ইভিএম-এ ভোট কেন?
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম-এ ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাকতালীয় কিনা জানি না, ১৫০ সংখ্যাটা আমাদের এর আগে চিনিয়েছিলেন রকিবুল
দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর সামরিক শাসনের পর দেশটির সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচনে বিরোধী নেত্রী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। অং সান সু চি’র সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের সরকার মেনে নেওয়ায় দেশটিতে এই প্রথম একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছে। ১৯৯০ সালে সু চি’র দল এনএলডি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও ক্ষমতায় আসতে পারেনি। মিয়ানমারের তৎকালীন সামরিক জান্তা সু চিকে ক্ষমতা তো দেয়ইনি বরং উল্টো গৃহবন্দি করে রেখেছিল দীর্ঘদিন। এবার তার পুনরাবৃত্তি ঘটেনি।
ইতোপূর্বে সু চিকে গৃহবন্দি করার পর মিয়ানমারে অনেক পানি গড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিয়ানমারের উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করা হয়। বলা যায়, দেশটির বিরুদ্ধে সমগ্র বিশ্বই ফুঁসে উঠে। সু চিকে মুক্তি দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গন এক হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে জেনারেল থেইন সেইনের নেতৃত্বে একটি অপেক্ষাকৃত গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে দ্রুত সংস্কার কার্যক্রম শুরু করে। লক্ষ্য ছিল মিয়ানমারকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাঠামোয় নিয়ে যাওয়ার জন্য দেশটিতে সাধারণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। এরই ধারাবাহিকতায় তারা অং সান সু চিকে মুক্তি দেয়। এরপর জান্তা সরকার সু চির সাথে রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করে। একথা সত্য, প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন তার পূর্বসূরিদের পথ অনুসরণ না করে এবং পুরনো ধ্যান-ধারণা পাল্টে সু চিকেই গ্রহণ করার মানসিকতা গ্রহণ করেন। কারণ মিয়ানমার সর্বশেষ এমন এক অবস্থায় পৌঁছে যায় যেখান থেকে বেরিয়ে আসার কোন উপায়ই আর ছিল না। দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের একটানা সামরিক শাসনে দেশটি সারাবিশ্বে প্রায় একঘরে হয়ে পড়েছিল। সারাবিশ্বে মিয়ামানমারের মতন এমন করুণ অবস্থা সম্ভবত এখন পর্যন্ত অন্য কোন দেশের ইতিহাসে ঘটেনি।
যা হোক, মার্চে মিয়ানমারে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সম্ভবত অং সান সু চিই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। আর সে লক্ষ্যে গোপনে সামরিক বাহিনীর সাথে হয়তো সমঝোতা হয়েছে অথবা হতে যাচ্ছে। তবে একথা সত্য, আগামীতে মিয়ানমারকে গণতান্ত্রিক পথে পরিচালনা করতে শুধু সু চিই নয় একই সাথে সামরিক বাহিনীরও অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এছাড়া দেশটির যা ক্ষতি হয়েছে তা থেকে উত্তরণে মিয়ানমারের জনগণকেও উদ্যোগ নিতে হবে। দায়িত্বটা এবার সবার ঘাড়েই পড়েছে। আমরা আশা করবো, মিয়ানমার আগামীতে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হবে এবং প্রতিবেশীদের সাথে সম্ভাব বজায় রেখে চলবে।
মাহমুদ এলাহী মন্ডল
রংপুর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।