পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : আমেরিকায় ১১ই সেপ্টেম্বরের হামলার মাত্র কয়েক মাস পরেই- ২০০২ সালের জানুয়ারি মাসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিউবার গুয়ানতানামো বে-তে তাদের নৌঘাঁটিতে তাড়াহুড়ো করে তৈরি করেছিল এক বন্দীশিবির- আর তাতে এনে রাখা হয়েছিল তার প্রথম বন্দীদের। বিবিসির ল্ইুস হিদালগোর কাছে সেই শিবিরের প্রথম কমান্ডার মাইক লেনেট স্মৃতিচারণ করেছেন সেই শিবিরের- যা পৃথিবীজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্কের জন্ম দেয়।
২০০২ সালের জানুয়ারির ১১ তারিখ সেই মার্কিন বন্দীশিবিরে প্রথম বন্দীরা আসে।
মার্কিন মেরিনের মেজর জেনারেল মাইক লেনেট ছিলেন শিবিরের অফিসার ইন চার্জ। একটি সি-সেভেনটিন বিমানে করে প্রথম ২৯ জন বন্দীকে আনা হয়েছিল। ‘এই বন্দীরা আফগানিস্তান থেকে গুয়ানতানামো বে-তে এসেছিল সরাসরি বিমানে। প্রায় এক দিনের ফ্লাইট। এই দীর্ঘ সময় তাদের বাথরুমে যাবার কোন উপায় ছিল না। তাদের ডায়াপার পরিয়ে দেয়া হয়েছিল এবং এর মধ্যেই তাদের বাথরুমের কাজটা সারতে হয়েছিল। তারা ছিল পিপাসার্ত, বেশ খারাপ অবস্থায়।’ কিন্তু এই বন্দীরা কে, তাদের নিয়ে কি করতে হবে- এ ব্যাপারে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল তা খুবই সংক্ষিপ্ত এবং ভাসা-ভাসা।
এই বন্দীদের আইনগত মর্যাদা কি- সে ব্যাপারে তখন কিছুই বলা হয়নি। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাদের বর্ণনা করেছিলেন ‘খারাপদের মধ্যেও সবচাইতে খারাপ’ বলে।
আর গুয়ানতানামোর প্রশাসনের মধ্যে ধারণা ছিল ব্যাপারটা সাময়িক। আমেরিকা তখনও কয়েক মাস আগে ১১ই সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক আর পেন্টাগনের ওপর হামলার আঘাত কাটিয়ে উঠতে পারে নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ বলেছিলেন, এ হামলার পেছনে যারা আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তানে ঢুকলো। তাদের লক্ষ্যবস্তু আল-কায়েদা এবং তাদের সমর্থক তালেবান। আটক করা হলো শত শত লোককে।
মাইক লেনেট বলছিলেন, তাদেরকে গুয়ানতানামোয় দুশো লোকের জন্য একটা বন্দীশিবির তৈরি করতে বলা হলো, কিন্তু তার পর দিনই বলা হলো, বন্দীর সংখ্যা ২ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। প্রথম ১০০টি কারাকক্ষ তৈরির জন্য আমার হাতে সময় ছিল মাত্র ৯৬ ঘন্টা।
কিছুদিনের মধ্যেই সেখানে আরো বন্দী নিয়ে আরো বিমান নামতে থাকলো। প্রথম দিকে ধরাপড়া বন্দীরা তালেবান এবং আলকায়েদার ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি ছিল। তবে পরে আর তা ছিল না। তবে এই ব্যাপারটা নিয়ে ওয়াশিংটনে এত রকমের পরস্পরবিরোধী মত ছিল। যে আইনজীবীদের সেখানে নেয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে এই বন্দীদের ক্ষেত্রে সরকারি নীতি কি, বা তাদের আইনগত মর্যাদা কি- এ নিয়ে বিবাদ শুরু হলো।
মাইক লেনেট বুঝলেন যে এই বন্দীদের এখানে বেশ লম্বা সময় থাকতে হবে।
যখন এরকম ধারণা তৈরি হয়েছে যে এইসব বন্দীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে, তখন ওয়াশিংটন থেকে আরো বেশি চাপ এসেছে সেই তথ্য বের করার জন্য। তবে এই গুয়ানতানামোতে বন্দী নির্যাতনের ঘটনাগুলোর সম্পর্কে মাইক লেনেট বলছিলেন, এগুলো ঘটেছে আমি বিদায় নেবার পর। আমি বলতে পারি, এতে আমেরিকার সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। এখন আমি রিটায়ার করেছি, তবে গুয়ানতানামো বন্ধ করার জন্য আমার পক্ষে যতটা সম্ভব তা করছি।
গুয়ানতানামো থেকে মাইক লেনেট বিদায় নেন ২০০২ সালের মার্চ মাসে, তাকে পাঠানো হয় ইরাকে।
ক্যাম্প এক্সরে’র জায়গায় তৈরি হয় একটি স্থায়ী বন্দীশিবির, সেখানে রাখা হয় আটশ’র মতো বন্দীকে। এখনো সেখানে আছে ১৩২ জন বন্দী। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।