ইভিএম-এ ভোট কেন?
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম-এ ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাকতালীয় কিনা জানি না, ১৫০ সংখ্যাটা আমাদের এর আগে চিনিয়েছিলেন রকিবুল
ঢাকার আশপাশে-টঙ্গি, ডেমরা, সাভার, আশুলিয়া, কেরানীগঞ্জ এবং সর্বত্রই একদা ছিল কৃষি জমি, খাল-বিল, নদী-জলাভূমি আর ছোট-বড় ডোবা। ওইসব এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা ছিল কৃষি নির্ভর। একসময়ে ওইসব জায়গায় দেখা যেত দিগন্তজোড়া সোনালি ধান। উৎপাদনও ছিল ব্যাপক। ধানের পরে সরিষা, খিরাই, কলাই, তরমুজের চাষ হতো। পর্যাপ্ত জলাশয়ে নানা প্রজাতির মাছের ছিল না কোনই অভাব। প্রায় ২৫ বছরের ব্যবধানে বদলে গেছে জয়দেবপুর, ভাওয়াল, সাভার, টঙ্গি, আশুলিয়া, ডেমরা, কোনাপাড়া, যাত্রাবাড়ীর মানচিত্র। অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, জমিদখল, জায়গা বিক্রির কারণে কৃষি জমি এখন আর সহজে চোখে পড়ে না। যেদিকে তাকাই সেদিকে দেখি বাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের দৌরাত্ম্য। আছে শত শত জমির দালাল ও জালিয়াতি চক্রের বিশাল সিন্ডিকেট। এদের কাজই হলো সাধারণ মানুষকে চাপ দিয়ে জমি বিক্রিতে রাজি করানো। যারা জমি বিক্রি করতে রাজি হয় না তাদেরকে প্রতিনিয়ত দেয় হত্যার হুমকি।
ভূমি দস্যুদের দখলদারিত্ব চলছে নদীর বুকেও। মিরপুরের কালশী থেকে ক্যান্টনমেন্ট হয়ে যে রাস্তাটি চলে গেছে উত্তরার দিকেÑ ওই রাস্তার দু’ধারে জলাভূমিতে সহজে চোখে পড়ে রিয়েল অ্যাস্টেট কোম্পানির অসংখ্য সাইনবোর্ড। আজ সর্বত্র জমি কেনা, দখল, বাড়ি-ঘর নির্মাণ, শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রতিযোগিতা চলছে। কেউ দিচ্ছে না বাধা। বাধা দিয়ে মরবে না কি? এ কারণে ঢাকার চারপাশের এলাকা হতে ধ্বংস হয়ে গেছে জীববৈচিত্র্য। এভাবে ভরাট হয়ে গেছে প্রায় ৮০ ভাগ জলাশয়।
ভূমি দস্যুদের কারণেই ঢাকার চারপাশের কৃষি জমি, জলাশয়, বনাঞ্চল আজ চিরতরে বিলীন হয়ে গেছে। ঢাকার অদূরে শ্রীপুরে ৬০ বছর আগে সেই শৈশবে দেখেছি ময়ূর আর ময়ূরÑ চিরতরে হারিয়ে গেল সেই ময়ূরের দল। এ জন্য দায়ী ছিল ভূমি দস্যুরাই। কৃষি জমি ধ্বংস করে সর্বত্রই গড়ে তোলা হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে রিয়েল অ্যাস্টেটের বাড়িঘর। আর জলাশয় তো শেষ করে দিয়েছে ওই ভূমি দস্যুরাই। এ নিয়ে কত লেখালেখি, কত প্রতিবাদ, টিভি চ্যানলে কত সংবাদ প্রচারÑ কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। হবে বলে মনেও হয় না। কারণ ভূমি দস্যুদের খুঁটির জোর যে বড়ই শক্ত, বড়ই যে জোরালো। ওদেরকে রুখবে কে?
এখনো রাজধানীর যতটুকু, জমি, জলাশয়, নদী তীরবর্তী এলাকা রয়েছে তা রক্ষার জন্য চাই কঠিনতর আইন। তবেই ফসলের ক্ষেত-জলাশয় রক্ষা করা সম্ভব। যারা জমিদখল করে, জমির দালাল, ভূমিদস্যু ওরাতো চিহ্নিত। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
লিয়াকত হোসেন খোকন
ঢাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।