পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া খুব শিগগিরই রূপরেখা দেবেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা অগ্রিম বলেন যে, শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবেÑ এসব কথা বলে বলে তারা আমাদের জনগণকে, দলের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে হবে না। আগামী নির্বাচনের সরকার সম্পর্কে ‘দেশনেত্রী’ বেগম খালেদা জিয়া রূপরেখা দেবেন অতি শিগগিরই। সেই রূপরেখা অনুযায়ী নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার আগামী নির্বাচন পরিচালনা করবে, ইনশাআল্লাহ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১১তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে এ আলোচনাসভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল।
সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, দেশনেত্রী যে রূপরেখা দেবেন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের, তা যদি বর্তমান সরকার তাকে উপেক্ষা করে গায়ের জোরে ২০১৪-এর নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি করতে চায়, তাহলে এ দেশের মানুষ আগের মতো প্রতারিত হয়ে মানুষ ঘরে বসে থাকবে না। ইনশাঅল্লাহ; খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে এ দেশের মানুষ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার কায়েম করবে। সেই সরকারের অধীনেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে। ওই নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দলকে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে এ দেশের জনগণ ক্ষমতায় বসাবে ইনশাআল্লাহ।
অভিযোগ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে গায়ের জোরের সরকার একইভাবে টিকে থাকার জন্য নানারকমের ফন্দি-কৌশল-ষড়যন্ত্র করছে। এই ফন্দি- কৌশল-ষড়যন্ত্র আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। তারা (সরকার) চেষ্টা করছে, নানাভাবে নানা কথা বলে আমাদের কর্মীদের বিভ্রান্তি করতে। এসব করে তারা আমাদেরকে নেতিবাচক রাজনীতির দিকে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করছে। আমি বলতে চাই, আমরা ইতিবাচক রাজনীতি করি, জাতীয়তাবাদী দল ইতিবাচক রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা আশাবাদী যতই ষড়যন্ত্র করেন, যতই বিদেশীদের ক্রীড়নক হিসেবে, সম্প্রসারণবাদীদের ক্রীড়নক হিসেবে দেশের মানুষের ওপর জোর করে আপনারা বসে থাকবেন, তা অতীতেও সম্ভব হয়নি, আগামীতেও হবে না। তিনি বলেন, এই সরকার সহজে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মানবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। অতত্রব দাবি মানানোর জন্য আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। আমি আশা করি, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে প্রত্যাশা নিয়ে ছাত্রদল ও যুবদল গঠন করেছিলেন, আগামী দিনে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য, জনগণের ভোটের অধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য এবং একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আগামী দিনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যে আন্দোলন হবে, সেই আন্দোলনে যুবদল-ছাত্রদল নির্বিশেষ সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে সেই আন্দোলনকে সফল করতে হবে।
মোশাররফ বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-অর্থনীতি-আইনশৃঙ্খলাসহ সকল স্বার্থ রক্ষা করতে হলে জাতীয়তাবাদী শক্তির বিকল্প নেই। আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক খেলা চলছে। পত্রপত্রিকায় দেখছেন, আজকে আন্তর্জাতিক খেলার ক্ষেত্র হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বড় একটি পরিবর্তন হচ্ছে, একদিকে চীন, একদিকে ভারত, একদিকে আমেরিকা। আমরা জাতীয়তাবাদীরা বিশ্বাস করি, আমরা আন্তর্জাতিক খেলার ক্ষেত্র হতে চাই না। বাংলদেশে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে, তারা নিজের ক্ষমতাবলে এবং জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। এখানে আন্তর্জাতিক বলয়ের খেলা চলবে না। আগামীতে তারেক রহমানের ‘কারামুক্তি দিবস’ না করে ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ পালনে সকলকে ‘ক্ষমতার পরিবর্তনে’র জন্য গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸানও জানান স্থায়ী কমিটির এই নেতা।
তিনি বলেন, ১/১১ সরকার অসাংবিধানিক সরকার। তাদের এজেন্ডা ছিল বাংলাদেশের রাজনীতিকে বিরাজনীতিকরণ করা এবং উদ্দেশ্য ছিল মাইনাস টু’র নামে মূলত মাইনাস ওয়ান খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা। তাই শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা ছিল লোক দেখানোর জন্য। বিএনপি মনে করে ১/১১ সরকারের ধারাবাহিক সরকার হচ্ছে বর্তমান এই শাসকগোষ্ঠী। তারা এখন গায়ের জোরে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে স্বৈরচারী ও ফ্যাসিবাদী আচরণ করছে। বেছে নিয়েছে গুম, খুন, বিচারবর্হিভূত হত্যা, হামলা এবং মিথ্যা মামলা। স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির কাÐারি এবং জাতীয়তাবাদের দিশারী তাই ১/১১ সরকারের মতো বর্তমান এই সরকার তাদের নীলনকশা বাস্তবায়নে আদালতকে ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, এবারও যদি আগের মতো ভোটবিহীন নির্বাচন হয়, তাহলে এবার ভোটের খালি বাক্স ওই প্রিজাইডিং অফিসার-পোলিং অফিসার নিয়ে যেতে পারবে না। জনগণ সেগুলো নিয়ে ফেলবে এবং জনগণ তার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করবে। ভবিষ্যতে যদি এই সরকারের বা ক্ষমতাসীনদের এ ধরনের নির্বাচন করার খায়েশ থাকে, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ সেটা প্রতিরোধ করব। তৃণমূল প্রস্তুত, অগ্রগামী বাহিনীর যারা আমরা নেতৃত্বে আছি, আমাদের কিছু দুর্বলতা আছে, সেই দুর্বলতা কাটিয়ে আমি মনে করি যে, একটি বৃহত্তর পরিসরে আন্দোলন অগ্রসর হবে, আন্দোলনকে কেউ বাধা দিতে পারে না।
দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এই ভোটারবিহীন সরকার বিষোদগার করে যাচ্ছে। ১/১১ সরকার তাকে গ্রেফতার করে অমানুষিক নির্যাতত চালিয়েছে বিএনপি তথা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য। কিন্তু তারেক রহমান সারাদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তির বীজ বপন করেছেন, যা ষড়যন্ত্র করেও ধ্বংস করা যাবে না। তিনি বলেন, ১/১১ অবৈধ সরকার ওবায়দুল কাদেরকেও গ্রেফতার করেছিল। তখন ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, এটি একটি নতুন পাঠশালা। আমি ওবায়দুল কাদেরকে বলতে চাই আপনি এবং শেখ হাসিনা কোন পাঠশালা তৈরি করেছেন যে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে। এটা পরিবর্তন করা যাবে না। এটা কি বাইবেল তৈরি করেছেন, নাকি ২০০ বছরের পাথর নাকি বটগাছ যে, পরিবর্তন করা যাবে না। আপনারা যে পাঠশালা তৈরি করেছেন তা বাকশালী পাঠশালা। অগণতান্ত্রিক ও মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করার পাঠশালা। আমি বলতে চাই আপনাদের বাকশালী পাঠশালা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করা হবে। তা ঠেকাতে পারবেন না।
যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-যুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পদক নূরুল ইসলাম নয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, যুবদল দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।