পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রফিকুল ইসলাম সেলিম : বন্দরনগরীর রাহাত্তারপুলের ব্যাংক কর্মকর্তা রুমা আক্তার ভোররাত ৩টায় চুলায় রান্না বসান। অর্ধেক রান্না হতেই চুলা নিভে যায়। রাতভর অপেক্ষার পর ভোরে চুলা কিছুটা জ্বলতে শুরু করে। সকালের আগেই দপ করে নিভে যায় চুলার আগুন। গত এক সপ্তাহ ধরে এ অবস্থা চলছে।
এনায়েত বাজারের বাসিন্দা মীরা ঘোষ তিন দিন গ্যাসের জন্য অপেক্ষার পর বাজার থেকে বৈদ্যুতিক চুলা (হিটার) কিনে নিয়ে আসেন। কোনোমতে নিত্যপ্রয়োজনীয় রান্নার কাজ সারছেন তিনি। মহানগরীর প্রায় প্রতিটি এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে গ্যাসের জন্য চলছে তীব্র হাহাকার। রান্নার চুলা জ্বলছে না, ঘরে ঘরে দুর্যোগ পরিস্থিতি। রান্নাবান্না বন্ধ হওয়ার জোগাড়। হোটেল-রেস্তোরাঁতেও একই অবস্থা।
গ্যাসের অভাবে মহানগরীর প্রতিটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে যানবাহনের দীর্ঘলাইন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে থেকেও গ্যাস মিলছে না। গ্যাসের অভাবে অলস বয়ে আছে গণ-পরিবহনসহ গ্যাসচালিত অসংখ্য যানবাহন। সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকেরা। গ্যাস সংকটে কলকারখানায় উৎপাদনেও ধস নেমেছে। বন্ধ রয়েছে কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ ছোট-বড় অসংখ্য কারখানা। গত কয়েকদিন ধরে নগরীতে গ্যাস সংকট তীব্র হতে শুরু করে। বিশেষ করে আবাসিক গ্রাহকরা গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছেন না। নগরীর বেশির ভাগ এলাকায় রান্নার চুলা জ্বলছে না। সারা দিন গ্যাস নেই, গভীররাত কিংবা শেষ রাতে গ্যাস আসলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হচ্ছে না। এতে করে রান্নাবান্না বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মহানগরীর এনায়েত বাজার, কদমতলী, মাদারবাড়ি, বাকলিয়া, চকবাজার, ডিসি রোড, জামাল খান, আসকারদীঘির পাড়, নন্দনকানন, টাইগার পাস, লালখান বাজার, আমবাগান, পাহাড়তলী, আগ্রাবাদ, হালিশহর থেকে শুরু করে অনেক এলাকায় গ্যাস সংকটে দুর্ভোগের মুখে পড়েছে নগরবাসী।
ঝাউতলার বাসিন্দা সালেহা খাতুন জানান, গত কয়েকদিন ধরে চুলা জ্বলছে না। সারা দিন বাসায় গ্যাস থাকে না। গভীর রাতে গ্যাস আসলেও চুলা জ্বলে মিট মিট করে। এত অল্প আঁচে রান্না হয় না। রাইস কুকারে কোনো রকমে ভাত রান্না করা গেলেও তরকারি রান্না করা নিয়ে সংকটে পড়েছেন গৃহিণীরা। তিনি বলেন, এর আগে গ্যাস সংকট দেখা দিলেও তা এত তীব্র ছিল না।
নগরীর কয়েকটি এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্যাসের অভাবে রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিকল্প হিসেবে ইলেকট্রিক চুলা কেনার হিড়িক পড়েছে। কেউ আবার রান্নাঘর, বারান্দা কিংবা বাড়ির ছাদে মাটির চুলায় কাঠখড়ি দিয়ে রান্নাবান্না সারছেন। গ্যাস সংকটের অজুহাতে গ্যাস সিলিন্ডারের দামও বেড়ে গেছে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ডিলাররা গলাকাটা দামে সিলিন্ডার বিক্রি করছে।
গতকাল নগরীর কয়েকটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন ঘুরে শত শত যানবাহনের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। নগরীর ষোলশহরে ফসিল সিএনজি ফিলিং স্টেশনকে ঘিরে গ্যাসের অপেক্ষায় যানবাহনের লাইন দেড় থেকে দুই কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়। কদমতলী মোড়ের অপর একটি ফিলিং স্টেশনকে ঘিরে যানবাহনের লাইন টাইগার পাস থেকে শুরু হয়ে সিআরবি সাত রাস্তার মোড় হয়ে এম.এ আজিজ স্টেডিয়াম পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভোররাত থেকে অনেকে গ্যাসের জন্য লাইন ধরেছে। ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা লাইনে থেকেও তারা গ্যাস পাচ্ছে না।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মার্কেটিং সুধীর কুমার সাহা ইনকিলাবকে বলেন, জাতীয় গ্রিড থেকে গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় চাপ কমে গেছে। এ কারণে বন্দর নগরীসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাসের সংকট চলছে। কয়েকদিন আগেও চট্টগ্রামে ২৭০ থেকে ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ পাওয়া গেছে। এখন তা ২৩০ মিলিয়ন ঘনফুটের নিচে নেমে এসেছে। তিনি জানান, গতকাল দুপুরের পর ২৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ পাওয়া যায়। সকালে সরবরাহ ছিল আরও কম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।