পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘এক-এগারোর কুশীলবদের’ বিচারের আওতায় আনা হবে। সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীতে অবৈধ ক্ষমতা দখলকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আজ হোক, কাল হোক, তাদের বিচার হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নোত্তরে তথ্য মন্ত্রী বলেন, এক-এগারোর কুশীলবদের বিচারে কমিশন গঠনের যে দাবি বিভিন্ন মহল থেকে উঠেছে, সরকার তা ‘ভেবে’ দেখবে। বিভিন্ন জায়গা থেকে যে কমিশনের প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে, এটা সরকার শুনেছে, সরকার পরে এটা ভেবেচিন্তে দেখবে।
কমিশন গঠন প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন ,পঁচাত্তর থেকে বিরাশি-জেনারেল জিয়াউর রহমানের ক্যান্টনমেন্টে কসাইখানা বানানোর ঘটনা, এখানেও কমিশনের ব্যাপার আছে। কমিশন করলে একটি কমিশন হতে পারে, সেটা সরকার বিবেচনা করবে। এর ব্যাখ্যায় ইনু বলেন, পঁচাত্তর থেকে বিভিন্ন সামরিক শাসনকালে যে বিভিন্ন দুষ্কর্ম, মানবাধিকারের লঙ্ঘন, নির্যাতন, অত্যাচার-নির্যাতন, দুর্বৃত্তির ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে সামগ্রিক বিবেচনায় শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি রাখে। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ‘সমসাময়িক গণমাধ্যম’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মাহফুজ আনামকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ‘শতভাগ ঠিক’। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এক-এগারোর সময়কালের ঘটনার বিবরণ মাত্র। এখানে কোনো অত্যোক্তি নেই, বিষোদ্গার নেই। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমরা সেই সময়ে সেনা সমর্থিত সরকার কর্তৃক রাজনীতিক, ব্যবসায়ী সরকারি কর্মচারী, এমনকি গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর যে নির্যাতন হয়রানি হয়েছিল, তারই পরিষ্কার চিত্রটি দেখতে পাই। এখানে কোনো হিংসা-প্রতিহিংসার বিষয় নেই।
তিনি বলেন, ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর সঙ্গে সরকারের কোনো ‘বৈরিতা’ নেই। সরকার ডেইলি স্টার বা প্রথম আলোর সঙ্গে ‘বৈরি কোনো আচরণ করছে না’ দাবি করে ইনু বলেন, ওই দুটি পত্রিকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা ‘আন্তরিকভাবে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন।
হাসানুল হক বলেন, সংবাদপত্র বা সম্পাদক রাজনীতিকদের সমালোচনা করতে পারেন। একজন রাজনীতিকের কি একজন সম্পাদক বা সংবাদপত্রের যৌক্তিক সমালোচনা করার অধিকার নেই? রাজনীতিকেরা সমালোচনা করলে এত শোরগোল কেন? প্রধানমন্ত্রী এক-এগারো পরবর্তী সংবাদপত্র ও কয়েকজন সম্পাদক নিয়ে কথা বলেছেন, সেটা সত্য ঘটনাই বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী কি সত্য কথা বলার অধিকার রাখেন না? গণমাধ্যম রাজনৈতিকদের সমালোচনা করলে যেমন গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, তেমনি সংবাদপত্র বা সম্পাদকের সমালোচনা করলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত হয় না। কিন্তু দুই পক্ষের অযৌক্তিক সমালোচনা গণতন্ত্রকে ক্ষতি করে, এতে গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি উৎসাহ পায়।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতিতে ‘সঠিক চিত্র আসেনি’ বলেও মন্তব্য করেন ইনু।
তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরেন না। ভিন্ন কোনো পক্ষের হয়ে একচোখা প্রতিবেদন তৈরি করছে। যা আমরা গ্রহণ করতে রাজি নই। কারণ এই তথ্য খ-িত, যেখানে সঠিক চিত্রের প্রকাশ পায়নি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাম্প্রতিক মন্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা যা ইচ্ছা বলতে পারে না। অ্যামনেস্টি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। অপরাধীদের পক্ষে ওকালতি করছে।
টিআইবি প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সংস্থাটি গর্হিত অন্যায় করেছে। টিআইবি সংসদ সম্পর্কে যে ন্যক্কারজনক তথ্য দিয়েছে এবং এর ভিত্তিতে সংসদীয় কমিটি সংস্থাটির নিবন্ধন বাতিলের যে প্রস্তাব করছে, সরকার তা খতিয়ে দেখছে।
অ্যামনেস্টি বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংঘাত, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগগুলোকে বরাবরই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বড় ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এসবের সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে স্বাধীন গণমাধ্যমকে চাপে রেখে মত প্রকাশের সুযোগ সীমিত করার ঘটনাগুলো। এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্যমন্ত্রী ইনু বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গণমাধ্যম নিয়ে মায়াকান্না করছে, এটি একচোখা সংস্থা। যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তা খ-িত ও বিকৃত এবং সত্যের অপলাপ।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু দাবি করেন, গণমাধ্যমের ওপর কোন চাপ নেই। সরকারে ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে আপনারা সমালোচনা করতে পারেন। সরকার সমালোচনা ও পরামর্শকে সাদর আমন্ত্রণ জানায়। দেশের গণমাধ্যম এখন স্মরণকালের সবচেয়ে স্বাধীনতা ভোগ করছে।
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মানবাধিকার-বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার-এ বিজ্ঞাপন না দিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের সতর্ক করা প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার বিজ্ঞাপন দেওয়া বা না দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে না। এমন কোনো নির্দেশ দেওয়াও হয়নি। তবে যদি কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এ কথা সরকারকে জানায় যে তাদের বিজ্ঞাপন দিতে নিষেধ করা হয়েছে তাহলে সেটা আমরা দেখব।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ইনু বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গোয়েন্দাদের সিদ্ধান্ত হতে পারে। এটা কোনো চাপ বলা যাবে না। অনেক মন্ত্রী ও সাংসদও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢুকতে পারেন না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।