পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719611582](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : চরম মুসলিম বিদ্বেষী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বশেষ উক্তি নিয়ে আমেরিকার মুসলিম সমাজে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থিতা বাছাইয়ে এগিয়ে থাকা ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন সময়ে তার মুসলিম বিদ্বেষী মনোভাব খোলাখুলি প্রকাশ করেছেন যার কারণে তিনি এখন আমেরিকার ভেতরে যেমন তেমনি আমেরিকার বাইরেও নিন্দা সমালোচনার পাত্র হয়ে উঠেছেন। কিন্ত এসব সমালোচনাকে তিনি পাত্তাই দেন না। তার এ ধরনের বক্তব্যের সমালোচনা করছেন রিপাবলিকান দলের অন্য প্রার্থীরাও। তবুও ট্রাম্প কিছুতেই থামছেন না।
ট্রাম্প সাউথ ক্যারোলিনার নর্থ চার্লসটনে শুক্রবার এক বক্তৃতায় মুসলমানদেন শায়েস্তা করার কথা বলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি শতবছর আগের এক কথিত ঘটনার উল্লেখ করেন। ট্রাম্পের উল্লেখিত এই ঘটনায় একজন মার্কিন জেনারেল নাকি মুসলিম চরমপন্থা দমনে কয়েকজন মুসলমানকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন। বুলেট শুকরের রক্তে ভিজিয়ে তারপর সেই বুলেট দিয়ে নাকি তিনি ৪৯ জন মুসলমান বন্দীকে হত্যা করেন। শতবছর আগে ফিলিপাইনে এই ঘটনা ঘটে বলে ট্রাম্প উল্লেখ করেন। অবশ্য এই কথিত কাহিনীর সপক্ষে তিনি কোন প্রমান উল্লেখ করেন নি। সন্দেহভাজন চরমপন্থীদের পানিতে চুবিয়ে তথ্য আদায়ের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে আরো বেশী দূর যেতে হবে একথা বলে তিনি বলেন, ফিলিপাইনে মার্কিন জেনারেল জন পার্সিং শতবছর আগে ৫০ জন মুসলিম চরমপন্থীকে আটক করে তাদেরকে শুকরের রক্তে বুলেট ডুবিয়ে সেই বুলেট দিয়ে তাদের হত্যা করেছিলেন।
ট্রাম্পের গল্প অনুযায়ী সেই মার্কিন জেনারেল বন্দী ৫০ জনকে লাইনে দাঁড় করিয়ে তাদের থেকে ৪৯ জনকে গুলি করে হত্যা করেন এবং অবশিষ্টজনকে ছেড়ে দিয়ে বলেন, তুমি তোমাদের লোকদের কাছে ফিরে গিয়ে বল, এখানে কি ঘটেছে। ট্রাম্প দাবী করেন, সেই ঘটনার পর নাকি ফিলিপাইনে ২৫ বছর মুসলমানদের দিকে থেকে আর কোন সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। ট্রাম্প তার সমর্থকদের সামনে বক্তৃতার সময় ঠান্ডা মাথায় কথিত এই কাহিনী বর্ণনা করেন।
মুসলমানদের কাছে শুকরের মাংস হারাম আর সেই হারাম পশুর রক্ত মিশিয়েই নাকি মুসলমানদের হত্যা করা হয় বলে ট্রাম্প দাবী করেন।
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের সমর্থনে তার নির্বাচনী প্রচারণা টিমকে মন্তব্য করতে বলা হলে তারা সাড়া দেয়নি।
ফ্লোরিডার সিনেটর ও রিপাবলিকান দলে মনোনয়ন প্রত্যাশী মার্কো রুবিও শনিবার সকালে ‘এনবিসি টিভির টুডে’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের এই গল্পকে উদ্ভট বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত যে লোকজন ট্রাম্পের এই বক্তব্যে আহত হবেন। আমাদের ধারণা লোকজন এতে আহত হবেন অথচ আমেরিকা এমন দেশ নয়।
শনিবার দিন শেষে আমেরিকায় নেতৃস্থানীয় মুসলিম নাগরিক অধিকার গ্রুপ আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স কাউন্সিল বলেছে, ট্রাম্পের এই গাজাখুরি ও বিদ্বেষপূর্ণ গল্প সকল সীমা অতিক্রম করেছে। ট্রাম্প সহিংসতা উস্কে দিতে চরম ঘৃণা ছড়াচ্ছেন। গ্রুপটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ট্রাম্প সরাসরি বলেছেন যে চরমপন্থা রোধের একমাত্র উপায় হচ্ছে মুসলমানদের হত্যা করা। এটি চরম ধর্মীয় বিদ্বেষ। এই বক্তব্যের মাধ্যমে ট্রাম্প আমেরিকান মুসলিম সমাজের লাখ লাখ নিরপরাধ ও আইনমান্যকারী নাগরিকদের চরম ঝুঁকির মুখে ফেলেছেন। মুসলিম কাউন্সিল বিবৃতিতে আরো বলেছে, ট্রাম্প আরো বোঝাতে চেয়েছেন যে বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত পদ্ধতিগতি সহিংসতার একটি কৌশল গ্রহন করা। একজন সম্ভাব্য নেতার কাছ থেকে এ ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য খুবই দুঃখজনক এবং আমরা আশা করি যে ঘৃণা উদ্রেককারী গাজাখুরি কথা কেউ শুনবেন না।
মুসলিম নাগরিক অধিকারের আরেকটি গ্রুপ ‘মুসলিম এডভোকেটস’ বলেছে, ট্রাম্পের মন্তব্য খুবই জঘণ্য এবং আমেরিকার জনমতে এর কোন জায়গা নেই। আমরা বিবেকবান সকল আমেরিকানকে এগিয়ে আসা এবং এ ধরণের চরম ঘৃণা ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাই। আমাদের যখন অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা সেখানে এই বিদ্বেষপূর্ণ কথাবার্তা আমাদের মধ্যে কেবল বিভেদই সৃষ্টি করবে।
প্রার্থী বাছাইয়ে প্রতিযোগিতাকে সামনে রেখে যখন বিভিন্ন জনমত যাচাইয়ে ট্রাম্প এগিয়ে রয়েছেন সেখানে সবাই তার কাছ থেকে সংযত কথাবার্তাই আশা করে। কিন্তু ট্রাম্প সবকিছুকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে তার বাগড়ম্বরপূর্ণ ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য অব্যাহত রেখেছেন। সূত্র : সিএনএন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।