দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
কাজী মোরশেদ আলম : এই মনোরম পৃথিবীতে আমাদের বসতি। অনেক সুন্দর ও বৈচিত্র্যের অধিকারী এই পৃথিবী। আমাদের মাথার ওপর আছে বিশাল আকাশ। আকাশের বুকে দেখতে পাই অসংখ্য তারকা। আরো দেখতে পাই চাঁদ ও সূর্য। সুর্যের আলোতে দিন হয়। সূর্য অস্তমিত হলে চাঁদের দেখা পাই। চাঁদের আলো দুনিয়া করে মৃদু আলোকিত। এই পৃথিবীতে আছে পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল, নদী-নালা আরো কত কি? অসংখ্য প্রাণির দেখা মেলে পৃথিবীর মাঝে। এসব প্রাণি দেখে সত্যিই আমরা অবাক হই। আরো অনেক প্রাণি আছে যা আমাদের দেখার বাইরে। কত সুন্দর পরিবেশের মাঝে আমরা দেদারছে করছি বসত সুখের সাথে। সময় শেষ হলে চলে যাব মাটির কবরে। তারপর কি হবে আমাদের? তাতো বিস্তারিত সবই আছে আমাদের পবিত্র গ্রন্থ আল-কোরআনে। আল কোরআন হলো প্রবল পরাক্রান্ত মহাশক্তিশালী আল্লাহর বাণী। সুন্নাহ হলো আল্লাহ প্রেরিত হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বাণী। বিদায় হজের ভাষণে আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, যারা দুটি বিষয়কে আঁকড়ে ধরে রাখবে তারা হবে না কখনো পথ ভ্রান্ত। ওই দুটি জিনিস হলো আল কোরআন ও হাদিস। আসুনÑ আমরা আল কোরআন ও হাদিস আঁকড়ে ধরে রাখি। আর আঁকড়ে ধরে রাখা মানে কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী আমাদের জীবনটাকে পরিচালিত করা। এই পৃথিবীতে আমাদের আগমন হয়েছে পিতা-মাতা থেকে। আমরা যেভাবে আগমন করেছি, তেমনিভাবে আমাদের পিতা-মাতাও আগমন করেছেন। আমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ।
আমরা চারদিকে চোখ বুলালে ¯্রষ্টার অস্তিত্ব সহজেই অনুমান করতে পারি। এই পৃথিবীতে আছে অনেক প্রাণি, আছে উদ্ভিদ, আছে নদী-নালা, আছে বন-জঙ্গল ও পাহাড়-পর্বত। এসব এমনিতেই সৃষ্টি হয়নি। এসব সৃষ্টি করেছেন মহান আল্লাহতায়ালা। যদি গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করি তাহলে আল্লাহর পরিচয় পেয়ে যাই। আমাদের আত্মা আছে। এই আত্মা এমনিতেই সৃষ্টি সম্ভব নয়। এই আত্মার উপরে আছে পরমাত্মা। এই পরমাত্মাই হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা। নাস্তিকরা আল্লাহকে বিশ্বাস করতে চায় না। বিশ্বাস যদি না-ই করে তাহলে নিজের অস্তিত্বকে অস্বীকার করতে হবে। শরীরের মাঝে যে আত্মা আছে সেই আত্মা কোথা থেকে এলো তা নিয়ে বাস্তবতার নিরিখে ভাবতে হবে। মানুষের দেহে এমন একটি অদৃশ্য জিনিস আছে যা চিরন্তন। যদি একটি মানুষকে আগুনে পোড়ানো হয় তাহলে ঐ জিনিসটি ছাড়া সব পুড়ে যাবে। ঐ জিনিসটিই হচ্ছে আত্মা। এই আত্মা কখনো নষ্ট হবে না, কখনো আগুনেও পুড়ে ছাই হয়ে যাবে না। ঐ জিনিসটি থেকে পুরোপুরি আবার মানুষে পরিণত হবে। আর তা করবেন একমাত্র সৃষ্টিকর্তা। নবী হযরত ইব্রাহিম (আ.) দেখতে চেয়েছেন কিভাবে আল্লাহ মানুষকে আবার জীবিত করবেন। যদিও হযরত ইব্রাহিম (আ.) মানুষদের আবার পুনরুজ্জীবিত করবেন তা বিশ্বাস করেন আন্তরিকভাবে। তবে তিনি দেখতে চান প্রাণিকে কিভাবে আবার জীবিত করা হবে। সুরা বাক্কারার ২৬০নং আয়াতে আছে, আরো যখন ইব্রাহিম বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে দেখাও কিভাবে তুমি মৃতকে জীবিত কর।’ তিনি বললেন, ‘তুমি কি এ বিশ্বাস কর না? সে বলল, ‘নিশ্চই করি, তবে কেবল এ আমার মনকে বুঝ দেয়ার জন্য। তিনি বললেন, ‘তবে চারটা পাখি ধরে ওদেরকে বশ করো। তারপর ওদের একেক অংশ পাহাড়ে রেখে আসো। তারপর ওগুলোকে ডাক দাও। ওগুলো দৌড়ে তোমার কাছে আসবে। জেনে রাখো যে, আল্লাহ প্রবল পরাক্রমশালী তত্ত্বজ্ঞানী।’ কাজেই মানুষের পুনরুত্থান হবে এবং বিচার হবে তা বিশ্বাস অবশ্যই করতে হবে। মোট কথা শতভাগ বিশ্বাস রাখা বাঞ্ছনীয়। এই পৃথিবীতে অজর বলতে নেই কিছু। এই পৃথিবীকে যে বলবে জর তাকে যদি জর বলি তবে সে মানবে না। সে বলবে আমার প্রাণ আছে, আমি খাদ্য খাই, আমার শক্তি আছে। আমি জর পদার্থ নই। আল্লাহ অজর থেকে জরে পরিণত করতে পারেন। মানুষ মেধা বলে অনেক কিছু সৃষ্টি করেছে। আজ এমন এক অবস্থায় উপনীত হয়েছে যে, বিজ্ঞানের আশীর্বাদে জাতি হয়েছে ধন্য।
অনেক কিছুই সৃষ্টি করেছে বিজ্ঞানের আশীর্বাদে। কাজেই গভীরভাবে ভাবতে থাকুন আল্লাহর অস্তিত্ব¡ সম্পর্কে পরিচয় পেয়ে যাবেন অনায়াসে। থাকতে হবে না আর নাস্তিকতার ভিড়ে। আপনি আস্তিকে পরিণত হবেন। আত্মা আছে বলেই এই পৃথিবীতে দাপটের সাথে বসবাস করছি। শক্তি আছে বলে বিভিন্ন জিনিস সৃষ্টি করতে পারছি। একটি বৃহৎ শহরকে বোমার আঘাতে ধ্বংস করে দিতে পারি আবার মেরামত করতে পারি ঘরবাড়ি। আমারা যখন মরে যাব, আত্মা থাকবে। এই আত্মা থেকে আবার আল্লাহ সৃষ্টি করবেন যেমনি ছিলাম তেমনি। কাজেই যারা নাস্তিকের মধ্যে এখনো আছেন তাদেরকে বলছি, আপনারা অতি সত্ব¡র আস্তিকে পরিণত হোন। কোরআন ও হাদিস মানুন। আল্লাহর প্রিয় বান্দায় পরিণত হতে আপ্রাণ চেষ্টা চালান। এই ক্ষণিক পৃথিবীতে মাত্র অল্পসময় জীবিত থাকবেন তারপর চলে যেতে হবে অন্য এক দুনিয়ায়। ওই দুনিয়ায় যাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারেন চেষ্টা চালান জীবিত থাকতে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।