পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার বিভিন্ন ইসলামী ও সমমনা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের পাশে গ্রিক দেবী মূর্তি স্থাপন করায় ঈদগাহে কারো নামাজ আদায় হবে না।
এ মূর্তি স্থাপন এদেশের ৯৮% ভাগ মুসলমানদের ধর্মীয় আক্বিদার উপর চরম আঘাত। অবিলম্বে ইহা অপসারণ করতে হবে। গতকাল এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ, জাতীয় কুরআন শিক্ষা মিশন, বাংলাদেশ ওলামা মাশায়েখ ঐক্যজোট, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা পরিষদ, কেন্দ্রীয় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত-বাংলাদেশ, হাক্কানী আলেম সমাজ এর নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে একথা বলেছেন। তারা বলেন, হাদিস শরিফ অনুযায়ী মূর্তি তৈরি করা ও তার সামনে ডানে বামে পিছনে রেখে নামাজ আদায় করা হারাম তথা নাজায়েজ। অথচ সুপ্রিম কোর্টের সামনেই জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের পাশে স্থাপন করা হয়েছে গ্রিক দেবী মূর্তি। মূর্তি থাকায় হাদিস শরিফ মতে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে কারোর নামাজই হবে না। এখানে লাখো লোক নামাজ আদায় করলেও কারো নামাজই আদায় হবে না। সুতরাং হাজার হাজার লোকের নামাজ নষ্ট করার অধিকার কারো নেই। এটা মানবাধিকারের নিকৃষ্টতম অবমাননা এবং নাগরিক অধিকার ও সংবিধান লঙ্ঘন। হেদায়া, আলমগিরি, তাতারখানিয়া, ফতহুল কাদির ইত্যাদি প্রায় সমস্ত ফতোয়ার কিতাবে রয়েছে, মুসল্লির সামনে পিছনে উপরে নীচে, ডানে-বামে, যেখানেই প্রাণির ছবি, মূর্তি থাকুক না কেন তাতে নামাজ মাকরূহ তাহরিমি হবে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযা সাল্লাম বলেছেন, যে ঘরে প্রাণির ছবি, মূর্তি রয়েছে, সে ঘর থেকে তা সরিয়ে না ফেলা পর্যন্ত সে ঘরে প্রবেশ না করাই শরিয়তের নির্দেশ। ঐ ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না, যে ঘরে প্রাণির মূর্তি বা প্রাণির ছবি থাকে।
হযরত জাবির রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের সময় হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে হুকুম করলেন, তিনি যেন পাথর দিয়ে কা’বা ঘরের মূর্তিগুলি ধ্বংস করে দেন। হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কা’বা ঘরের মূর্তিগুলো ধ্বংস না করা পর্যন্ত কা’বা ঘরে প্রবেশ করলেন না। (আবু দাউদ শরীফ)
বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, যারা মূর্তি ও ছবি তৈরি করে বা আঁকে এদের সবার প্রতি হাদিস শরিফে লা’নত এর ঘোষণা।” (বুখারি শরিফ)
হাদিস শরিফ এ আরো বর্ণিত আছে, মূর্তি কাপড়ে, বিছানায়, মোহরে, মুদ্রা টাকার মধ্যে, পয়সার মধ্যে, পাত্রে কিংবা প্রাচীরের মধ্যে যেকোনো স্থানে আঁকা বা তৈরি করা হারাম।” (উমদাতুল কারি শরহে বুখারি, ফতোয়ায়ে ছিদ্দিকিয়া, আজ-জাওয়াজির, আত-তাওদিহ)
মূর্তির উপাসনাকারীদের একমাত্র ঠিকানা জাহান্নাম উল্লেখ করে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- “পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক ভালবাসা রক্ষার জন্যে তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে প্রতিমাগুলোকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছ। এরপর কেয়ামতের দিন তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করবে এবং একে অপরকে লানত করবে। তোমাদের ঠিকানা জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী নেই।” (পবিত্র সূরা আনকাবুত ২৫)
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন, আলহাজ লায়ন মাওলানা মুহম্মদ আবু বকর ছিদ্দিক সভাপতি আওয়ামী ওলামা কুরআন শিক্ষা মিশন। মাওলানা মুহম্মদ মোস্তফা চৌধুরী (বাগেরহাটী হুজুর) সভাপতি এতিমখানা কল্যাণ পরিষদ। মাওলানা আব্দুস সাত্তার সভাপতি- ফিৎনা প্রতিরোধ কমিটি। মুফতি মাওলানা মুহম্মদ আব্দুল হালীম সিরাজী সভাপতি- ওলামা মাশায়েখ ঐক্যজোট। এইচএমএমএ সাত্তার সভাপতি- আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ঐক্য পরিষদ। মাওলানা আব্দুল হালীম সিরাজি সভাপতি- ওলামা মাশায়েখ ঐক্যজোট। ড. কাজি আহমাদুর রহমান, সভাপতি- হক্কানী তরিকত ফেডারেশন প্রমুখ।
ইশা ছাত্র আন্দোলন-এর বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশি বাধা
গ্রিক দেবী মূর্তি অপসারণ করতে হবে-ইশা ছাত্র আন্দোলন
স্টাফ রিপোর্টার : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেছেন, মিছিলে বাধা দিয়ে সরকার আমাদের প্রতিবাদী কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা করছে। সরকারের যেকোন গণবিরোধী কাজের প্রতিবাদ করা আমাদের নাগরিক অধিকার। কিন্তু আজকের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ বাধা দিয়ে আমাদের সেই অধিকার কেড়ে নিয়েছে। যার পরিণাম কখনো শুভ হবে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবী মূর্তি অপসারণের দাবি ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন, ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জিএম রুহুল আমীন।
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অন্যতম সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ। এদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে ইসলাম অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ইসলামে মূর্তি কিংবা যেকোন প্রাণির ভাস্কর্য নিষিদ্ধ। কিন্তু এদেশের হাতে গোনা কয়েকটি নাস্তিকের চক্রান্তে সর্বোচ্চ বিচারালয় সুপ্রিম কোর্টের সামনে গ্রিক দেবী মূর্তি স্থাপন করার মত দুঃসাহস সরকার দেখাচ্ছে। ইসলাম ও দেশবিরোধী এই চক্রান্ত কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। সারাদেশে একযোগে মূর্তি অপসারণের দাবি উঠেছে। অতএব সরকারের উচিৎ দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবী মূর্তি দ্রæত অপসারণ করা। যদি মূর্তি অপসারণ না করা হয় তবে সারাদেশে আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়বে। আর উদ্ভূত পরিস্থিতির দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, গ্রিক দেবী মূর্তি স্থাপনের মাধ্যমে সরকার দেশে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি বাস্তবায়ন করতে চায়। আমরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হলেও তাদের এ অপচেষ্টাকে রুখে দেব, ইনশাআল্লাহ। বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ, সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ হাছিবুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম. এমদাদুল্লাহ ফাহাদ, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক নোমান আহমাদ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।