দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
শেখ মো. কামাল উদ্দিন : জ্ঞানের আলো বিকশিত করে এ সমাজে ইসলাম কায়েম করার ইচ্ছায় অনেক দ্বীনদার ব্যক্তিগণ নিজের সন্তানাদিকে বিভিন্ন স্থানে আলেমদের নিকট দায়িত্ব অর্পণ করতেন। ভারতবর্ষ যখন পরাধীনতার শিকলে বাঁধা ছিল তখন এ আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটানো ছিল খুবই কঠিন। কারণ তখন ইসলামী শিক্ষাদানের জন্য প্রতিষ্ঠান ছিল অপ্রতুল। এ প্রতিক‚লতার মাঝেও যারা প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন তাদের মধ্যে তদানীন্তন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলাসাগরের নিকটবর্তী বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার খাড়েরা গ্রামের বশির উদ্দিনের ছেলে মুন্সী আফসার উদ্দিন ও আবদুর রহমান অন্যতম। মুন্সী আফসার উদ্দিনের তিন ছেলে থাকলেও কোন কন্যা সন্তান ছিল না। ছোট ছেলে মুন্সী আবদুর রহমানের ছিল এক ছেলে ও চার কন্যা সন্তান। আবদুর রহমানের এক ছেলে হলেন আলহাজ্ব মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম ও চার কন্যা হলেন, আরশের মা, কার্তিকুন নেসা, মোসাম্মৎ মিরণ ও মঙ্গলেন নেসা। বড় ছেলে মুন্সী আফসার উদ্দিনের ছিল তিন ছেলে। তারা হলেন, মাওলানা মোহাম্মদ আবদুশ শুকুর, আলহাজ্ব হাফেজ মোহাম্মদ আবদুল লতিফ ও মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার। শিশু আবদুশ শুকুর আনুমানিক ১৮৯৯ সালের গোড়ার দিকে জন্মগ্রহণ করেন। আপন সন্তানদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দ্বীনি শিক্ষা দেবার উদ্দেশ্যে নিজ তত্ত¡াবধানে রেখেই প্রাথমিক শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে দেলী উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করান। ব্রিটিশ শাসনামলে প্রথম শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ছিল নি¤œ প্রাথমিক বিদ্যালয় আর প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ছিল উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখান থেকে কিশোর আবদুশ শুকুর অত্যন্ত সফলতার সহিত উত্তীর্ণ হন। অতঃপর তাকে দ্বীনি শিক্ষার উদ্দেশ্যে নিয়ে যান তৎকালীন বিশিষ্ট আলেম, আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা পীরে কামেল হযরত মাওলানা আবু সাঈদ আসগর আহমাদ আলকাদেরী (র.)-এর নিকট। তিনি তাকে পড়াতে সম্মতি দেন। জ্ঞানান্বেষণে কৌতূহলী আবদুশ শুকুর নিজ বাড়ি খাড়েরা হতে পায়ে হেঁটে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে আড়াইবাড়ীতে গিয়ে অধ্যয়ন করতেন। পরে তালতলা গ্রামের মো. মইজ উদ্দিন সাহেবের বাড়িতে জায়গীর ছিলেন। পীর সাহেবের নিকট মাদরাসা শিক্ষার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা লাভ করেন।
কিশোর আবদুশ শুকুর ছিলেন অতি মেধাবী, তাক্বওয়াবান, দ্বীনদার ব্যক্তি। উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহ দেখে পীর সাহেব অতি মুগ্ধ হলেন। তখন বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের জ্ঞানপিপাসুরা ভারতের উত্তর প্রদেশে গিয়ে অধ্যয়ন করতেন। পীর সাহেব নিজে ভারতের উত্তর প্রদেশে রিয়াছতে রামপুরে অধ্যয়ন করেছিলেন। তারই পরামর্শক্রমে পিতা মুন্সী আফসার উদ্দিন ও ¯েœহময়ী মা মুহতারেমা করমচান্দেন নেসা ছেলে আবদুশ শুকুরকে কোরআন-সুন্নাহ শেখার জন্য ভারতে পাঠাতে রাজি হলেন। তিনি তৎকালীন কমলাসাগরের নিকটবর্তী কসবা রেল স্টেশন থেকে চাঁদপুর হয়ে লঞ্চযোগে গোয়ালন্দ ঘাটে গিয়ে ভারতের কলিকাতা হয়ে মুরাদাবাদ দিয়ে রামপুর পৌঁছলেন। সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশী ছাত্রদের সহায়তায় রামপুরে অবস্থিত মাদরাসায়ে মাতলাউল উলূমে ভর্তি হন। ভারত যাওয়ার প্রাক্কালে তার উস্তাদ আড়াইবাড়ী দরবার শরীফের পীরে কামেল আল্লামা হযরত মাওলানা আবু সাঈদ আসগর আহমাদ আলকাদেরী আলহানাফী (র.)-এর নিকট বায়াত হন। তিনি ছাত্র আবদুশ শুকুরকে নিজ গ্রাম আড়াইবাড়ী হতে কসবা রেল স্টেশনে এগিয়ে দিয়ে দোয়া করেন। ওই সময় পীর সাহেবের অশ্রæজল অবস্থা দেখে আবদুশ শুকুর আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, বিদেশে অবস্থান যত কষ্টই হোক আমাকে কোরআন-হাদীসের জ্ঞানার্জন করতেই হবে। আল্লাহতায়ালা আমার আব্বা-আম্মা, পীর সাহেব ও মুরুব্বীদের আশা পূরণ করে আমাকে যেন কবুল করেন। এ দোয়াই সর্বদা করতেন ও অধ্যয়ন অব্যাহত রাখতেন। অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে সেখানে তেরো বছর ছিলেন। দাউরায়ে হাদীস, ফিক্হসহ বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষাগ্রহণ করেন। রামপুরে অধ্যয়নকালে উস্তাদের সাথে আচার-আচরণ ছিল অসাধারণ। তার উস্তাদ আল্লামা হযরত মাওলানা খলিলুল্লাহ ছাহেব (র.) যিনি আল্লামা আবিদ শাহ আলমাদানী (র.)-এর শ্বশুর ছিলেন। তাকে সকলে ছুফি বলে সম্বোধন করতেন। তার আমল আখলাকে মুগ্ধ হয়ে তাকে রামপুর শহরের লোহারী জামে মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব দেন। প্রশংসনীয় ফলাফল অর্জন করে সমাপনী সনদ গ্রহণ করে বিদায় নিয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। ভারতে তেরো বছর অবস্থানকালে দু’তিনবার বাড়িতে এসেছিলেন। এতো দীর্ঘ সময় বাবা-মা কিংবা আত্মীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল পত্রালাপ। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে মোবাইল ফোন, ই-মেইল অন্যান্য সুবিধার কোন কিছুই তখন ছিল না। এ ত্যাগ ছিল শুধু বিদ্যার্জনের জন্য। তারাই সফল হয়েছে যারা দুনিয়ার মায়া-মমতা ত্যাগ করে আখিরাতের কল্যাণের আশায় ভোগ বিলাস থেকে মুক্ত ছিলেন।
অধ্যয়নের সুদীর্ঘকাল পরে দেশে ফিরে আসায় বাবা-মা, চাচা-চাচী, ভাই-বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনের মাঝে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়েছিল। আনন্দাশ্রæ সকলের চোখে। ইসলামী সমাজ গঠনে আল্লাহতায়ালার বিধান মোতাবেক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত পথে চলার জন্য তার সহায়তা কামনা করেন। তিনি তাতে অত্যন্ত আনন্দিত হন।
দেশে ফিরে কোরআন হাদীসের খেদমতে আত্মনিয়োগ করেন। নিজ এলাকার ১১টি গ্রামের ঈদের জামায়াতের “খাড়েরা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ” ও খাড়েরা জামে মসজিদের খতিব ও ইমাম নিয়োজিত হন। শরীয়ত মোতাবেক সমাজ প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অতি যতœবান। ইসলামী জীবন-যাপনে চলার পথে ইবাদতের সঠিক পদ্ধতি জানার জন্য এলাকাবাসী তার স্মরণাপন্ন হতেন। তিনি কোরআন-হাদীসের আলোকে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক দ্বীন পালনের পরামর্শ দিতেন। তিনি ছিলেন অতি বিনয়ী। তার কাছে যে কেউ বিনা দ্বিধায় আসতে পারতেন। সাদা-সিধা জীবন-যাপনে অভ্যস্থ ছিলেন। সমসাময়িককালে তিনি সবার নিকট সমাদৃত ছিলেন।
হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আবদুশ শুকুর পরিণত বয়সে ১৯৪০ সালে নিজ গ্রামের মরহুম আবদুল গফুর সাহেবের কন্যা ফজিলাতুন নেসার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। দু’বছর পর ১৯৪৩ সালে পরম শ্রদ্ধেয় জন্মদাতা বাবা আফসার উদ্দিন ইন্তেকাল করেন। ১৯৬৩ সালে স্বীয় মা করমচান্দেন নেসাকে হারান। তার নানার পিত্রালয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার শোনলোহঘর গ্রামে। তার মামার নাম মোহাম্মদ আবদুল জলিল।
আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণীতে ১লা মার্চ ১৯৫৬ সালে তাদের প্রথম সন্তান জন্ম লাভ করে। আদর করে তার নাম রাখেন মোহাম্মদ ফজলুল হক। তার অপর ছেলে সন্তানের নাম মোহাম্মদ সফিকুর রহমান। তার চার কন্যা হলো: হাফেজা খাতুন, স্বামী মাওলানা মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার চারগাছ জামে মসজিদে ইমামতি করেন। মরিয়ম বেগম, স্বামী হাফেজ সুলতান আহমাদ। তিনি নরসিংদী জেলার শিবপুর হাফেজীয়া মাদরাসার শিক্ষকতা করেন ও মসজিদে ইমামতি করেন। মায়মুনা বেগম, স্বামী হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল মবিন। তিনি কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার রঘুনাথপুর দারুস সুন্নাহ নেছারিয়া ফাযিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ। মাহমুদা বেগম, স্বামী মাওলানা মোহাম্মদ এমদাদুল হক। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার ধামসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক পদে চাকরি করেন।
তিনি নিজ সন্তানদের দ্বীনি শিক্ষা দিতেও পিছিয়ে নেই। তার বড় ছেলে মোহাম্মদ ফজলুল হক। পারিবারিক তত্ত¡াবধানে বাড়িতে থেকেই খাড়েরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবনের সূচনা করেন। মাদরাসা শিক্ষা শুরু করেন সোনারগাঁও মাদরাসা থেকে। অতঃপর আড়াইবাড়ী ইসলামিয়া সাঈদীয়া কামিল মারদাসা, কুমিল্লা ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা, সৈয়দপুর কামিল মাদরাসা, সোনাকান্দা দারুল হুদা বহুমুখী কামিল মাদরাসা থেকে ফাযিল পর্যন্ত ও ধামতী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা থেকে কামিল হাদীস গ্রæপ এবং সরকারি মাদরাসা-ই আলিয়া, ঢাকা থেকে ফিক্হ গ্রæপে কামিল পাস করেন। কর্মজীবনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে রিলেজিয়াস টিচার পদে যোগদান করেন। দ্বীনি শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত থাকার বাসনা থাকায় সেখান থেকে মাদরাসায় শিক্ষকতার জন্য বাড়িতে চলে এসে আড়াইবাড়ী ইসলামিয়া সাঈদীয়া কামিল মাাদরাসায় যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি মুহাদ্দিছ পদে ঢাকার মোহাম্মদপুর আলিয়া মাদরাসায়, পরমতলা ইদ্রিসিয়া ফাযিল মাদরাসা ও সোনারগাঁও জিলানীয়া আলিম মাদরাসায় অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। তার পিতার স্থলাভিষিক্ত খাড়েরা কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ইমামতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে তার ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তিনি ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক মাসয়ালা-মাসায়েল ও ফরায়েজ অনুযায়ী বণ্টননামা বিষয়ে সহায়তা করে থাকেন। তিনি ১৯৭১ সালে তালতলা গ্রামের বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন স্বীয় উস্তাদ আল্লামা হযরত মাওলানা আমিনুদ্দিন আলকাদেরী (র.) পীর সাহেবের কন্যা শামীমা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার নিকট বায়াত হন এবং পরবর্তীতে খেলাফতপ্রাপ্ত হন। হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ফজলুল হক সাহেব সন্তানাদিদের দ্বীনি শিক্ষাদানে সচেষ্ট। প্রথম পুত্র হযরত মাওলানা আবুল অফা মোহাম্মদ মাহবুবুল হক কামিল পাস করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর শহীদ বাবুল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক (ইসলাম) পদে চাকরি করছেন। হযরত মাওলানা আবুল বারাকাত মোহাম্মদ নোমান কামিল ও বি এ পাস করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যবসা করছেন। হযরত মাওলানা এফজালুল হক কামিল পাস করে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক পদে চাকরি করছেন। হযরত মাওলানা মোহাম্মদ মোদ্দাচ্ছির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার অধীনে ফাযিল (সম্মান) তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করছে। তার কন্যাদের মধ্যে মাশকুরা বেগম, স্বামী মাওলানা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার সুবিল সলিম উল্লাহ দাখিল মাদরাসায় সুপারিনটেন্ডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত আছেন। মাফজুলা বেগম, স্বামী মাওলানা মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার ঘোড়াশাল হাজী মোকসত আলী গাউছিয়া ফাযিল মাদরাসায় অধ্যক্ষ পদে চাকরি করছেন। নাগিনা বেগম, স্বামী হযরত মাওলানা হাফেজ বাহাউদ্দিন হাজীগঞ্জ হাফেজী মাদরাসা পরিচালনা করছেন এবং মসজিদে ইমামতি করছেন। খাইরুন নিসা মানফুসা, স্বামী শেখ মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা পৌর সদরে অবস্থিত আড়াইবাড়ী ইসলামিয়া সাঈদীয়া কামিল মাদরাসায় সহকারি অধ্যাপক পদে কর্মরত আছেন। ফয়জুন নেসা, স্বামী হযরত মাওলানা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার রঘুনাথপুর দারুস সুন্নাহ নেছারিয়া ফাযিল মাদরাসায় প্রভাষক পদে কর্মরত আছেন। রেখা আক্তার, স্বামী মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ঢাকার মতিঝিলে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। তানভির জাহান জোনাকি, স্বামী মোহাম্মদ আমির হামজা (প্রবাসী) বর্তমানে নিজ এলাকা কসবায় ব্যবসা করছেন। রায়হানা আক্তার, স্বামী মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক সৌদি আরব (স্বস্ত্রীক অবস্থান করছেন ও) চাকরি করছেন।
মাওলানা মোহাম্মদ আবদুশ শুকুর সাহেবের দ্বিতীয় ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ সফিকুর রহমান। তিনি কামিল পাস করে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার রাণীগাঁও দাখিল মাদরাসায় সুপারিনটেন্ডেন্ট পদে চাকরি করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রাধিকা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল মজিদ মাস্টার সাহেবের কন্যা সেলিনা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার সন্তানদের মধ্যে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মোহাম্মদ ইরফানুল্লাহ ও মোহাম্মদ সুমন ৩ জনই প্রবাসে চাকরি করছেন। মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম ২০১৩ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতুবরণ করেন। তার কন্যাগণ হলেন; লুবনা আক্তার, সারমিন আক্তার, শিরিন আক্তার ও নাসরিন আক্তার। তিনি অসুস্থজনিত কারণে ২০১৫ সালের ২৭ জানুয়ারি ইন্তেকাল করেন।
মাওলানা ছুফি আবদুশ শুকুর সাহেবের ভাতুষ্পুত্র সেটেলমেন্ট অফিসার মোহাম্মদ মাজহারুল হক, সমাজ সেবক মোহাম্মদ ফায়েজুল আলম, মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহহাব জানান, খাড়েরা দরবার শরীফের বর্তমান পীর মুফতিয়ে আযম হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ফজলুল হক সাহেবের উদ্যোগে প্রতি বছর তাদের স্মরণে দোয়া মাহফিলের ব্যবস্থা করা হয়।
তার ছাত্র, ভক্ত ও আওলাদ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে ইসলামের খেদমতে নিয়োজিত আছেন। তার জন্মস্থান চট্টগ্রাম-সিলেট কিংবা কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক পথের খাড়েরা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বর্তমানে “খাড়েরা মৌলভী বাড়ী” নামে খ্যাত। তিনি দুনিয়ার মায়া-মমতা ত্যাগ করে ৫ রবিউচ্ছানী মোতাবেক ১৯৮৪ সালের ৪ জানুয়ারি সোমবার ৮৫ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। জানাযায় ইমামতি করেন তালতলা দরবার শরীফের পীর আল্লামা হযরত মাওলানা আমিনুদ্দীন আলকাদেরী (র.)। তার মাজার খাড়েরা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।