পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
# সে প্রধানমন্ত্রী নন, খুনী : জনগণ এদেশের মাটিতে তার বিচার করবে
স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশ বিক্রির অভিযোগ তুলে এ থেকে পার পাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নন। জনগণের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হননি। আজকে সে খুনী। তার বিচার এদেশের মানুষ এদেশের মাটিতে করবে। গতরাতে এক অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, হাসিনার আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন। আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্নের জন্য সে এরমধ্যে অনেক কাজ করেছে। সে এখন এদেশের কিছুই রাখেনি, সবই বিক্রি করেছে। আরো বোধ হয় বাকী যেটা আছে, সেটাও বিক্রি করে আসবে। কিন্তু দেশ বিক্রি করেও পৃথিবীর ইতিহাসে ধারণা আছে, কেউ রক্ষা পায় নাই। হাসিনা মনে করে না, যাদের কাছে দেশ বিক্রি করলাম, যখন মানুষ জেগে উঠবে, তখন তিনারা তাকে বাঁচাতে আসবে না ! তারা বাঁচাতে আসবে না!!
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের মানুষ অলরেডি ফুলে উঠেছে, ফুঁসে উঠেছে। এখন দেশের মানুষ শুধু সময়ের অপেক্ষা করছে, কখন তারা রাস্তায় বেরুবে এবং এই অন্যায়-জুলুম অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে তারা রুখে দাঁড়াবে- এটা সময়ের ব্যাপার।
গুলশানের কার্যালয়ে রাত সোয়া ৯টায় নিহত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরুর বিধবা স্ত্রী সুমী আখতার, বড় মেয়ে উম্মে হাবিবা মীম, দুই ছেলে নাঈমুল আলম ও নুবায়েত আলম পরিবারের সদস্যরা বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসেন। এই উপলক্ষে ছাত্র দলের আয়োজিত অনুষ্ঠানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বেগম খালেদা জিয়াকে দেখে নিহতের স্ত্রীসহ সন্তানেরা ঘুমরে ঘুমরে কাঁদতে থাকে।
বিএনপি চেয়ারপাসন তাদের কাছে টেনে সান্তনা দেন। নুরুর স্ত্রীর হাতে অনুদানের একটি চেকও দেন বেগম খালেদা জিয়া। এ সময়ে নিহত নুরুর শাশুড়ি জাহানারা বেগম, ছোট বোন মনোয়ারা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন।
গত ৩০ মার্চ রাতে সাড়ে ১১টায় নুরুল আলম নুরুকে চট্টগ্রামের বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ওইদিন ভোরে তার লাশ রাউজান উপজেলার পাগুয়ান ইউনিয়নের কর্ণফুলী নদীর তীরে খেলাঘাট কৈইয়াপাড়া এলাকায় পাওয়া যায়।
নুরুর পরিবারের উদ্দেশে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, নুরুকে হত্যা করা হয়েছে। তার পরিবারকে সান্ত¦না দিলে তো নুরু আর ফিরে আসবে না, কী সান্ত¦না দেবো। তারপরও বলবো আমরা যেন তার পরিবারের পাশে থাকি, আমরা যেন তাদের সাহায্য সহযোগিতা করি। নুরুর স্বপ্ন ছিলো তার বাচ্চারা লেখা-পড়া করবে। তার পরিবার যেন সেই কাজটি করে।
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ এবং হাসিনার হাতে মানুষ রক্তে রঞ্জিত। হাসিনা প্রতিনিয়ত দেশের মানুষকে খুন করছে, হত্যা করছে। সে (হাসিনা) ভাবতে পারেনা, জনগণ হয়ত জানতে পারে না, উপরে একজন আছেন যে, তিনি সব দেখছেন, সব জানেন। সময়মতো তিনি ঠিকই বিচার করবেন। শেখ হাসিনার বিচার এদেশের মানুষ এদেশের মাটিতে করবে।
বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আপনারা র্যাবের যে ঘটনা বেরিয়েছে, সেটা যদি দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন কীভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। শুধু র্যাব তো নয়, আরো বহুবাহিনী বানিয়েছে কী কী সব। সমস্ত বাহিনী দেশে গড়ছে, যত রাজনৈতিক ভালো ভালো ছেলে আছে, যারা ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দিতে পারবে, দেশের মানুষের সেবা করতে পারবে, কাজ করতে পারবে, সেই সব লোকজনকে বাছাই করে যাতে দেশটা দূর্বল হয়ে থাকে, পঙ্গু হয়ে থাকে। অন্যায় করলে যাতে কেউ প্রতিবাদ করতে না পারে, সেই সব ছেলেদের বেঁছে বেঁছে, মেধাবী শিক্ষিত ছেলে-পেলেদেরকে র্যাব খুন করছে, হত্যা করছে। এর পেছনে একটা বড় পরিকল্পনা আছে। কী পরিকল্পনা হাসিনা আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন।
ক্ষমতাসীন দলের প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে খালেদা জিয়া বলেন, হাসিনা আজকে খুনী, সে প্রধানমন্ত্রী নন। জনগণের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হননি। অবশ্যই একদিন তাকে এই হত্যাকান্ডের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। রক্ত কখনো বৃথা যায় না।
খালেদা জিয়া বলেন, সে (শেখ হাসিনা) শহীদদের সাথে বেঈমানী করেছে। আজ দেশের মানুষের সাথে বেঈমানী করছে। প্রতিটি বেঈমানীর জবাব তাকে দিতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, দুনিয়াতে তাকে এই জবাবদিহিতো করতে হবে আর আল্লাহর কাছেও তো তাকে একদিন জবাবদিহি করতে হবে।
নুরুর পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, নুরুর মেয়েকে আমি আমি সান্ত¦না দিতে পারবো না। কারণ নুরুর মেয়ে বলেছে, আপনারা তো আমার বাবাকে ফিরিয়ে দিতে পারবেন না। তবে আমি আমার বাবার বিচারটা চাই।
আমরা সকলে আশা করবো- নুরুসহ আরো অনেকে হত্যা হয়েছে, সবার লিস্ট আমাদের কাছে আছে। হত্যাকারীদের যাতে বিচার হয়, শাস্তি হয় এই প্রত্যাশা আমরা করবো। নুরুর পরিবারকে দেখাশুনো করার জন্য চট্টগ্রাম নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ জানান খালেদা জিয়া।
ছাত্র দলের সভাপতি রাজীব আহসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ডা. সাহাদাত হোসেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, নিহত নুরুর মেয়ে উম্মে হাবিবা মীম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে দলে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মো. নাসির, রুহুল আলম চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, আমানউল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী, আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, মাহবুবুর রহমান শামীম, আনোয়ারুল আজীম, আজিজুল বারী হেলাল, হারুনুর রশীদ, আব্দুল আউয়াল খান, শহীদুল ইসলাম বাবুল, অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন ডোনার, ফাওয়াজ হোসেন শুভ, সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, আব্দুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বকর, জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, আবু সুফিয়ান, আবদুল ওয়াদুদ ভুঁইয়া, কাদের গনি চৌধুরীসহ শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।