পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মো. ছলিম উল্লাহ খান ও মো. হাবিবুর রহমান, সোনাকান্দা থেকে : সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফের পীর ও বাংলাদেশ তা’লীমে হিযবুল্লাহর আমীর আলহাজ মাওলানা মাহমুদুর রহমান বলেছেন, আমাদের সমাজ থেকে দিন দিন আমল কমে যাচ্ছে। আল্লাহর ইবাদত ও নবী রাসূল (সা:) সুন্নাতের আমল না করার ফলে আমাদের জীবনে একটি বিপদ শেষ না হতেই নতুন করে আরেকটি বিপদ দেখা দেয়। তাই আমাদের সকলের প্রয়োজন বেশী বেশী করে নেক আমল করা। তাহলেই আমাদের ব্যক্তি জীবনমানব কল্যাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারবে। মাওলানা মাহমুদুর রহমান রোববার বাদ ফজর ঐতিহ্যবাহী সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফের ২ দিনব্যাপী বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিলের আখেরি মোনাজাতের পূর্বে বয়ান করতে গিয়ে এ কথা বলেন। দেশ ও জাতির ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ কামনা করে মোনজাত পরিচালনা করেন দরবার শরীফের আধ্যাত্মিক রাহবার শাহসূফি আলহাজ হযরত মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ফারুকী (মা.জি.আ)।
আখেরী মোনাজাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ঢল নামে। মহান আল্লাহরাব্বুল আলামীনের নৈকট্য লাভের আশায় সারা বাংলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আল্লাহ ভীরু ও রাসূলপ্রেমিকগণ হাজির হন মাহফিলে। নিজের ও আহল আওলাদের গুনাহ খাতা মাফের জন্য এবং দেশ-জাতির ইহকালীন ও পরকালীন সার্বিক কল্যাণ কামনা করে অনুষ্ঠিত আখেরী মুনাজাতে কান্নার রোল পড়ে যায়। আল্লাহপাকের দরবারে মোনাজাতের কান্নাকাটি আর আল্লাহুম্মা আমিন ধ্বনিতে মাহফিল এলাকা এবং আশপাশের পরিবেশ ও আকাশ বাতাসে বেহেশতী আমেজ ছিল লক্ষণীয়। সেই সময় সোনাকান্দা দরবার এবং এর আশপাশের এলাকায় এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়। মোনাজাত চলাকালে লাখো মুসল্লীদের আমিন আমিন ধ্বনির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। এতে দরবারের আশিকীন, যাকেরীন, মুহিব্বীন ও খলিফাবৃন্দসহ দেশ-বিদেশের অসংখ্য ওলামায়ে-কেরাম, দেশবরেণ্য পীর-মাশায়েখগণসহ সামাজিক ও বিভিন্ন পেশাজীবীর লোকজন উপস্থিত ছিলেন। ২ দিনব্যাপী ইছালে ছাওয়াব মাহফিলকে কেন্দ্র করে দেশ-বিদেশ থেকে লাখো মুসল্লী সমাবেত হয়েছে।
মাওলানা মাহমুদুর রহমান বলেন, ওলী আউলিয়াদের দরবার হচ্ছে আত্মশুদ্ধির অন্যতম জায়গা। পরম শান্তির জায়গা। ঈমান ও আখলাক মজবুত করে আল্লাহর রাস্তার দিক-নির্দেশনা খুঁজে পাওয়ার জায়গা। রাসুলে করীম (সা:) প্রেমীদের কাছে এসব দরবারের গুরুত্ব ও মাহাত্ম অনেক বেশি। অন্যদিকে নবী (সা:) এর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়া একশ্রেণির লোকেরাই ওলী আউলিয়াদের নিয়ে কটাক্ষ করেন। এধরনের লোকেরা কখনোই নবী প্রেমিক হতে পারেন না। তারা ইসলামবিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দেয়া চক্রের এজেন্ট। তাদের ব্যাপারে আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সচেতন থাকতে হবে। সুন্নিয়াতের আদর্শের পথ ধরে কাফের মুশরিকদের মোকাবিলায় রুখে দাঁড়াতে হবে। নিজেদের মজবুত ঈমান ও আমলে অবিচল থেকে ইসলামবিরোধী চক্রকে প্রতিহত করতে বাংলার জমিনের প্রতিটি দরবারের ভক্ত, মুরিদান, আশেকান ও সুন্নিয়াতের আদর্শে উজ্জীবিত ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আর এই ঐক্যের মধ্যদিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করা কোনভাবেই কঠিন কাজ নয়।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সময়ে সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসনে ইসলাম ও মুসলমানদের অবস্থা নাজুক। এ অবস্থায় ইসলামকে রক্ষার জন্য মুসলমানদের ঐক্য এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তির শিক্ষা বড়ই প্রয়োজন। তিনি বলেন, কুমিল্লার মাটিতে অসংখ্য বুজুর্গানেদ্বীন শায়িত রয়েছেন। তাদের সম্পর্কে জানতে হবে, বুঝতে হবে। তাদের পদাংক অনুসরণ করে ইসলামের খেদমতে নিজেদের নিয়োজিত রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন, এদেশে ইসলাম এসেছে আউলিয়া কেরাম পীর মাশায়েখ ও আলেম-ওলামাদের বদৌলতে। যারা এ সত্য অস্বীকার করে তারা সত্য গোপন করার অপরাধে অপরাধী হবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।