটপাতজুড়ে অর্ধশতাধিক মাদকসেবীর আড্ডা থাকে দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই। অনেকে এখানে সেবন করে এখানেই ঘুমায়। আলাপকালে এক মাদকসেবী জানান, এখানে পুলিশের ঝামেলা নেই, হাত বাড়ালেই মাদক পাওয়া যায়, আবার নিরিবিলি স্থান বলে নির্বিঘেœ সেবন করার মজা তো আছেই। জানা গেছে, ঢাকার বাইরে থেকে বিভিন্ন এলাকা পেরিয়ে বিভিন্ন ধরনের মাদক এখানে আনে বড় বড় দুজন ব্যবসায়ী। তাদের কাছে থেকে পাইকারি কিনে খুচরা বিক্রি করে ১০/১২ জন। এরাই দিন রাত মাদক বিক্রি করে। একাধিক মাদকসেবীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীর অন্যান্য স্থানের তুলনায় এখানে মাদকের দাম অপেক্ষাকৃত কম। সে কারণে এখানে আসে অনেকেই। এখানে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ইয়াবা। ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান, ধানমন্ডি থেকেও অনেকে এখানে আসে ইয়াবা কিনতে। তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের শিক্ষার্থীও এখানকার মাদকের ক্রেতা বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানান, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, রিকশাচালক থেকে শুরু করে সবধরণের মানুষকেই এখানে দেখা যায়। কেউ আবার প্রাইভেট কার নিয়েও আসে। পুরান ঢাকার বাসিন্দা হোটেল ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল বলেন, আগে এ স্থানে মাদক বিক্রির এতো অবাধ সুযোগ ছিল না। ফ্লাইওভার হওয়ার পর এর নিচের অংশে নিরিবলি পরিবেশে অবাধে মাদক বিক্রি চলছে। সহজলভ্য হওয়ায় এলাকার ছেলেরাও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। অভিযোগ রয়েছে থানা পুলিশকে মোটা অংকের মাসোহারা দিয়েই চলছে এখানকার মাদক ব্যবসা। অন্যদিকে, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের চারিদিকে একইভাবে মাদক ব্যবসা চলছে। উত্তর যাত্রাবাড়ীর বিউটি, সায়েদাবাদের লাকি, দয়াগঞ্জের হাসি, দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর রহিমন, পুলিশের সোর্স আলো, আঁখি ও রেখা, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের সাফির স্পটের ইয়াবা বিক্রি হয় ফ্লাইওভারের আশেপাশেই। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সায়েদাবাদ টার্মিনালের বিভিন্ন রুট কমিটিতেও মাদক ব্যবসায়ী ঢুকে গেছে। তারা সহযোগীদের দিয়ে অবাধে মাদক ব্যবসা করছে। রুট কমিটির কোনো কোনো নেতার আবার অতীতে মাদক ব্যবসার রেকর্ডও আছে।
ছিনতাইকারী ও মলমপার্টির দৌরাত্ম্য
সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান এলাকায় বহু আগে থেকেই ছিনতাইকারী, মলমপার্টি, অজ্ঞানপার্টি ও প্রতারকচক্রের দৌরাত্ম্য ছিল। ফ্লাইওভার নির্মিত হওয়ার পর এদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়েছে। ভুক্তভোগীরা জানান, ফ্লাইওভারের নিচে কোনো রাস্তাই এখন আর সচল নেই। কোনো না কোনা বাধাবিপত্তি আছেই। এ কারণে ছিনতাইকারীচক্র ইচ্ছা করলেই যে কোনো যাত্রী বা পখথচারীকে অনায়াসে আটকাতে পারে। ফ্লাইওভারের নিচে প্রতিনিয়ত ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে মানুষ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়াচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু যাত্রাবাড়ী এলাকাতেই ৫টি ছিনতাইকারী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, দয়াগঞ্জের বর্তা সেলিম ও আল আমীন গ্রুপ, উত্তর যাত্রাবাড়ীর দীন ইসলাম ও বাঘা গ্রুপ, শনিরআখড়ার কুত্তা লিটন গ্রুপ এবং কাজলার আরমান ও সোর্স খোকন গ্রুপ। এছাড়া আছে নোয়াখাইল্যা রফিকের অজ্ঞানপার্টির দল, সায়েদাবদ টার্মিনালের মলমপার্টি হালিমের দল, যাত্রাবাড়ীতে মলমপার্টির নেতা সেলিনার দল এবং বিবিরবাগিচার বাবুর ভাই বিল্লালের দল। এরা দিনেদুপুরে মানুষকে অজ্ঞান করে টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা আলোকিত ফ্লাইওভারের নিচের এই অন্ধকার জগৎ থেকে মুক্তি চাই।



 

Show all comments
  • Abdul ahad ৩ মার্চ, ২০১৬, ৯:০৭ পিএম says : 0
    we wish that city corporation will be take necessary action very soon.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আলোর নিচে অন্ধকার

৩ মার্চ, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ