পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ফেইসবুক সিইও মার্ক জুকারবার্গ মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত এপল’র পাশে দাঁড়ালেন। মার্কিন সরকার আইফোন নির্মাতা এপলের প্রযুক্তির গোপনীয়তায় প্রবেশ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ‘পেছনের দরজা দিয়ে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করাকে আমি সঠিক পথ বলে মনে করিনা। এই কারণে আমরা এপল’র সিইও টিম কুকের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করছি। নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, জুকারবার্গ সোমবার স্পেনের বার্সিলোনায় ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসে একথা বলেন।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সৈয়দ রিজওয়ান ফারুকের মালিকানাধীন একটি আইফোনের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যাতে ঢুকতে পারে সেজন্য সহায়তা চেয়ে তারা আদালতে গেছে। গত ডিসেম্বরে ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান বার্নারডিনোতে কয়েকজনের মধ্যে অন্যতম গুলিবর্ষণকারী ছিলেন রিজওয়ান। সেই নির্বিচার গুলিবর্ষণে ১৪ জন নিহত ও ২২ জন আহত হয়।
মার্কিন বিচার বিভাগের অনুরোধে সম্প্রতি এক ফেডারেল ম্যাজিস্ট্রেসির বিচারক আইফোন ফাইভ- সি’র নিরাপত্তা প্রযুক্তি হস্তান্তর করার জন্য এপল কোম্পানিকে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু এপল কর্তৃপক্ষ আদালতের এই নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানায় এই যুক্তিতে যে তার প্রযুক্তির গোপনীয়তায় প্রবেশ করতে তাদেরকে দিয়ে জোর করে তথাকথিত একটি পেছনের দরজা খোলানো যাবে না।
গত মঙ্গলবার এপল সিইও টিম কুক একটি চিঠিতে লিখেছেন, ‘মার্কিন সরকারের যে বাড়াবাড়ি দেখছি আমরা মনে করি তার মোকাবেলায় আমাদের অবশ্যই কথা বলতে হবে।’ ফেইসবুক সিইও জুকারবার্গ বলেন, আমরা এই ক্ষেত্রে এপলের প্রতি সহানুভূতিশীল। আমরা প্রযুক্তির গোপনীয়তায় বিশ্বাসী।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, এপল কোম্পানি সোমবার মার্কিন বিচার বিভাগের এই অনুরোধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। তারা এর পরিবর্তে আইন প্রয়োগের প্রভাব, জাতীয় নিরাপত্তা, ব্যাক্তি গোপনীয়তা রক্ষা ও ব্যক্তি স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনার জন্য একটি কমিশন গঠন বা গোয়েন্দা ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও নাগরিক স্বাধীনতা সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি প্যানেল গঠনের পরামর্শ দিয়েছে।
কোম্পানিটি সোমবার তার কাস্টমার পেজে একটি ম্যাসেজও পোস্ট করেছে, তাতে তারা সরকারের অনুরোধকে কেন বিপজ্জনক মনে করছে তারও ব্যাখ্যা দিয়েছে। এপল বলছে, সরকার তার ব্যবহারের জন্য একটি সম্পূর্ণ নতুন অপারেটিং সিস্টেমের জন্য আমাদের কাছে লিখতে পারতো এবং এটা একটি আইফোন আনলক করাকে সহজ করতে পারে। তার বদলে আইফোন আনলক করতে পাশবিক শক্তিতে চেষ্টা করা হচ্ছে। একটি আধুনিক কম্পিউটারের গতির সঙ্গে হাজার হাজার বা লাখ লাখ সমন্বয় রয়েছে। এই অবস্থায় সরকারী আদেশে জোর করে পেছনের দরজা খোলার চেষ্টা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের পণ্যকে দুর্বল করে তুলবে। এই আদেশ একটি আইনগত নজির স্থাপন করবে যা সরকারের ক্ষমতাকে সম্প্রসারিত করবে এবং আমরা জানিনা এটা আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে।
প্রযুক্তি জগতের অন্যান্য নেতাও এপলের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। গত বুধবার গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই এক সিরিজ টুইটে তার প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পাটির প্রতি সমর্থন জানান। গুগল প্রধান বলেন, আপনার তথ্য সুরক্ষিত রাখতে আমরা নিরাপদ পণ্য তৈরি করি এবং বৈধ আইনী আদেশের ভিত্তিতে আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ডাটায় প্রবেশাধিকার দেই। তবে এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। কাস্টমারের ডিভাইস ও ডাটা হ্যাকিংয়ে প্রয়োজনীয় কোম্পানির সক্ষমতা চাওয়ায় এটা সম্পূর্ণএকটি ভিন্ন ব্যাপার। এবং এটা একটি বিপদজনক নজির সৃষ্টি করতে পারে।
রিফর্ম গভর্নমেন্ট সার্ভিলেন্স কোয়ালিশনের অংশ হিসেবে এই লড়াইয়ে মাইক্রোসফটও যোগ দিয়েছে। এই কোয়ালিশনে ফেইসবুক, ইয়াহু, ড্রপবক্স ও লিংকডিনের মতো আইটি হেভিওয়েটরা রয়েছে। তারা এই পদক্ষেপ এবং ব্যক্তির উপর নজরদারী করা ও তাদের তথ্যে প্রবেশ সংশ্লিষ্ট সরকারী আইন পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে।
অবশ্য সোমবার পিউ রিসার্চ সেন্টারের প্রকাশিত এক জরিপ অনুযায়ী আমেরিকার জনগনের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ দৃশ্যতঃ বিচার বিভাগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। জনমতের ৫১ শতাংশের কিছু বেশী অংশ বলছে, এপল’র উচিত আইফোন আনলক করতে এফবিআইকে সাহায্য করা। এর বিরোধীতাকারী ৩৮ শতাংশ বলছে এটা করা উচিত নয়। ফোনের মাধ্যমে ১ হাজার ২ জন পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির এই জনমত জরিপ চালানো হয়।
মঙ্গলবার ‘ফাইট ফর দ্য ফিউচার’ নামের নাগরিকদের একটি এডভোকেসি গ্রুুপ হংকং থেকে লন্ডন ও নিউইয়র্ক পর্যন্ত বিশ্বের ত্রিশটিরও বেশী দেশে এপল স্টোরের বাইরে মার্কিন আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে সমাবেশের আয়োজন করছে। নিউজ উইক জানিয়েছে, ফাইট ফর দ্য ফিউচারের ক্যাম্পেইন ডিরেক্টর ইভান গ্রীর বলেছেন, এডওয়ার্ড ¯েœাডেনের তথ্য প্রকাশ থেকে শুরু করে প্রযুুক্তি, গণতন্ত্র ও বাক স্বাথীনতার ভবিষ্যতকে কেন্দ্র করে এই লড়াইয়ে এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্ত।
এটা সরকারের ক্ষমতা বৃদ্ধিরই একটি পরিষ্কার চেষ্টা। এফবিআই অনেক বছর ধরেই এই নজির স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে আসছে এবং এটা খুবই লজ্জাস্কর ব্যাপার যে তারা এখন তাদের সেই এজেন্ডা বাস্তবায়নে স্যান বার্ণারডিনোর ট্রাজেডিকে কাজে লাগাচ্ছে। তাদের এই পদক্ষেপ আমাদের অধিকতর নিরাপদ করবে না বরং এটা বিভিন্ন ধরণের হামলায় আমাদের আরো ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে যদিও সরকার দাবী করছে যে তারা নাগরিকদের উপর হামলা রোধেরই চেষ্টা করছে। সূত্র : রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।