Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আ.লীগ প্রার্থীদের জিতিয়ে দেয়ার মহাপরিকল্পনা ইসির -রিজভী

প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ‘একচেটিয়াভাবে’ শাসক দলকে জিতিয়ে দিতে নির্বাচন কমিশন ভোট কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা কমানোর পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি
গতকাল শুক্রবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন শাসক দলের প্রার্থীদের জিতিয়ে দেয়ার মহাপরিকল্পনা করেছে।
তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, ইউপি নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা কমিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। এমনকি নির্দেশনাও শিথিল করা হয়েছে। কেন এটা করা হচ্ছে এটা সবার কাছে অত্যন্ত স্পষ্ট। এসব পরিকল্পনা ও নির্দেশনার উদ্দেশ্যই হচ্ছে ইউপি নির্বাচনে শাসক দলের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জিতিয়ে দেয়ার মহাপরিকল্পনা। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
রিজভী আহমেদ বলেন, ভোটারবিহীন সরকার গণতন্ত্রের যে ভগ্নদশা করেছে, তাতে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে সহযোগিতা করেছে এই নির্বাচন কমিশন। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা কমিয়ে দেয়া ও নির্দেশনা শিথিল করা সেই সহায়তারই উলঙ্গ প্রকাশ।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কঠোর সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে এই নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতিত্ব করছে, শাসকদলের অনুকূলে ভোট কেন্দ্রে সংঘাতকে উস্কে দিচ্ছে। বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে শাসক দলের সহায়তা করা, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের জিতিয়ে দেয়া, ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই ব্যালট বাক্স ভর্তি করে ফেলা, ভোটের আগে ভোটারদের বলে দেয়া যে তাদের ভোট হয়ে গেছে ইত্যাদি নির্বাচন নিয়ে সরকারি তামাশাকে যথার্থ নির্বাচন বলে বৈধতা সিলমোহর দেয়াই হচ্ছে এখন নির্বাচন কমিশনের মুখ্য দায়িত্ব।
না হলে নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের নানামুখী অনিয়ম ও সংঘাত-সংঘর্ষ যা শুধু বিএনপি বা বিরোধী দলেরই অভিযোগ নয়, সংবাদপত্রে প্রতিদিন এই সমস্ত ঘটনাবলী ছাপা হচ্ছে। তথাপিও কমিশন সেগুলোকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে জনগণের ভোট নিয়ে সরকারের ইয়ার্কি ঠাট্টার সহচর হিসেবে সার্কাসের ভাঁড়ের মতো ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, কমিশন শুধু নিজেদের চাকরির প্রতিদানের নজরানা হিসেবে সরকারকে আগের নির্বাচনগুলোর মতো ইউপি নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদ পাইয়ে দিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে এখন থেকে। ভোটারবিহীন সরকারের আক্রমণে গণতন্ত্রের মৃতদেহে পচনের গন্ধ যেন না ওঠে, সেজন্য নির্বাচন কমিশন গণতন্ত্রের নামে কিম্ভূতকিমাকার দায়িত্ব পালন করে সেই মৃতদেহে আগরবাতির ধোঁয়া ও গোলাপজল ছিটাচ্ছে।
সারাদেশে প্রথম দফার ৭৩৮টি ইউপি নির্বাচনে বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা না দেয়ার বিষয়ে রিজভী বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দান, হুমকি-ধমকি, তুচ্ছ অজুহাতে স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারা শাসকদলের মদদে বিএনপির ১১৪ জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছেন। কারণ নির্বাচন কমিশন সরকারি দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে একেবারেই মরিয়া।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর দেয়া বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
তিনি বলেন, কালকে (বৃহস্পতিবার) তথ্যমন্ত্রী মিডিয়ার সামনে বলেছেন, ১৯৭৫ থেকে ১৯৮২ জেনারেল জিয়াউর রহমানের ক্যান্টনমেন্টকে কসাইখানা বানানোর ঘটনা এখানেও কমিশনের ব্যাপার রয়েছে। এসব নানা কথা তিনি বলেছেন। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে Ñ কারা সেদিন ক্যান্টনমেন্ট বধ্যভূমি করেছিলেন, কারা সৈনিক সংস্থার নামে লিফলেট ছড়িয়েছিলেন, কারা একটি শৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজনীতিকরণ করার চেষ্টা করেছিলেন, কারা সেদিন সংঘাত ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, কারা চেষ্টা করেছিলেন জিয়াউর রহমানকে যিনি তখন সেনাবাহিনী প্রধান তাকে নিয়ে এসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বক্তব্য দেয়ানোরÑএসব জাতি কি ভুলে গেছে?
এই সংঘাত-সংঘর্ষ ছড়িয়েছিলেন কারা? কারা সেদিন ভারতীয় হাইকমিশনের আক্রমণ করতে গিয়েছিলেন। কেন গিয়েছিলেনÑউদ্দেশ্য ছিল। এই কাজগুলো করেছিলেন কারা, সেটা জাতি জানে। হাসানুল হক ইনুরাইÑআজকে যে আমরা জঙ্গিদের কথা শুনি, যে রক্তাক্ত ঘটনাগুলো দেখছি, এই জঙ্গিদের অনুরূপ মডেল আমরা দেখেছি ইনুদের কর্মকা-ে, সেটা এদেশের মানুষ ভুলে যায়নি। আজকে ক্ষমতার লোভে তারা বড় বড় কথা বলছেন।
রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, সব বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটিয়ে আজকের যে আধুনিক সেনাবাহিনী এটা সৃষ্টিই করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান। তিনি সেই সময়ে সেনাবাহিনীর মধ্যে ইনুদের ষড়যন্ত্রের যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল, সেখান থেকে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে নিয়ে এসে আধুনিক চৌকস সেনাবাহিনী গঠন করেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আ.লীগ প্রার্থীদের জিতিয়ে দেয়ার মহাপরিকল্পনা ইসির -রিজভী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ