মটর সাইকেল: নিউ নরমাল পরিস্থিতিতে (নতুন বাস্তবতায়)
মটরসাইকেল নিরাপদ, অধিক সুবিধাজনক, খরচ এবং সময় বাঁচায়। গণপরিবহনে একে অন্যের গা ঘেঁষে চলাচলে প্রতিদিন
মোহাম্মদ ইয়ামিন খান : নানান দেশের নানান ভাষা, বিনে স্বদেশী ভাষা, পুরে কি আশা’ রামনিধি গুপ্তের এই কবিতাংশ কেবল আমাদের নয়, বিশ্বের প্রতিটি মাতৃভাষাভাষী মানুষের কাছেই ধ্রুব সত্য। নিজেদের ভাষায় কথার পাশাপাশি প্রচলিত আর দাপ্তরিক ভাষাতেও আমরা কথা বলি, বিভিন্ন কাজ করি। ২০০৯ সালের হিসাবমতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামার ইনস্টিটিউট অব লিঙ্গুইস্টিকসের ভাষ্য মতে, পৃথিবীতে এখন ভাষার সংখ্যা ছয় হাজার ৯০৯টি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ভাষাগুলোর মধ্যে আমাদের মাতৃভাষা বাংলা অন্যরকম। কোনো ভাষার জন্য তো আর কোথাও জীবন দেয়নি কেউ, ভাষার দাবিতে তো মরণপণ সংগ্রাম আর কোথাও হয়নি। তাই, আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা, প্রিয় বাংলাভাষাকে নিয়ে আমাদের ভালোবাসা ও গর্ব অনেক বেশি।
আজ থেকে ৬৫ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলাকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে সমগ্র বাঙালি জাতিকে ঐক্যের নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ করেছিল। কারণ প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসারে অনৈক্যের উপর ঐক্য সবসময়ে বিজয় লাভ করে। ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কারণেই সেদিন মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছিল। জাতি আজো ভাষার জন্য আত্মদানকারীদের ভুলতে পারেনি। আজ এত বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা ও সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে বারবার। চারিদিকে আজ পশ্চিমা এবং হিন্দি ভাষার আগ্রাসনের ছড়াছড়ি। বিশেষ করে আমাদের দেশের নারীদেরকে আকৃষ্ট করছে ভারতীয় হিন্দি সিরিয়ালগুলো। তরুণ সমাজও পশ্চিমা অশ্লীল সংস্কৃতিতে হাবুডুবু খাচ্ছে।
যে রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে বাংলা ভাষার ব্যবহার করার কথা ছিল সেখানে আজ সিংহভাগ ব্যবহার করা হচ্ছে ইংরেজি ভাষা। সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ এবং বিচারিক কাজে বাংলা ভাষার ব্যবহার করার কথা বললেও এখনো ব্যবহার করা হচ্ছে ইংরেজি ভাষা। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাকে উপেক্ষা করে ইংরেজিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এমনকি বাংলাকে ইংরেজি এবং হিন্দির সাথে মিশিয়ে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আজ রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন সাইনবোর্ডগুলো লেখা হয় ইংরেজিতে, আবার বিয়ে ও জন্মদিনের কার্ডগুলো আজ বাংলার পরিবর্তে ইংরেজিতে লেখা হয়। বানানের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত প্রমিত বাংলা নিয়ম একেবারেই কম ব্যবহার করা হয়।
যে মাতৃভাষা বাংলাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে গিয়ে এ জাতির বীর সন্তানেরা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছিল সে মাতৃভাষা বাংলাকে এইভাবে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল করা মেনে নেওয়া যায় না। আর আমাদের দেশে ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ঐক্যহীনতার কারণে মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে। আমরা ১৬ কোটি বাঙালি যদি সকল অনৈক্য আর বিভেদ ভুলে আল্লাহর তওহীদের পক্ষে, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ইস্পাতকঠিন ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী জাতি থাকতাম তাহলে আমাদের মাতৃভাষাকে কেউ তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল করতে পারতো না। তাই আসুন, বাংলা ভাষাকে সর্বস্তরে ব্যবহার এবং প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সবাই মিলে এক সাথে বলি ‘একজাতি একদেশ ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ’।
ষ লেখক : ২নং, হাবেলী গোপালপুর, ফরিদপুর থেকে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।