পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজিবুল হক পার্থ : পৌরসভা নির্বাচনের সহিংসতার জের ধরে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনেও বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর, কাজে বাধাদান অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে একজন নিহতসহ দুই শতাধিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবুও সেনাবাহিনী মোতায়েন না করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) থাকবে কিনা এবং থাকলেও বিজিবসহ অন্যান্য বাহিনীর কী পরিমাণ সদস্য থাকবে, তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে বৈঠকে বসবে ইসি। গতকাল বৃহস্পতিবার বৈঠকের কার্যপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিগত নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল, এমন উদ্ধৃতি কার্যপত্রে রাখা হলেও এবারে সেনাবাহিনী নিয়ে আলোচনার সুযোগই রাখা হয়নি। এতে নির্বাচনী সহিংসতা বৃদ্ধি ও ভোটার উপস্থিতি কমার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজন ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার ইসির উপসচিব সামসুল আলম স্বাক্ষরিত একটি চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, মুখ্য সচিব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তেজগাঁও ঢাকা, মহাপরিচালক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, কোস্টগার্ড, র্যাব, আনসার ও ভিডিপি, ডিজিএফআই এবং এনএসআইয়ের কাছে পাঠানো হয়।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান জানান, ৩ মার্চের বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল বাহিনীর প্রধানদের চিঠি দেওয়া হয়েছে, যার সঙ্গে বৈঠকের কার্যপত্রও রয়েছে। তবে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারকে দেওয়া হয়েছে অনুলিপি। অর্থাৎ তিনি বৈঠকে উপস্থিত থাকতেও পারেন, নাও পারেন।
বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, বিগত ২০১১ সালের ইউপি নির্বাচনের সময় র্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, বিজিবি, কোস্টগার্ড এবং সীমিত পরিসরে সেনাবাহিনী ও নৌ-বাহিনীর মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রাখা হয়েছিল। তবে এবারে সেনাবাহিনী নিয়ে কোনো আলোচনার প্রস্তাবনা রাখা হয়নি। এবার পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতি ইউনিয়নে ১টি করে ৬৩৯টি মোবাইল ফোর্স, প্রতি তিন ইউপির জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে প্রতি উপজেলায় ২টি করে র্যাবের মোবাইল টিম ও ১টি স্ট্রাইকিং টিম এবং প্রতি উপজেলায় ২ প্লাটুন বিজিবি মোবাইল ও ১ প্লাটুন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। আবার উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতি উপজেলার জন্য কোস্টগার্ডের ২ প্লাটুন মোবাইল ফোর্স ও এক প্লাটুন স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকছে। যারা ভোটের দু’দিন আগে থেকে পরে একদিন মোট চার দিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে।
ইসি সচিবালয়ের কর্মকরাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ৩ মার্চ নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) মিলনায়তনে ওইদিন সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল কমিশনের বৈঠকে এ বৈঠকের বিস্তারিত সময়সূচি এবং কার্যপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, প্রথম ধাপে ৬৩৯টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রায় ৭ হাজার ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচনের দিন সাধারণ ভোট কেন্দ্রে ১৭ জন করে পুলিশ ও আনসারের ১৯ জন করে ফোর্স মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ফোর্স রাখার পরিকল্পনা রয়েছে ১৯ জন করে। অর্থাৎ নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রেই ফোর্স থাকছে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো।
কার্যপত্রে আরো বলা রয়েছে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরদিন থেকে নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রতি উপজেলায় ১ জন করে ভোটগ্রহণের আগে পরে চারদিনের জন্য ৩ জন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত করা হবে। এছাড়া একই সময়ে উপজেলা প্রতি ১ জন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োজিত থাকবে।
এদিকে জেলা প্রশাসক প্রয়োজন মনে করলে ফোর্স পাওয়া সাপেক্ষে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করতে পারবেন। অন্যদিকে প্রয়োজনে ভোটকেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টর স্থাপনের চিন্তা-ভাবনাও করা হচ্ছে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় সেল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ে মনিটরিং সেল গঠনের পরিকল্পনাও রয়েছে ইসি’র।
এদিকে বহিরাগতদের নিষিদ্ধকরণ, বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন নিষিদ্ধকরণ, রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনিটরিং সেল, ভিজিল্যান্স ও অবজারবেশন সেল টিম গঠন ছাড়াও নির্বাচনে সন্ত্রাস, মাস্তানদের দৌরাত্ম্য বন্ধকরণের করণীয় নির্ধারণের পরিকল্পনাও রয়েছে কার্যপত্রে।
এদিকে ভোটের তারিখ দেওয়ার আগেই পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সহিংসতার আশঙ্কা থাকায় এক দিনে সাড়ে তিনশ’র বেশি ইউপিতে ভোট হলে কেন্দ্র ও নির্বাচনী এলাকার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য হবে। এবার প্রতি ধাপে গড়ে সাত শতাধিক ইউপির ভোট হবে। এ বিষয় নিয়েও বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনা হতে পারে।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনের আলোকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কমিশন তা করেনি। যেহেতু নির্বাচন হবে পাড়ায়-মহল্লায় তাই নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের সহিংসতা হয়, তার একটা স্থায়ী রূপ থাকবে। শুধু নির্বাচন বা রাজনীতির বাইরেও এর একটা প্রভাব পড়বে।
সহিংসতা প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু নির্বাচনের মাঠে থাকবে সবাই। তাই যে কোনোভাবে বিজয়ী হওয়ার জন্য চেষ্টা করবে। কারণ বিগত উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে সেটাই ধারণা করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।