পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন ইউপিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সরকার দলীয় প্রার্থীদের জয়ী হওয়ার বিষয়কে সরকারের উন্নয়নের প্রতি মানুষের আস্থা হিসেবে দেখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটি বলছে, সরকারের প্রতি আস্থা থাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিপরীতে অনেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না।
গতকাল রবিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানম-ির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা ও সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, অনেকেই এখন জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতির প্রতি সমর্থন জানিয়ে অন্য দল থেকে নিস্ক্রিয় হয়ে চলে যাচ্ছে বা সরকারী দলে যোগদান করতে চাচ্ছেন। স্থানীয় উন্নয়নের স্বার্থে সরকারের প্রতি আস্থা ব্যক্ত করে অন্য কোন প্রার্থী যদি না আসে, সেক্ষেত্রে কি আমাদের অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সুযোগ আছে?
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আমাদের কিছু প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। এটা হতেই পারে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গত ৭ বছরে দেশে যে পরিমাণ উন্নয়ন করেছে, তাতে মানুষের আস্থা সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। এখন দেশের ৮০ ভাগ মানুষই এটা বিশ্বাস করে একমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন হতে পারে।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন তুলে ধরে হানিফ বলেন, মানুষ চায় দেশ এগিয়ে যাবে। গ্রামীণ অর্থনীতি এগিয়ে যাবে। সেই সঙ্গে প্রত্যেকেই তাদের জীবন-যাত্রার মান পরিবর্তন করতে পারবে। যেটা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের কাছ থেকে তারা পাচ্ছে। সেই আস্থা থেকেই মানুষ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে কি বিরোধী দল বলে কিছু আছে? বিরোধী পক্ষ না থাকলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যকর হবে না-এমন কোন বিধান আছে কি না আমার জানা নেই। আপনাদের জানা থাকলে বলতে পারেন। জাতীয় সংসদে বিধান আছে সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দল থাকবে। বিরোধী দলের দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দেয়া। ইউনিয়ন পরিষদে এ রকম কোন সিস্টেম নেই। ইউনিয়ন পরিষদে বিরোধী থাকলো, না থাকলো সেটার কোন যৌক্তিকতা নেই।
সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের বাধায় ইউপিতে দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারছে না; নির্বাচন কমিশনে বিএনপি দেয়া এ অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উত্তরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে যদি তারা (বিএনপি) অভিযোগ করে থাকে এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে এটা তদন্ত করে খুঁজে বের করা। আমাদের কাছে এ রকম কোন অভিযোগ আসে নাই। কাজেই, যে অভিযোগ আমাদের কাছে আসে নাই-এ ধরণের বিষয় নিয়ে কথা বলার কিছু নেই।
তিনি বলেন, তাছাড়া বিএনপির তো সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করা ছাড়া এখন আর কোনো কাজ নেই। দলটি এখন একটি নালিশী পার্টিতে পরিণত হয়েছে। তাই তাদের এ ধরণের অভিযোগ সম্পর্কেও আমরা কিছু বলতে চাই না।
দলের জাতীয় কাউন্সিলের পর আন্দোলনে নামার বিএনপি নেতাদের এ ঘোষণা প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারপর বিএনপি বিরোধী দল হিসেবে দায়িত্বশীল আচরণে ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের পক্ষে কাজ করতে পারে নাই। বরং তারা সন্ত্রাসী কর্মকা- করে সরকারকে অস্থিতিশীল করতে সাধারণ জনগণের উপর আক্রমণ করেছে। বিএনপি বার বার সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
তিনি বলেন, এই কারণে তারা আজকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং ঠিক তেমনি তারা রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া ও চরম সংকটপন্ন অবস্থায় আছে। এই সংকট থেকে তাদের কর্মীদের মনোবল বা তাদের কর্মীদের দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য তাদের ব্যর্থতার দায়-ভার সরকারের উপর চাপিয়ে কিছুটা স্বস্তি পেতে চায়। তাদের কর্মীদের আশ্বস্ত করতে চায়। সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করা ছাড়া বিএনপির আর কোন এজেন্ডা নেই। এটা নালিশের পার্টি হিসেবে পরিচিত হয়েছে জনগণের কাছে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বিএনপির অবস্থান সব সময় জনগণের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের উন্নয়ন বিএনপির পছন্দ নয়। পছন্দ নয় বলেই সব সময় সরকারের বিরুদ্ধে, জনগণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে এটাই স্বাভাবিক। জনগণও তাদের সেই আন্দোলনকে কিভাবে শিক্ষা দিতে হয়, সেটা অতীতেও দিয়েছে এবং বিএনপি যদি আবারও ভবিষ্যতে সেই চিন্তা করে জনগণ তাদের সেই শিক্ষা দেবে।
সংবাদ সম্মেলনে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন, বিগত পৌরসভা নির্বাচনে যারা দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল, তাদের ইতোমধ্যেই দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। সামনে আমাদের দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। একই সঙ্গে আপনাদের মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীদের জানাতে চাই-এবারের ইউপি নির্বাচনে যারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কাজ করবে, তাদেরকে অবশ্যই দল থেকে বহিস্কার করা হবে।
সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে যেসব নেতারাও বিগত পৌরসভা নির্বাচনে কাজ করেছেন, তাদের ব্যাপারে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের দিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদকরা তাদের রিপোর্ট জমাও দিয়েছেন। দলের সামনের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সেসব নেতার বিরুদ্ধেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে দ্বিতীয় ধাপে ৬৭২ টি ইউনিয়ন পরিষদে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। তৃতীয় ধাপের মনোনয়নের জন্য আগামী ৮ মার্চের মধ্যে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের কাছে তৃণমূলের বাছাই তালিকা পাঠানোর আহ্বান জানান হানিফ।
সংবাদ সম্মেলনে দলের আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, বীর বাহাদুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূইয়া ডাবলু, কেন্দ্রীয় সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন, এসএম কামাল হোসেন, এনামুল হক শামীম প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।