পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন হতে পারবে না বলে বিএনপির হুঁশিয়ারির প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে তার শাস্তি হবেই। মিউনিখে গতকাল জার্মান আওয়ামী লীগের সংবর্ধনায় তিনি বলেন, ‘যদি সত্যি কোর্টের কাছে এভিডেন্স থাকে চুরি করেছে, তাহলে শাস্তি হবে। ‘সেজন্য তারা ইলেকশনই হতে দেবে না। একটা চোর, এতিমের টাকা যে চুরি করে খায় তাকে রক্ষার জন্য ইলেকশন হতে দেবে না। কতো আবদারের কথা, কতো আহ্লাদের কথা!
‘এতো আহ্লাদ যখন, তখন গরিব মানুষের টাকা কয়টা দিয়ে দিলেই হত’।
২০০১-২০০৬ মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সোয়া পাঁচ কোটি টাকা দুর্নীতির দুই মামলা এখন বিচারের শেষ পর্যায়ে। জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট ও জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলা দুটি চলছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার কিংবা জেলে পাঠানোর কোনো ভাবনা সরকারের নেই। আদালতে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে সে কারাগারে যাবে কি না, সে মাফ পাবে কি না সেটা আদালত বলতে পারবে। সময় ও স্রোত যেমন কারো জন্য অপেক্ষা করে না, তেমনি বাংলাদেশের সংবিধান ও নির্বাচন কারও জন্য অপেক্ষা করবে না’।
এর প্রতিক্রিয়ায় গতকাল বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাদের চেয়ারপারসনকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন ‘হতে পারবে না’।
‘সংবিধানের দোহাই দিয়ে একতরফা ও বিতর্কিত নির্বাচন করার কোনো অপচেষ্টা জনগণ রুখে দেবে’।
মিউনিখের ম্যারিয়ট হোটেলে স্থানীয় সময় গতকাল বিকেলে এই সংবর্ধনায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আবার শুনলাম, তার বিরুদ্ধে শাস্তি হলে.... কোর্ট কাকে কী শাস্তি দেবে..... সে যদি চুরি না করে থাকে, তাহলে শাস্তি হবে না’।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘চুরি করে তো শত শত কোটি টাকা বানিয়েছে’। ‘চুরির ওই অর্থ’ তার ছেলে তারেক রহমান ও মোসাদ্দেক আলী ফালুর কাছে গচ্ছিত আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ মামলায় বিচারিক আদালতের প্রতি অনাস্থা এনে উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার আবেদনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা মামলার জন্য হাইকোর্টে ৫৩/৫৪ বার পিটিশন করেছে’।
‘এখন মামলা থেকে পালায়। মিথ্যা মামলা হলে পালানোর কী দরকার? এটা তো পরিস্কার; এতিমখানার টাকা মেরে খেয়েছে। এটা তো কাগজপত্রে আছে’।
বিএনপি নেত্রী ‘পাকিস্তানের সুরে কথা বলেন’ মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাকিস্তান যে সুরে কথা বলে, খালেদা জিয়াও সে সুরে কথা বলে। খালেদা জিয়ার মুখেও একই কথা শুনি। ৩০ লাখ মানুষ নাকি মারা যায়নি। সেটা নিয়েও সে সন্দেহ প্রকাশ করে। পাকিস্তানিরা যে সুরে কথা বলেন, উনি সেই সুরে সুর দেন, কেন’?
নতুন নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের জন্য আমাদের তালিকা থেকে একজন নিয়েছে। বিএনপি তালিকা দিয়েছে, সেখান থেকে একজন নিয়েছে। তাতেও দোষ। সব কিছুতেই দোষ। তাদের সব কিছুতেই নাখোশ।
‘তাদের সব কিছুতেই মানি না, মানব না’।
জামায়াতে ইসলামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারে নাই বলে বিএনপিও ওই নির্বাচনে যায়নি বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘নিজেরা নির্বাচন না করে যে ভুল করেছে, তার খেসারত তার দল দেবে। বাংলার জনগণ কেন দেবে’?
মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গিবাদ থেকে এখন কেউই রেহাই পাচ্ছে না। বাংলাদেশের অবস্থান পরিস্কার। কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা- সহ্য করা হবে না। এর বিরুদ্ধে আমরা যা করার করব’।
অনুষ্ঠানে জার্মানি ছাড়াও ইতালি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, স্পেন, পর্তুগাল, সুইডেন ও নরওয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা অংশ নেন।
মিউনিখ নিরাপত্তা
সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের সাথে শেখ হাসিনার যোগদান
বিশেষ সংবাদদাতা ; বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল জার্মানিতে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ বিষয়ক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও নীতি নির্ধারকদের মতবিনিময়ের জন্য বিশ্বের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এই স্বতন্ত্র ফোরামের তিন দিনব্যাপী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন গতকাল বায়েরিচার হোফ হোটেলে শুরু হয়েছে। সম্মেলনে বিশ্বের ২৫টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, ৪৭টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ৩০টি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, জাতিসংঘ মহাসচিব এবং ৯০ জন সংসদ সদস্যসহ প্রায় ৫শ’ নীতিনির্ধারক অংশ নিচ্ছেন।
কর্মকর্তারা জানান, এ বছর সম্মেলনে আলোচ্যসূচির মধ্যে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এবং ইউরোপীয় রাষ্ট্রসমুহের মধ্যে সম্পর্ক, ট্রাম্প, ব্রেক্সিট, ইইউ ও ন্যাটো সঙ্কট।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেন। তিনি সম্মেলনে যোগ দিতে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের আমন্ত্রণে গতকাল সকালে এখানে এসে পৌঁছেন।
জার্মান ও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী যথাক্রমে উরসুলা ভন দের লায়েন এবং জ্যামস এন মাত্তিস’র উদ্বোধনী বক্তব্য দেয়ার পর সম্মেলনের চেয়ারম্যান অ্যাম্বাসেডর ওলফ গ্যাঙ্গ ছিঙ্গার সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। জার্মান চ্যান্সেলর, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট, জাতিসংঘ মহাসচিব, পোল্যান্ড ও আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এবং রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, সউদী আরব ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগদান করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ উচ্চপর্যায়ের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন, পানি, খাদ্য ও অভিবাসনসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ের ওপর ভাষণ দিবেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সম্মেলনে আগত অতিথিদের সম্মানে মিউনিখ নগরীর মেয়রের দেয়া এক সংবর্ধনায় অংশ নেবেন। প্রধানমন্ত্রী আজ জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এ সময় দু’নেতা দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন।
সম্মেলনের ফাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি বিখ্যাত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে শতাধিক দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।