Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

গর্ভধারিণী মা ছুড়ে ফেললেও তার পাশে অনেকে

সেরে উঠছে অনাহূত ‘একুশ’

| প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : পৃথিবীর আলো দেখার পর আবর্জনায় ছুড়ে ফেলে দেন গর্ভধারিণী মা। ময়লার স্তূপে নিক্ষিপ্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যায় ফুটফুটে নবজাতক। এখন সেই ‘অনাহূতকে’ সারিয়ে তুলতে অসংখ্য মানুষের প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা। হাসপাতালে এখন তার অনেক স্বজন। চিকিৎসক, পুলিশ আর কয়েকজন দরদি যুবকের প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে এ নবজাতক। হয়তো ‘পাপের ফসল’ হওয়ায় লোকলজ্জার ভয়ে জন্মের পর ফুলের মতো শিশুটিকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে মা। তবে তাকে আবর্জনা থেকে তুলে এনে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে কয়েকজন যুবক যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা এ সমাজে বিরল।  
নবজাতকের চিকিৎসায় হাসপাতালে ভর্তি নারীদের কেউ কেউ মমতা নিয়ে শিশুটিকে দিচ্ছেন বুকের দুধ। তার দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এরই মধ্যে নামও পেয়েছে দু’দিনের শিশুটি, বাঙালির শোক-অর্জনে স্মরণীয় ‘একুশ’ হয়েছে তার নাম। একুশের রাতেই তাকে উদ্ধার করা হয় আবর্জনা থেকে। আর এজন্যই তার নাম একুশ।   
নগরীর আকবর শাহ থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, একুশের প্রথম প্রহরের আগে শিশুটি ছিল জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তাকে বাঁচাতে অনেকটা লড়াই করতে হয়েছে। তাই তার নাম ‘একুশ’ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগে চিকিৎসাধীন এই শিশুকে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য নবজাতকের মায়েরা নিয়মিত পরিচর্যা করছেন। পুলিশের পাশাপাশি ও উদ্ধারকারী যুবকরাও তার খোঁজ-খবর রাখছেন। গত সোমবার রাতে নগরীর আকবর শাহ থানার কর্নেল হাট প্রশান্তি আবাসিক এলাকার একটি ভবনের পেছনে আবর্জনার স্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে।
হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জগদীশ চন্দ্র দাশ জানান, ২০ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে পুলিশ ও উদ্ধারকারী কয়েকজন যুবক নবজাতকটিকে নিয়ে আসেন। সে সময় শরীর ঠা-া ও ময়লা লাগানো থাকায় শিশুটি শ্বাসকষ্টে ভুগছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ধারণা করছি ওই দিনই শিশুটি ভূমিষ্ট হয়েছিল। ডা. জগদীশ বলেন, শিশুটি দ্রুত সেরে উঠছে। হাসপাতালের সবাই মিলে তার সেবা শুশ্রুষা করছেন। পাশের বেডের শিশুদের মায়েরা তাকে বুকের দুধ দিচ্ছেন।
আকবর শাহ থানার ওসি আলমগীর জানান, শিশুটিকে দত্তক নেয়ার জন্য অনেকেই আগ্রহ দেখিয়ে যোগাযোগ করেছে। তবে যেহেতু শিশুটির মা-বাবার সন্ধান পাওয়া যায়নি তাই আমরা আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে হস্তান্তর করব। আদালতের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত শিশুটি পুলিশের তত্ত্বাবধানে থাকবে। ওসি বলেন, যে ভবনের পেছন থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে তার দ্বিতীয় তলায় ‘লাইফ কেয়ার সেন্টার’ নামে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। ওই ভবনের দেয়ালেও রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।



 

Show all comments
  • MD Kutubul Alam Joy ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১১:৫৪ এএম says : 0
    এরা এসব কেমনে পারে। আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। মা তার ছেলে কে এভসবে ফেলে দিতে পারে ?
    Total Reply(0) Reply
  • Abdullah AL Mamun ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১১:৫৫ এএম says : 0
    Jar allah ase tar ki kono karo dorkar ase?
    Total Reply(0) Reply
  • Abul kalam Azad ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১১:৫৫ এএম says : 0
    very Sad news
    Total Reply(0) Reply
  • টুনা মুনি ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ৫:৪১ পিএম says : 0
    বাচ্চা টা কী কাউকে দত্তক দেয়া হবে
    Total Reply(0) Reply
  • ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ৫:৪৬ পিএম says : 0
    যদি বাচ্চা টা দত্তক দেয়া হয় তবে আমরা নিতে চাই
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গর্ভধারিণী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ