পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রির্পোটার : এক এগারো ষড়যন্ত্র হয়েছিলো বিশ্বাস করে থাকলে, কুশীলবদের কেনো বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না- প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
গতরাতে গুলশানের কার্যালয়ে বিগত আন্দোলনে চট্টগ্রাম জেলায় নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যদের আর্থিক অনুদান প্রদান উপলক্ষে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন এ বিষয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন, মাইনাস টু ফর্মূলা। আমরা যদি একসঙ্গে থাকতাম, তাহলে ১/১১ ওয়ালারা কিচ্ছু করার সাহস ছিলো না। কিসের জন্য? ক্ষমতায় যেতে হবে, তাদের সঙ্গে আতাঁত করার জন্যে। এটার কোনো দরকার ছিলো না।
খালেদা জিয়া বলেন, এক এগারোর জন্য মাহফুজ আনাম ( ডেইলি স্টার সম্পাদক) নয়, তিনি তো স্বীকার করেছেন। এর সাথে জড়িত গুটি কয়েক তো দেশেই আছে । তারা কেনো এখনো বহাল তবিয়তে আছে, তারা কেনো বাইরে আছে, ভেতরে নেই।
তিনি বলেন, তখন ডিজিএফআইয়ের প্রধান ছিলো রুমি (মেজর জেনারেল সৈয়দ ফাতেমী আহমেদ রুমি), এখন দেশেই আছে। মাসুদ (লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী) তো অস্ট্রেলিয়ায় ছিলেন। কতবার এক্সটেশন পেয়েছেন। কার মাধ্যমে পেয়েছেন এই সরকারের মাধ্যমে। কেনো তাকে ধরা হয় না। এখন তো দেশেই আছেন। হাসান মাশহুদ চৌধুরী যিনি এন্টি কোরাপশনে ছিলেন, দেশেই আছেন শুনেছি। সে দুর্নীতি দমন কমিশনে এসব মামলা করেছে। তাদের কেনো ধরা হয় না?
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, যদি সততা থাকে, সত্যি যদি উনি (প্রধানমন্ত্রী) এটা মিন করে থাকেন, তাদের ধরে দেখিয়ে দেবেন, প্রমান করে দেবেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) এটা মিন করছেন, সত্যি বলছেন।
এ অনুষ্ঠানের শুরুতে আন্দোলনে নিহত চট্টগ্রামের পাঁচলাইশের ষোলকবহরের হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী জেসমিন আক্তার এবং আন্দোলনে আহত পাহাড়তলীর সাগরিকার দক্ষিন কাট্টলীর মো. আরাফাত, মো, ইয়াছির, মোহাম্মদ রাজিব, সরাইপাড়ার মো. বদরুল আলম, চাঁদগাঁওয়ের ৪ নং ওয়ার্ডের নওশাদ আল জামসেদুর রহমান ও খুলশীর ঝাউতলার শাহ আলম মুনের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক প্রদান করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
এক এগারোর পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আরো বলেন, ১/১১ অবৈধ সরকার। সেই সময়ের কথা উনি(প্রধানমন্ত্রী) এখন উঠিয়েছেন। তাদের ( ১/১১ সেনা সমর্থিত ফখরুদ্দিন আহমেদ) এর শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানে উনি ( শেখ হাসিনা) গিয়েছিলেন। গণমাধ্যমের সবাই সব দেখেছেন। উনি সাংবাদিকদের বলেছেন, আমাদের আন্দোলনের ফসল। তার মানে উনি এটা (১/১১ ) করিয়েছেন। উনিও বাদ পড়তে পারেন না। এর অর্থ তিনি (শেখ হাসিনা) গণতন্ত্রকে শেষ করে দিয়ে অবৈধভাবে অগণতান্ত্রিক সরকারের হাত ধরে ক্ষমতায় আসতে চান। যদি অন্যায় না করে থাকি তাহলে কিসের ভয়। তিনি(শেখ হাসিনা) তাদের সঙ্গে কাকুতি-মিনতি করে ১১ মাসে বেরিয়েছেন।
১/১১ সময়ে নিজের কারাবাসের প্রসঙ্গ টেনে খালেদা জিয়া বলেন, আমি তাদের (১/১১ কুশীলব) সঙ্গে রীতিমতো ফাইট করেছি। বলেছি-তোমাদের কথা মতো আমি চলবো না। আমরা একটা নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আছে। আমি জনগনের সাথে বেঈমানি করে কিছু করতে পারবো না। দেশের মানুষের সঙ্গে বেঈমানি করতে পারবো না। সেজন্য আমি দেশ ছেড়ে কোথাও যাইনি। জেলখানায় ছিলাম। সেখানে আমি ১ বছর ৮ দিন ছিলাম।
অন্যদিকে শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেন, উনি ১১ মাসের পর বেরিয়ে বিদেশে চলে গেলো, হাতে মেন্দি-টেন্দি লাগিয়ে। উনি যেসব কাজ করেছেন, এটা ঠিক করেননি।
এরশাদের সমালোচনা করেও তিনি বলেন, ও তো দলাল আছে, সব সময় দালালীই করেছে।
দেশের আন্দোলন না থাকা সত্ত্বেও সরকারের দমন-পীড়নের কঠোর সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, দেশ মোটেই ভালো নেই। প্রতিনিয়ত মানুষ ধরছে। আমাদের লোকজন জামিন পাচ্ছে, আবার জেল গেইট থেকে নতুন মামলা দিয়ে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে। এগুলো কি ? আমি বলব ওরা (সরকার ) ১/১১ এর লোকদের থেকেও খারাপ কাজ করছে। এরজন্য একদিন তাদেরকে জবাব দিতে হবে।
আসন্ন ইউনিয়ন পরিদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, এটা নামমাত্র নির্বাচন। নির্বাচন নির্বাচন খেলা। গণতন্ত্রকে তারা হাস্যপ্রদ করে ফেলেছে। কারণ এই সরকার জনপ্রতিনিধির রায় নিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। তারা অবৈধভাবে সরকারের আছে।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বক্তব্য উদ্ধৃতি করে খালেদা জিয়া বলেন, প্রধান বিচারপতি যেগুলো বলেছেন, অবসরের যাওয়ার পরে আর রায় লেখার সুযোগ খাকে না। তার মানে উনি ( সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক) অবসরে যাওয়ার আগে যে রায়টা দিয়েছেন, ওইটি কায্কর। অর্থাৎ আরো দুইটি টার্ম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। আমাদের দাবিও সেখানে।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে কোনো নির্বাচন হয়নি। কাজেই আমাদের দাবি আরেকটা নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। তাদের যদি কোনো ভয় না থাকে, তাহলে সকলকে সমান সুযোগ দিয়ে সব দলের অংশ গ্রহনের একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন।
আন্দোলনে ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে বলে জানান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, এখানে কথা উঠেছে, যারা আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ গ্রহন করেছিলো, তাদেরকে দলে ভালো ভালো জায়গা দিতে হবে। আমিও করতে চাই, কিন্তু আমাকে সহযোগিতা করতে হবে। সত্যিকারভাবে যারা কাজ করেছে, তাদের নামগুলো আমাকে দিতে হবে। ছাত্র দল ও যুব দলের ছেলেরা এখন তারা ছোট নয়। এখন কিন্তু তাদের দলের দায়িত্ব নেয়ার সময় এসে গেছে। আমি বলব, বয়স্ক নেতা যারা আছেন, তারা দলকে অনেক দিয়েছেন, বয়স হয়েছে, এখন তাদেরকে আমরা উপদেষ্টা পরিষদের নিয়ে তরুনদের সামনে আনবো যাতে তারা দেশ ও দলের জন্য কাজ করতে পারে- এটা আমার ইচ্ছ। আমি সবার সহযোগিতা চাই।
আন্দোলনে আহত নেতা-কর্মীদের সহযোগিতায় দলের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবানও জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফারহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন বক্তব্য রাখেন।
এ সময়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।