পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্বের শক্তিশালী দেশের কাতারে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ
শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার থেকে : বর্তমান সরকার দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা বিষয়েও এগিয়ে গেছে অনেক দূর। গত বছর কক্সবাজারের কলাতলীতে মহামান্য প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ উদ্বোধন করেছিলেন বিমানবাহিনীর প্রতিরক্ষা রাডার। দু’বছর আগে রামুতে ২ হাজার একর ভ‚মি নিয়ে স্থাপন করা হয়েছে সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন রামু সেনানিবাস। নৌ বাহিনীর আধুনিকায়নে এখন কক্সবাজারেই হচ্ছে সাব-মেরিন নৌ-ঘাঁটি। পর্যটন নগরী কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার উপক‚লবর্তী মগনামা ইউনিয়নেই হচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র সাবমেরিন নৌ-ঘাঁটি। একশ’ কোটি মার্কিন ডলারের এই প্রকল্পের অধীনে ইতোমধ্যেই চীন থেকে ক্রয় করা হয়েছে দু’টি সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ যুক্ত হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স ও গণচীন এর মত শক্তিশালী দেশের কাতারে।
সাবমেরিন ঘাঁটির কারণে বাংলাদেশ বিশ^বাসীর কাছে নতুন করে পরিচিতি লাভ করতে যাচ্ছে সেইসাথে অপার সম্ভাবনার পর্যটন নগরী কক্সবাজারের লবণ ও মৎস্যচাষে সমৃদ্ধ সমুদ্র উপক‚লবর্তী উপজেলা পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়নও। উন্মোচিত হতে যাচ্ছে সম্ভাবনার নতুন দ্বার। এটি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অরো একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। কুতুবদিয়া চ্যানেলের অদূরবর্তী মগনামায় পূর্ণাঙ্গ সাবমেরিন (ডুবো যুদ্ধজাহাজ) ঘাঁটি স্থাপনের জন্য প্রক্রিয়া চ‚ড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সাবমেরিন ঘাঁটি স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের পশ্চিম-দক্ষিণ অংশে কাকপাড়া এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে ওই স্থানকে উপযোগী হিসাবে চ‚ড়ান্ত করে। ভ‚মি অধিগ্রহণ কাজ শেষের পথে বলেও জানা গেছে।
সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে আধুনিক বাহিনীতে রূপান্তর ও ক্ষমতা বাড়াতে ১০ বছরব্যাপী একটি পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বর্তমান সরকার সাবমেরিন নৌ-ঘাঁটি স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সূত্রমতে, খুব শীঘ্রই বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হচ্ছে। এর সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১’শ কোটি মার্কিন ডলার। সূত্রটি আরো জানিয়েছে, সাবমেরিন উপযোগী কর্মকর্তা তৈরি করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। সে কারণে এখন থেকেই শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণ ট্রেনিং। নৌবাহিনীর চৌকস কর্মকর্তাদেরকে এ বিষয়ে পারদর্শী হতে ট্রেনিংয়ে পাঠানো হয়েছে ইউরোপ মহাদেশের একটি নৌ-ঘাঁটিতে।
স¤প্রতি দেশীয় তৈরি যুদ্ধজাহাজ পদ্মার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সাবমেরিন সংযোজনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান। সশস্ত্র বাহিনী সূত্র মতে বাংলাদেশে সাবমেরিন আনা হলে নৌবাহিনী আধুনিক বাহিনীতে পরিণত হবে। জানা গেছে, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সরকার চীন থেকে দু’টি সাবমেরিন ক্রয় করেছে এবং সেগুলো এখন বঙ্গোপসাগরেই আছে। সাবমেরিন হচ্ছে বিশেষ ধরনের ডুবো যুদ্ধজাহাজ যা পানির তলদেশে এবং উপরিভাগে সমানতালে চলতে সক্ষম। বাংলাদেশ বিশ্বের উদীয়মান দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ খুব কম দেশের রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স ও গণচীন ছাড়া বিশ্বের আর কোথাও নেই। তাই সাবমেরিন সংযোজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিশে^র শক্তিশালী দেশের কাতারে যুক্ত হতে যাচ্ছে।
সাবমেরিন ঘাঁটি বিষয়ে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত ২০১২ সালের শুরুতে সেনা নিবাস অধিদফতর ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চাহিদামতো কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামার ৪১৯ দশমিক ৮৫ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়। জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে একটি প্রতিনিধি দল ওই এলাকা পরিদর্শন করে মগনামা ইউনিয়নের কাকপাড়াকে নৌ-ঘাঁটির জন্য উপযুক্ত স্থান হিসেবে বিবেচনা করেন। ইতোমধ্যে ওই ভ‚মি অধিগ্রহণ কাজ প্রায় শেষ হতে চলেছে। এ পর্যন্ত ৬২ কোটি ২৯ লাখ ১২ হাজার টাকা ভ‚মি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। এ ছাড়াও আরো ২শ’ একর ভূমি এজন্য অধিগ্রহণ করা হচ্ছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়াত আজিজ রাজু এ প্রসঙ্গে বলেন, ৪ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প যুগান্তকারী বলে তিনি মনে করেন। এজন্য ইতোমধ্যেই ৪১৯ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আরো প্রায় ২৮৯ একর ভ‚মি প্রয়োজন বলে। তবে বেড়িবাঁধের উপর থেকে উচ্ছেদ হওয়া ৬০-৭০টি ভ‚মিহীন পরিবারের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দেশের এ বৃহত্তম নৌ-ঘাঁটি তার ইউনিয়নে হচ্ছে। এতে তারা খুশি। এর সাথে আরো বহু উন্নয়ন এর পাশাপাশি অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।