পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : পাঁচ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধ সিরিয়ার জন্য ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে এনেছে। এ কথাটি বলার ব্যাপারে রাখঢাক করেননি জাতিসংঘ কর্মকর্তা। মস্কোতে অনুষ্ঠিত ভালদাই আলোচনা ফোরামে তিনি যুদ্ধে দেশটির আধুনিক ইতিহাস হারিয়ে যাওয়া এবং আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির দিক দিয়ে ৪০ বছর পিছিয়ে পড়ার কথা বলেছেন। খবর আর টি। মস্কোতে ভালদাই আন্তর্জাতিক আলোচনা ক্লাব আয়োজিত “মধ্যপ্রাচ্য : সহিংসতা থেকে নিরাপত্তা” শীর্ষক এ আলোচনায় রাশিয়া, ইরান, মিসর, তুরস্ক, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ১শ’রও বেশি রাজনীতিক, শিক্ষাবিদ ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব অংশ গ্রহণ করেন।
উদ্বোধনী বৈঠকে সিরিয়ার সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নের উপর সিরিয়ার যুদ্ধের প্রভাব আলোচনা করা হয়। পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক জাতিসংঘ অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের উপ নির্বাহী সচিব আবদুল্লাহ দারদারি বলেন, আমরা সিরিয়ার আধুনিক ইতিহাসের পাঁচ বছর হারিয়েছি এবং দেশটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ৪০ বছর পিছিয়ে গেছে।
দারদারি বলেন, এখন সিরিয়া বিষয়ে সকল মনোযোগ মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বৈরিতা বন্ধে সৃষ্ট সমঝোতার উপর পড়া উচিতÑ এটাই হচ্ছে উত্তরণের পথ। তারপর তা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক পুনরায় গৃহীত ২২৫৪ নং প্রস্তাব বাস্তবায়নের ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে।
দারদারি ডিসেম্বরে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করেন। এ প্রস্তাবে সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি ও রাজনৈতিক সমাধান, একটি ঐক্য সরকার গঠন ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা অবিলম্বে বন্ধের আহবান জানানো হয়। ফোরামে সিরিয়ায় বৈরিতা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কর্তৃক ২২ ফেব্রুয়ারি ঘোষিত সমঝোতা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সমঝোতা ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল নুসরার মত জঙ্গি সংগঠনগুলোকে এ যুদ্ধ বিরতি বাইরে রাখা হয়েছে। তারা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তাদের উপর হামলা চলবে।
তুরস্কের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াশার ইয়াকিস বৃহস্পতিবার বলেন যে সিরিয়াকে বিভক্ত করা উচিত হবে না। তিনি বলেন, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ দেশটির জন্য ভালো হবে। ফোরামে আলোচনা কালে তিনি বলেন, সিরিয়ার লোকদের এক সিরিয়ার ভিত্তিতে আঞ্চলিক ভাবে নিজেদের পরিচালনা করতে দেয়া হোক। তবে দেশের আঞ্চলিক অখন্ডতা বহাল রাখতে হবে। তিনি যুক্ত দেখান যে সিরিয়াকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ রাখাই উত্তম।
হস্তক্ষেপ বিষয়ে ইয়াশার বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনুমোদন ছাড়া তুরস্ক এ রকম কিছু করবে না। তিনি বলেন, তুর্কি সামরিক মহলের এক বিবৃতিতে বলা হয় যে আন্তর্জাতিক বৈধতা নিশ্চিত হওয়া ছাড়া তুরস্ক সিরিয়ায় সামরিক ভাবে হস্তক্ষেপ করবে না। এর অর্থ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব। আর তা ঠেকাতে ভেটো পাওয়ার নিয়ে সেখানে বসে আছে রাশিয়া। সে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত পাস হতে দেবে না। যদি কা-জ্ঞান থাকে তাহলে এ রকম ঘটনা ঘটবে না বলে আমি আশা করি।
মিসরীয় কূটনীতিক, রাজনীতিক ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী নাবিল ফাহমি বলেন যে, তিনি সিরিয়া বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া সমঝোতাকে স্বাগত জানান, তবে এর চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বাস্তববাদী। তিনি বলেন, সিরিয়া, জর্দান, লেবানন, এমনকি ইরাক সমন্বয়ে লেভান্ত (ভূমধ্য সাগরের পূর্ব তীরস্থ অঞ্চল) গঠিত। এর রয়েছে বহু অঞ্চল। আপনি যদি দেশগুলোকে টুকরো করতে শুরু করেন তাহলে সেগুলো দুর্বল রাষ্ট্রে পরিণত হবে, আর তা হবে খুবই বিপজ্জনক।
একজন বক্তা সিরিয়া যুদ্ধকে একটি নিরাপত্তা ঘূর্ণি বলে আখ্যায়িত করেন। মৌরিতানিয়ার সাবেক পররাষ্ট্র ও সহযোগিতা মন্ত্রী বর্তমানে হার্ভার্ড বিশ^বিদ্যালয়ের স্কলার মোহাম্মদ মাহমুদ অউলদ মোহামেদু ব্যাখ্যা করেন যে বাইরের বিভিন্ন দেশ যদি সিরিয়ায় সৈন্য পাঠায় তাহলে ক্রমেই যা সম্ভাব্য বিস্ফোরণ প্রতিক্রিয়াসহ নিরাপত্তা ঘূর্ণিতে পরিণত হচ্ছে তার দিশা হারিয়ে ফেলব।
ইরানের একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ মোহাম্মদ মারান্দি ইয়েমেন পরিস্থিতি আলোচনা করেন। তিনি সেখানকার সংঘাতের একটি সমাধান খুঁজে বের করতে ইরান ও সউদি আরবকে এক সাথে কাজ করার প্রস্তাব দেন। সে সাথে তিনি সউদি আরবে সংঘটিত গণহত্যামূলক কর্মকা-ের খবর দিতে ব্যর্থতার জন্য বিবিসি ও সিএনএনের সমালোচনা করেন।
মারান্দি বলেন, সউদি আরব এক সপ্তাহের মধ্যে ইয়েমেন যুদ্ধে জয়ী হবে বলে মনে করেছিল। এখন এক বছর হয়ে গেছে। তারা কোথাও নেই, এমনকি রাজধানীতেও না। অব্যাহত বোমাবর্ষণ সত্ত্বেও, লোকদের কাছে খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছাতে তারা বাধা সৃষ্টি করার পরও তাদের ব্যর্থতা পরিষ্কার। এক বছরেও কোনো সাফল্য লাভ করতে না পারার পর সউদি আরবের জন্য উত্তম হচ্ছে একটি সমাধান খোঁজা, আর ইরান এর পথ খুঁজে বের করতে সউদি আরবকে সাহায্য করতে ইচ্ছুক।
এর আগে রুশ উপ পররাষ্ট্র মন্ত্রী মিখাইল বোগদানভ বলেন যে মস্কো সিরিয়ায় বিকল্প রাজনৈতিক সমাধানের পরিকল্পনা আলোচনা করছে না। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ আমাদের পশ্চিমা অংশীদারদের এক ধরনের ‘প্ল্যান বি’ পরিকল্পনার উল্লেখে আমরা বিস্মিত। তিনি বলেন, এ রকম কিছু আমাদের জানা নেই, আমরা কোনো বিকল্প পরিকল্পনা বিবেচনা করছি না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।