Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুন্সীগঞ্জে দীঘিরপাড়ে চর দখলের মহোৎসব

প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : চলছে পদ্মার চর দখলের মহোৎসব। নদীর পাড় ঘেঁষে চর দখল করে তৈরী করা হচ্ছে বসতবাড়ি, দোকান ও হাটবাজার। মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি থানার দীঘিরপাড় বাজারে গিয়ে দেখা গেছে এ দখলদারিত্বের চিত্র। পদ্মার শাখা নদী দেখতে গেলে যে কারো চোখে পড়বে এই দখলদারিত্বের দৃশ্য। স্থানীয় অধিবাসীরা জানালেন, প্রভাবশালীরা প্রকাশ্যে নদীর জমি দখল করে সেখানে বসতঘর, দোকান ও বাজার তৈরী করলেও বাধা দেয়ার কেউ নেই। এমনকি প্রশাসনও সব জেনে শুনে নীরব। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যার নেতৃত্বে দীঘিরপাড়ে এই দখলদারিত্ব সমানে চলছে তিনি স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা। সরকারী দলের ওই নেতার নিজে ও তার ছেলে মিলে দখলের রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। স্থানীয়রা জানায়, ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পদ্মার করাল গ্রাসে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী ও লৌহজং উপজেলার অনেক গ্রামই হারিয়ে যায়। এই দুই উপজেলায় পদ্মা নদীর ব্যপক ভাঙ্গনে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে পড়েন। কয়েক বছরের মধ্যে নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়া জমিগুলো আবার জেগে উঠতে শুরু করে। পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত অনেকেই আশা করেছিলেন হারিয়ে যাওয়া সেই সব জমি তারা আবার ফিরে পাবেন। এ দাবিতে তারা সরকারের কাছে আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু যেখানেই চর জাগে সেখানেই থাবা দেয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা। তারা পৈত্রিক সম্পত্তিহারা নিঃস্ব মানুষদেরকে জেগে ওঠা চরের ধারে কাছেই ভিড়তে দেয় না। দীঘিরপাড় বাজারও এর ব্যতিক্রম নয়। স্থানীয়রা জানালেন, একটি সংঘবদ্ধচক্র দীঘিরপাড়ে নদীর জায়গা-জমি দখল করে বসতবাড়ি, দোকান ও বাজার তৈরী করছে। এদের রয়েছে ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী। অস্ত্র বেচাকেনা থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসা, নদীতে ডাকাতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে এই চক্রের বিরুদ্ধে। প্রশাসনকে থোরাই কেয়ার করে এরা দিনের পর দিন নিজেদের প্রভাব বিস্তারের জন্য একের পর এক অপকর্ম করেই যাচ্ছে। নদীর চর দখলকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত ঘটছে মামলা, হামলার ঘটনা। গত ২৮ জানুয়ারী চরের জমি নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা জগলুল হালদার ভুতুর বিরুদ্ধে মুুন্সীগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা (নং ১৭/১৬) হয়েছে। মামলার বাদী দীঘিরপাড় মূলচর গ্রামের আবুল কাশেম খান। স্থানীয়দের অভিযোগ, আবুল কাশেম খান ছাড়াও অনেক ভুক্তভোগী রয়েছেন। তারা প্রভাবশালী ভুতুর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খোলার সাহস করেন না। ভুতু ছাড়াও এই এলাকায় দখলদারিত্বসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে মহিউদ্দিন, রাসেল, নুরু, নজির, অনীক, মুরাদ, দিদারসহ অনেকেই। স্থানীয়রা জানান, আসছে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রভাবশালীরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে প্রভাবশালী চক্রটি। এদিকে, চর বা নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়া জমি নিজেরে নামে দলিল করে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা। লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে এ কাজে তাদেরকে সহযোগীতা করছে সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কতিপয় দুর্নীতিবাজ জরিপ কর্মকর্তারা। তারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে আঁতাত করে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে জরিপে দখলদারী দেখিয়ে অন্যের জমি প্রভাবশালীদের পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুন্সীগঞ্জে দীঘিরপাড়ে চর দখলের মহোৎসব
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ