পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহের সাত বছর পরও ঘটনার মূল কারণ সম্পর্কে অনেকের মনে সন্দেহ রয়ে গেছে। বাংলাদেশ রাইফেলস বা বিডিআরের সৈন্যদের নানা ক্ষোভের কারণে বিদ্রোহ হলেও ঘটনা দ্রুত ব্যাপক হত্যাকা-ে পরিণত হয়। সৈন্যদের ক্ষোভ কীভাবে হত্যাকা-ে পরিণত হলো, তার কোনো সদুত্তর না পেয়ে অনেকেই মনে করেন ওই বিদ্রোহ ছিল একটি ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনটি তদন্ত, চার হাজারেরও বেশি বিডিআর সৈন্যের কারাদ- এবং দেড়শ’র বেশি মৃত্যুদ-ও বিতর্কের অবসান ঘটাতে পারেনি।
ঢাকার তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে ২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারিতে ওই বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। পরবর্তীকালে অন্তত ৫০ জন প্রাক্তন বিডিআর সদস্য সেনাবাহিনীর হেফাজতে মারা যান। বিদ্রোহ নিয়ে এই বিতর্কের কারণগুলো বিশ্লেষণ করেছেন বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা কাদির কল্লোল, যিনি ওই ঘটনা শুরু থেকেই পর্যবেক্ষণ করছেন।
কাদির কল্লোলের বিশ্লেষণ : বিদ্রোহের খবর পেয়ে প্রথমে আমরা পিলখানার গেটের সামনে যাই। তখন বাইরে থেকে শুধু গুলির শব্দ শুনছিলাম। হত্যাকা- এবং নৃশংসতা নিয়ে বিদ্রোহের প্রথম দিনে কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছিল না। দ্বিতীয় দিনে যখন জওয়ানরা আটকে রাখা সেনা কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যদের ছেড়ে দেয়, তাতে হত্যাকা- এবং নৃশংসতার বিষয়টি প্রকাশ পেতে থাকে। যখন একের পর এক লাশ উদ্ধার করা হয়, তখনই এই ঘটনার ভয়াবহতা টের পাওয়া যায় এবং এর উদ্দেশ্য নিয়েও নানারকম প্রশ্ন দেখা দেয়। যদিও বিদ্রোহের শুরুতে জওয়ানরা সেনাবাহিনী থেকে আসা তাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলেছিল, বাহিনীটি পরিচালিত ডালভাত কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগও তারা তোলেন। কিন্তু ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার ঘটনা যখন বেরিয়ে আসে, তখন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রথমে প্রশ্ন তোলেন। তারা মনে করেন, এটা নিছক বিদ্রোহ ছিল না, এর পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকেও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এসেছে। আওয়ামী লীগ বলেছে, তারা ক্ষমতা আসার মাত্র ৪০ দিনের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটে। তাদের সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র থেকেই এমন ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে বিদ্রোহ দমনে সরাসরি সামরিক শক্তি প্রয়োগ না করায় বিরোধী দল বিএনপি শুরুতেই প্রশ্ন তুলেছিল। তাদের অনেকে সে সময় এই ঘটনার জন্য প্রতিবেশী ভারতের দিকেও আঙ্গুল তুলেছিলেন।
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়া অব্যাহত রেখেছেন। তিনি অভিযোগ করে আসছেন, এটির পেছনে একটি ষড়যন্ত্র ছিল। ফলে এই ঘটনার নেপথ্যের কারণ নিয়েও সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি সন্দেহ তৈরি হয়েছে। কিন্তু সাত বছর পরেও যখন এই ঘটনার তদন্ত হয়েছে, বিচার হয়েছে, তখনো মানুষের মন থেকে সন্দেহ দূর হয়নি। এই ঘটনার তদন্তে তিনটি কমিটি হয়েছিল।
সাবেক সচিব মোঃ আনিসুজ্জামানকে প্রধান করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটি বিদ্রোহের জন্য বাহিনীর অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যা চিহ্নিত করেছিল। একই সঙ্গে কমিটি ঘটনার পেছনের কারণ বা নেপথ্যের কারণ তদন্তের সুপারিশ করেছিল। সেনাবাহিনীও একটি তদন্ত করেছে, যদিও তাদের কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। হত্যা মামলা এবং বিস্ফোরক মামলা তদন্ত করেছে সিআইডি পুলিশ। বিদ্রোহের ঘটনায় বাহিনীটির নিজস্ব আইনে চার হাজারের বেশি জওয়ানের সাজা হয়েছে। আর হত্যা মামলায় ফৌজদারি আইনে ৮০০ জনের মতো জওয়ানের সাজা হয়েছে, যেটি এখন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
কোনো মামলায় এত সংখ্যক আসামির সাজা বাংলাদেশে আগে কখনো হয়নি। এরপরেও অনেকে এখনো সন্দেহ প্রকাশ করেন। এর কারণ বলা যেতে পারে যে, সাবেক সচিব মোঃ আনিসুজ্জামানের প্রতিবেদনের কিছু অংশ শুধুমাত্র প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তের পুরো বিষয়টি প্রকাশ পায়নি। ফলে আগে থেকেই যে নানা প্রশ্ন উঠেছে বা রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক হয়েছে, তার একটা প্রভাব রয়েই গেছে। ফলে সন্দেহ বা প্রশ্ন রয়েই গেছে। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।