পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কারো হস্তক্ষেপ দেশের জনগণ মেনে নেবে না। বাংলাদেশের মানুষ কারো প্রভুত্ব স্বীকার করবে না। শুক্রবার বিকালে দলের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
বিএনপি প্রধান বলেন, আমাদের দেশের অবস্থা দেখে অনেকে এগিয়ে আসতে চায়; অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার জন্য এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের নামে দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে দেশকে দুর্বল করার জন্য।
সাবধান বাণী উচ্চারণ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যখন ৮ কোটি লোক ছিল নিজেরা ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। আজকে ১৬-১৭ কোটি লোক ঐক্যবদ্ধ, তাদের কারোর সাহায্যের প্রয়োজন নেই। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমরা সকলকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, কিন্তু কেউ যদি আমাদের বন্ধু হয়ে প্রভু হতে চায়, সেটা আমরা কখনো মেনে নেবো না, মানব না। প্রয়োজন হলে দেশের মানুষের জন্য আবারো সংগ্রাম করার হুঁশিয়ারিও দেন আপোষহীন নেত্রী খ্যাত বেগম খালেদা জিয়া।
নতুন বছর সকলের জন্য শুভ হবে কামনা করে দেশবাসীসহ নেতা-কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, নববর্ষ যেন বাংলাদেশের মানুষের মনের সত্যিকারের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে। আমরা কী চাই? আমরা চাই গণতন্ত্র, উন্নয়ন, শান্তি, জনগণের কল্যাণ, প্রতিটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, শিক্ষা সুযোগ প্রদানসহ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। তাই গণতন্ত্র ও জনগণের কল্যাণের জন্য প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সবসময় জনগণের কল্যাণ ও জাতীয় ঐক্যে বিশ্বাস করে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব। আমরা দেশে সন্ত্রাস, গুম-খুন-হত্যা ও জঙ্গি হামলা বিদায় করব। বিদায় করব নানারকম ষড়যন্ত্র। এসব বিদায় করে দেশে প্রতিষ্ঠা করব শান্তি ও সুশাসন।
নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস’-এর আয়োজনে বাংলা নববর্ষ-১৪২৪ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।
দুপুর থেকে নয়া পল্টনের সড়কে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান সমাবেশে রূপ নেয়। বিকাল সাড়ে ৪টায় সুতির শাড়ি পরিহিত খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উদ্দেশে হাত নেড়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
বর্ণাঢ্য আয়োজনে তবলা, হারমোনিয়া, ডুগডুগি, বাঁশিসহ নানা বাদ্যযন্ত্রের মূর্ছনায় শুরু হয় পয়লা বৈশাখের জাসাসের এই অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে জাসাস শিল্পীরা ভাটিয়ালী, দেশাত্মবোধক, বাউল গান পরিবেশন করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন দলীয় নেতা-কর্মীদের আহŸান জানিয়ে বলেন, আজকে প্রয়োজন ঐক্যের, প্রয়োজন শান্তির, প্রয়োজন কল্যাণের। আসুন বাংলা নতুন বছরে আমরা আজকে শপথ করি, দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দূর করব এবং জনগণের কল্যাণ করব।
দেশের মানুষ কষ্টে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কয়েক দিন আগের যে বৃষ্টি ও বাইরে থেকে পানি এসে আমাদের হাওর অঞ্চলের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সে জন্য গরিব কৃষকদের পাশে গিয়ে আমাদের দাঁড়াতে হবে। তাদের সাহায্য করতে হবে, তারা যেন এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে পারে।
বেগম খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের পানি সমস্যা একটা বড় সমস্যা। সামনে শুকনো মৌসুম আসছে, এই মৌসুমে আমাদের পানির প্রয়োজন। সে জন্য আমরা বলতে চাই, আমাদের যে পানির প্রাপ্য সে পানি আমরা চাই। আমরা কারো কাছে দয়া চাচ্ছি না, কিন্তু আমরা আমাদের যতটুকু অধিকার, সেই অধিকারটুক চাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্য সমাপ্ত ভারত সফরের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বর্তমান স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী বেড়িয়ে এসেছেন কিন্তু নিজের দেশের মানুষের স্বার্থের কথা, নিজের দেশের মানুষের অধিকারের কথা বলতে পারেননি, কিছু করতে পারেননি। বরং আজকে তিনি নিজের দেশের মানুষের জন্য কিছু না করে দেশের মানুষের স্বার্থের কথা কিছু চিন্তা না করে নিজের দেশের সবকিছু অন্যের কাছে দিয়ে এসেছেন, তার বিনিময়ে কিছুই আনতে পারেননি।
তিনি বলেন, আজকে এতগুলো চুক্তি ও এমইউ হয়েছে। আমরা বলতে চাই, যদি তিনি (শেখ হাসিনা) সাহস করে শুধু একটা কথা বলতেই পারতেন, যে হ্যাঁ চুক্তি ও সমঝোতাগুলো আমার দেশের মানুষের সাথে আলাপ করে করব। কিন্তু আজকে যদি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দেন, তাহলে আমি সমঝোতা করব, তা না হলে করব না। এটা বললে আমরা সবাই তার পাশে থেকে সাহস ও সমর্থন জানাতাম।
বেগম খালেদা জিয়া বলেন, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম যদি করতে হয়, আমরা সেই সংগ্রাম করব ইনশাআল্লাহ এবং আমরা বিজয়ী হবো।
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও বক্তব্য রাখেন। জাসাস সভাপতি অধ্যাপক মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তরিকুল ইসলাম, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মোহাম্মদ শাহজাহান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, এ জেড এম ডা: জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আতাউর রহমান ঢালী, খায়রুল কবীর খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, নুরী আরা সাফা, আজিজুল বারী হেলাল, আমিনুল হক, হেলেন জেরিন খান, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, তাইফুল ইসলাম টিপু, নিপুন রায় চৌধুরী, সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, শফিউল বারী বাবু, আব্দুুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, রাজীব আহসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জাসাসের চিত্রনায়ক আশরাফউদ্দিন উজ্জ্বল, বাবুল আহমেদ, শায়রুল কবির খান, মনিরুজ্জামান মুনির, আহসান উল্লাহ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন ভুঁইয়া শিশির, সানাউল হক, সিবা সানু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে বেগম খালেদা জিয়া বর্ষবরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করে বিকাল সাড়ে ৫টায় গুলশানের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।