Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীতে জাল পাসপোর্ট ও ভিসাসহ ৩ জন মানবপাচারকারী গ্রেফতার

বিভিন্নস্থানে র‌্যাবের অভিযান

| প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর একটি বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জাল পাসপোর্ট ভিসাসহ ৩ মানবপাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে ৩২টি নকল পাসপোর্ট, বিভিন্ন দেশের নকল ভিসা, স্ট্যাম্প টিকেট তৈরির কাগজপত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। প্রথমে যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি বাসা থেকে নাসিবুর রহমান (৩৯) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আতিকুল ইসলাম লিমন (৪০) ও আব্দুল কুদ্দুস (৩৫) নামে আরও দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব বলছে, এই চক্রের সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত অপরাধীরাও ‘সহজেই’ বিদেশে পালিয়ে যেতে পারছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই অভিযানের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর। তিনি বলেন, দেশে চাঞ্চল্যকর হত্যা, ধর্ষণ বা বিভিন্ন গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হয়। কিন্তু কিছুদিন পর আসামিকে আমরা আর খুঁজে পাই না। তদন্ত করে প্রায়ই দেখা যায়, ওই অপরাধী দেশের বাইরে চলে গেছে।
র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, এ চক্র বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কুরিয়ারের মাধ্যমেও নকল পাসপোর্ট-ভিসা পাঠায় বলে জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা। তিনি বলেন, তারা হাতে লেখা পাসপোর্ট তৈরি করে, বিদেশ থেকে চাহিদা পেলে সে অনুযায়ী অনেক আগের তারিখ দিয়ে সেগুলো বাইরে পাঠানো হয়। পরে সেগুলো বাংলাদেশ দূতাবাসে জমা দিয়ে জিডিটাল পাসপোর্টও নিচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি লোক নেয়া বন্ধ রাখলেও এ চক্র সেসব দেশেও মানব পাচার করছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে বাংলাদেশি পাসপোর্ট জাল করে ভারতে পাঠানো হয়। এরপর সেখান থেকে ভারতীয় পাসপোর্টের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে পাচার হচ্ছে।
র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, আসল পাসপোর্ট-ভিসা করতে সময় লাগে। এক্ষেত্রে ওইসব অপরাধী জাল ভিসা-পাসপোর্ট তৈরি চক্রের সাহায্য নিয়ে সহজেই যেতে পারছে। এর সঙ্গে অনেকেই জড়িত, কারণ ভুয়া ভিসা ও আসল ভিসার রঙে অনেক পার্থক্য থাকে। ট্র্যাভেল এজেন্সি আর ইমিগ্রেশনে যারা বোর্ডিং কার্ড দেয়, যারা ইমিগ্রেশন যাচাই করে- তাদের হাতে এগুলো ধরা পড়ার কথা। কিন্তু তারপরেও ধরা পড়ছে না।
অভিযানে উদ্ধার জিনিসপত্রের মধ্যে ভারতের হরিদাসপুর স্থল ইমিগ্রেশনের একটি সিল পাওয়া গেছে জানিয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, ওইসব নকল পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে অবৈধপথে ভারতে যায় অপরাধীরা, তারপর ভারত থেকে দায়িত্বরত কেউ যদি তল্লাশি করে, তখন সেই ভুয়া সিল লাগানো পাসপোর্ট-ভিসা দেখানো হয়, কিন্তু সহজে ধরা পড়ে না।
ডিআইজি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ চক্রের সঙ্গে আরও বহুলোক জড়িত। এরা জাল ভিসা ও পাসপোর্ট বিভিন্ন ট্র্যাভেল এজেন্সিতে বিক্রিও করে থাকে। প্রতিটি জাল পাসপোর্ট সাড়ে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করে।
ওই অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ