পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার নরসিংদী থেকে : ডিম মানুষের অত্যাবশ্যকীয় প্রাত্যহিক খাবার। উৎপাদনও হচ্ছে প্রচুর। কিন্তু এরপরও ডিমের দাম কমছে না। দিনের পর দিন অব্যাহত গতিতে ডিমের মূল্য বেড়ে চলছে। গত ৮ মাসের ব্যবধানে দাম বেড়ে এক কুড়ি মুরগির ডিমের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৮০ টাকা। কোথাও কোথাও খুচরা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা দরে। হাঁসের ডিমের দাম আরো বেশি। বর্তমান বাজারে এক কুড়ি হাঁসের ডিমের মূল্য ২২০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের স্বাভাবিক মূল্য সীমা অতিক্রম করার পরও সরকারের পক্ষ থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না।
ডিম বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত আগস্ট মাস থেকে ডিমের দাম অব্যাহত গতিতে বাড়তে থাকে। তখন এক সপ্তাহে কুড়ি প্রতি ডিমের মূল্য বেড়ে যায় ৪০ টাকা। সেই থেকে ডিমের দাম খুব একটা কমেনি। খামারিরা ডিমের মূল্য বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যারা এক কুড়ি ডিম কখনোই কিনে না, তাদের সবচেয়ে বেশি মূল্যে কিনতে হচ্ছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের শ্রমিক শ্রেণির মানুষেরা। এক হালি ডিমের বেশি কিনতে পারে না। তাদের বর্তমানে এক হালি ডিম ক্রয় করতে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। ১টি ডিমের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা। ডিমের এই মূল্য অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি এবং সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। যে সমস্ত নিম্ন আয়ের মানুষ ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকা মাসিক বেতনে চাকরি করে তাদের পক্ষে ১০ বা এর বেশি টাকা দিয়ে ডিম কিনে খাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। শিশুদেরকে দৈনিক একটি করে ডিম খাওয়ানো পরামর্শ দেন ডাক্তররা। কিন্তু অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে লাখ লাখ গরিব শিশু প্রতিদিন ডিম খাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সরকারি হিসাব মতে বছরে নরসিংদীতে ডিমের বার্ষিক চাহিদা হচ্ছে ২৪ কোটি ৯৬ লাখ। বছরে উৎপাদন হয় প্রায় ৩১ কোটি ডিম। এ ক্ষেত্রে ৫ কোটির বেশি ডিম অতিরিক্ত উৎপাদিত হয়েছে। এরপরও হঠাৎ ডিমের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। খুচরা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারি আড়ত থেকে ডিমের দাম বাড়ানো হয়েছে। তারা বেশি দামে কিনে এনে বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।
নরসিংদী প্রাণী সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নরসিংদীতে ডিম উৎপাদন খামার রয়েছে কমবেশি ৯০০টি। এসব খামারগুলো বর্তমানে সম্পূর্ণ চালু রয়েছে। এসব খামারে কমবেশি ২০ লাখ মুরগি প্রতিদিন ডিম দিচ্ছে। এরপরও ডিমের মূল্য বৃদ্ধির যুক্তিসঙ্গত কোন কারণ নেই। নরসিংদী থেকে ডিম রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় প্রতিদিনই রফতানি হচ্ছে। ১৯৯২ সালের পূর্বে নরসিংদী তথা দেশে ডিমের কোন ঘাটতি ছিল না। দেশীয় ডিম উৎপাদন কমে গেলে ভারত থেকে ডিম আমদানি করে ডিমের চাহিদা পূরণ করা হতো। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ডিমের মূল্য হঠাৎ বেড়ে যায়। তখন সরকার খামারিদেরকে ডেকে ডিমের মূল্য কমানোর জন্য অনুরোধ জানালে তারা সরকারকে এই মর্মে অঙ্গীকার প্রদান করে যে, ডিমের মূল্য যুক্তি সংগত পর্যায়ে রেখে ব্যবসা করা হবে। অর্থাৎ তৎকালীন সময়ে হালি প্রতি ১০ টাকার বেশি দরে ডিম বিক্রি করবে না।
খামারিদের এই অঙ্গীকারের ফলশ্রুতিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভারত থেকে ডিম আমদানি বন্ধ করে দেন। এরপর কিছুদিন খামারিরা ডিমের দাম যুক্তিসংগত পর্যায়ে রাখলেও পরবর্তীতে প্রতিযোগিতা করে ডিমের মূল্য বাড়িয়ে দেয়া হয়। সরকার পরিবর্তনের পর খামারিরা নিজেদের খেয়াল খুশিমত ডিমের মূল্য বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে ৮ টাকা হালির ডিম এখন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সরকার বা স্থানীয় প্রশাসন খামারিদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। পারছে না পাইকারি ব্যবসায়ীদেরকেও নিয়ন্ত্রণে আনতে। প্রতিদিনই তারা খাবারের মূল্য বৃদ্ধি অজুহাতে ডিমের মূল্য বাড়িয়ে মনোপলি ব্যবসা করছে। একইভাবে দেশের সকল মুরগি খামারি ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট করে যখন তখন মূল্য বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সরকার খামারিদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে ডিমের মূল্য দিন দিন বাড়তেই থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।