পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ বিডিআর (তৎকালীন) বিদ্রোহের অর্থাৎ পিলখানা ট্র্যাজেডির সাত বছর পূর্ণ হলো। বিগত ২০০৯ সালের এই দিনে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসÑবিডিআরের (বর্তমানে বিজিবিÑবর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) বিপথগামী সদস্যরা বিদ্রোহ করে। এ সময় তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বিজিবির সদর দফতর পিলখানায় সেদিন বিপথগামী বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যদের হাতে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদও নিহত হন। বিদ্রোহীদের হাত থেকে রেহাই পায়নি মহাপরিচালকের স্ত্রী, বাসার কাজের মেয়ে ও বেড়াতে আসা আত্মীয়রাও।
নির্মম এ হত্যাকা-ে জড়িত অভিযুক্ত ১৫২ জনকে ফাঁসির রায় দেয়া হলেও সেটি এখনো কার্যকর হয়নি। ডেথ রেফারেন্সের শুনানি এখনো চলছে হাইকোর্টে। এছাড়া অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলাগুলো এখনো চলছে বিশেষ আদালতে। এ অবস্থায় নিহতদের স্বজনরা দ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।
বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, বিভীষিকাময় ওই ঘটনার পরে বর্তমানে বাহিনীতে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে। বিজিবি এখন জনগণের আস্থার পর্যায়ে রয়েছে, কারণ দেশের যেকোনো প্রয়োজনে বা বিভিন্ন গোলযোগে আস্থাশীল বাহিনী হিসেবে বিজিবিকে ডাকা হয়। আমি মনে করি বিজিবি এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বাহিনীতে রিফর্ম হয়েছে, ২০০৯ সালে যে জঘন্য হত্যাকা- ঘটানো হয়েছিল, তার যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকটি মাথায় রেখেই বিজিবি পরিচালিত হচ্ছে। বিজিবি এখন সুশৃঙ্খল একটি বাহিনী। বিজিবির প্রতিটি স্তরেই কঠোর শৃঙ্খলা ও মনিটরিং বজায় রাখা হচ্ছে।
বিজিবি প্রধান আজিজ আহমেদ আরো বলেন, পিলখানা হত্যাকা-ের মামলা অনেক বড়। তাই পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে একটু সময় লাগছে। তারপরও খুব দ্রুততার সঙ্গে মামলা শেষ করার কাজ চলছে। ফাঁসির দ-প্রাপ্ত ১৫২ জনের ডেথ রেফারেন্সের শুনানির জন্য হাইকোর্টে বিশেষ বেঞ্চ গঠন হয়েছে। প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার চেষ্টা চলছে।
বিজিবি জানিয়েছে, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় অভিযুক্তসহ ১৭ হাজার ৩১১ (বিডিআর সদস্য ও বেসামরিক ব্যক্তি) জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। তাদের মধ্যে ৬ হাজার ৪১ জনকে বিশেষ আদালত ও ১১ হাজার ২৬৫ জনকে অধিনায়ক সামারি কোর্টের মাধ্যমে বিচার করা হয়। আসামিদের মধ্যে ৯ হাজার ১৯ জনকে বিভিন্ন সাজাসহ চাকরিচ্যুত করা হয়। বাকি ৮২৮৭ জন সরাসরি বিদ্রোহে সম্পৃক্ত না থাকায় তাদের লঘু দ- (তীব্র ভর্ৎসনা, বেতন কর্তন, ডিমোশন ইত্যাদি) দিয়ে চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে। আর হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ৮৫০ জনের ১৫২ জনকে ফাঁসি, ২৬০ জনকে যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। এছাড়া ২০ জন আসামি পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামিদের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে জানিয়েছেন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এর মধ্যে ফাঁসির দ-প্রাপ্ত ডিএডি রহিম কারাগারে মারা গেছেন।
সূত্র জানায়, বর্তমানে বিশেষ বেসামরিক আদালতে বিস্ফোরক মামলা চলমান রয়েছে। এ মামলায় আসামি সংখ্যা ৮৩৪ জন।
বিজিবি সূত্র আরও জানায়, ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিজিবির জনবল ছিল ৪৪ হাজার। ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার। গঠন করা হয়েছে ৪টি রিজিয়নাল হেডকোয়ার্টার্স ও ৪টি সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স। আগে বিজিবি সদস্যদের সন্তানদের ২২ বছর পর্যন্ত রেশন সুবিধা দেয়া হতো। এখন যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ বছরে। এছাড়া প্রতিবন্ধী সন্তানদের চাকরির মেয়াদের পুরো সময় রেশন সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
বিজিবির কর্মসূচি : বিজিবি সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহসিন রেজা জানান, পিলখানায় সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকা-ে শহীদ ব্যক্তিবর্গের স্মরণে শাহাদাত বার্ষিকী পালিত হবে। দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী শহীদ ব্যক্তিবর্গের রুহের মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে পিলখানাসহ বিজিবির সকল রিজিয়ন, সেক্টর, প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় বাদ ফজর খতমে কোরআন এবং বিজিবির সকল মসজিদে এবং বিওপি পর্যায়ে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় আজ সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধানগণ (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে)।
এছাড়া শুক্রবার বাদ আসর বিকেল পৌনে ৫টায় পিলখানাস্থ বীর উত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে শহীদ ব্যক্তিবর্গের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক, শহীদ ব্যক্তিবর্গের নিকটাত্মীয়গণ, পিলখানায় কর্মরত সকল অফিসার, জেসিও, অন্যান্য পদবির সৈনিক এবং বেসামরিক কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।