পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এহসান আব্দুল্লাহ : চৈত্র মাস তার বিদায় সুর বাজিয়ে পথ চলছে আগামীর পথে। তাই ক্রমানুসারেই এবার দুয়ারে কড়া নাড়ছে নতুন মাস আর নতুন একটি বছর। বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়-শ্রাবণ... হাতের কড়ায় শেষ মাস আসে চৈত্র, তাই সেই বছরের শেষ মাস। হ্যাঁ তাই আবার গণনা শুরু করতে হবে বৈশাখ থেকে। আর পহেলা বৈশাখ মানেই নতুন বাংলা বছরের আগমন। তাই এবারের বাংলা নতুন বছর ১৪২৪ কে বরণ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে চলছে বর্ষবরণ ও মঙ্গল শোভাযাত্রার পুরোদমে প্রস্তুতি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চরুকলা প্রাঙ্গণে লেগেছে নতুন রঙ, বিদায়ী বছরের সকল গøানি মুছে তাই এবার সবাই নতুন উদ্যমে জেগে উঠেছে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে। রঙে রঙে রাঙিয়ে তুলছে পুরো চারুকলা প্রাঙ্গণ। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, বিখ্যাত চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর মতো বিখ্যাত শিল্পীদের স্মৃতিধন্য এ আঙ্গিনায় চলছে পহেলা বৈশাখ বরণের আমেজ। ছাত্রছাত্রীদের রঙতুলির আঁচড়ে ফুঁটে উঠছে নানা শিল্পকর্ম ও নান্দনিক চিত্র।
বরাবরের মতো এবারের শোভাযাত্রায়ও স্থান পাচ্ছে, নানা ধরনের মুখোশ, সরাচিত্র, চিত্রকর্ম, ঘোড়া, পাখি, রাজা-রানির শিল্পকর্মসহ বাংলার লোকজ সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গ।
এবার অন্য যে কোনো বছরের চেয়ে শোভাযাত্রা হবে আরো বেশি তাৎপর্যময় ও বর্ণাঢ্য। কারণ সম্প্রতিই এই আয়োজন পেয়েছে ইউনেস্কোর বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি। গত বছরের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এই শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সংস্কৃতির ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়। তাই এবারের শোভাযাত্রাটি হবে আরো বিশাল পরিসরে ও আরো বর্ণিল এবং বর্ণাঢ্য। সব মিলিয়ে বিশাল ও বিস্তৃত পরিসরে হচ্ছে এবারের আয়োজন।
আগামীকাল চৈত্র সংক্রান্তির শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চলবে এ প্রস্তুতি পর্র্ব। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার সার্বিক তত্ত¡াবধানে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ১৮ ও ১৯তম ব্যাচ।
আয়োজকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার ভিন্ন আবহ থাকবে শোভাযাত্রায়। এবার প্রথমবারের মতো এর মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হবে বিশ্ব সাংস্কৃতিক স্বীকৃতি। পাশাপাশি সা¤প্রতিক জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে উচ্চারিত হবে জোরালো প্রতিবাদ। প্রতিবারের ন্যায় এবারও মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে থিম সেøাগান। এবারের শোভাযাত্রার মূল থিম ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’ নেয়া হয়েছে কবিগুরু রবিন্দ্রনাথের গান থেকে। চারুকলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, পহেলা বৈশাখ উদযাপনে নিরলস কাজ করে চলেছেন শিক্ষার্থীরা। জয়নুল গ্যালারির সামনে তারা তৈরি করছে নানা ধরনের মুখোশ। বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে পাখি ও হরিণ ও নানা ধরনের বিশাল আকৃতির পুতুল কাঠামো। প্রাঙ্গণের একপাশে দেখা গেল শিক্ষার্থীদের ছবি আঁকাআঁকির দৃশ্য।
বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী বলেন, ‘যেহেতু মঙ্গল শোভাযাত্রা বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে, তাই এবারের আয়োজনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করার প্রচেষ্টা থাকবে। আশা করছি, এবারের শোভাযাত্রাটি আরো বর্ণাঢ্য ও বিস্তৃত হবে। সর্বসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণও বাড়বে।
আগামী ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণের প্রভাতি অনুষ্ঠান শেষে বের হবে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রা। চারুকলার সামনে থেকে বের হয়ে ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেল চত্বর ঘুরে আবারো চারুকলার সামনে এসে শেষ হবে। উল্লেখ্য, গত ১৯ মার্চ বাংলাদেশের খ্যাতনামা চিত্রকর ও কার্টুনিস্ট রফিকুন নবী মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি কাজের উদ্বোধন করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।