Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুুঁজিবাজারে ২৩ শতাংশ লেনদেন নিয়ে শীর্ষে ব্যাংকখাত

| প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সাপ্তাহিক ব্যবধানে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া ৫ কার্যদিবসের দুইদিন মূল্য সংশোধন হলেও তিন কার্যদিবসই বেড়েছে সূচক। এরই ধারাবাহিকতায় সূচক বাড়লেও গড় লেনদেন কিছুটা কমেছে। আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর লেনদেন কমেছে ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহের খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করছে ব্যাংক খাত। সপ্তাহ শেষে ওই খাত ২৩ শতাংশ লেনদেন করে তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে। গত সপ্তাহে ব্যাংক খাতে প্রতিদিন ৩৮৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
প্রকৌশল খাতে ১২ শতাংশ লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এই খাতে প্রতিদিন ২০৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ওষুধ ও রসায়ন খাত ১১ শতাংশ লেনদেন করে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এই খাতে প্রতিদিন ১৯৪ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বস্ত্র খাতে ১০ শতাংশ লেনদেন করে তালিকার পরের স্থানে রয়েছে। এই খাতে প্রতিদিন ১৬৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেও ১০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এই খাতে প্রতিদিন ১৭৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এছাড়াও, আর্থিক খাতে নয় শতাংশ, বিবিধ খাতে পাঁচ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, সেবা-আবাসন ও সিমেন্ট খাতে তিন শতাংশ, আইটি, সাধারণ বিমা, সিরামিক ও ভ্রমণ-অবকাশ খাতে ২ শতাংশ করে লেনদেন হয়েছে। টেলিকমিউনিকেশন, ট্যানারি ও জীবন বিমা খাতে ১ শতাংশ করে লেনদেন হয়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসই ব্রড ইনডেক্স বা ডিএসইএক্স সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। কমিশনের আইনি সংস্কারের পাশাপাশি বিগত কয়েক বছরের বাজারের মন্দাভাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অধৈর্য হয়ে শেয়ার বিক্রি করেছেন। আর অল্প অল্প করে কিছুসংখ্যক সম্ভাবনাময় বিনিয়োগকারী তা কিনে নেন। একপর্যায়ে এসে বাজারে আতঙ্কিত বিক্রির চাপ একেবারে কমে যায়। এ সময়ের মধ্যে ব্যাংকে আমানতের সুদ হারও কমে গেছে। এতে করে কিছু কিছু অর্থ শেয়ারবাজারে আসতে থাকে। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবেশেও এক ধরনের স্থিতিশীলতা আসে।
সাপ্তাহিক ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসই ব্রড ইনডেক্স বা ডিএসইএক্স সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ বা ৮৪ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই৩০ সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ বা ৫৪ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট। অপরদিকে, শরীয়াহ বেড়েছে ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ বা ১৬ দশমিক ৯৪ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫০টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৬৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টির।
আর লেনদেন হয়নি ১টি কোম্পানির শেয়ার। আর এসব কোম্পানির ওপর ভর করে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৮ হাজার ৬৫৭ কোটি ১৭ লাখ ৩১ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।
যা আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৮ হাজার ৯৭৮ কোটি ৬৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা। সে হিসেবে এ সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ৩২১ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা বা ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর দৈনিক গড় হিসাবে লেনদেন ১ হাজার ৭৯৫ কোটি ৭২ লাখ ৭০ হাজার ৩০৭ টাকা। যা আগের সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ৭৩১ কোটি ৪৩ লাখ ৪৬ হাজার ২৫১ টাকা।
মোট লেনদেনের ‘এ’ ক্যাটাগরির অবদান ৯৬ দশমিক ০৬ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ০ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ০৯ শতাংশ।
আর সপ্তাহশেষে ডিএসইর বাজার মূলধন ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়ে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ১১৬ কোটি ৬৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকায় অবস্থান করছে। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইরি বাজার মূলধন ২ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৬৬২ কোটি ৮৪ লাখ ৫৯ হাজার টাকায় অবস্থান করছিল।
গত সপ্তাহে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইসলামি ব্যাংকের শেয়ার। এ সময় কোম্পানির ২৭৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো’র লেনদেন হয়েছে ২৬৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকার, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। ২১৬ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বারাকা পাওয়ার। লেনদেনে এরপর রয়েছে যথাক্রমে- লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, সিটি ব্যাংক, ইফাদ অটোস, সাইফ পাওয়ারটেক, ন্যাশনাল ব্যাংক, সামিট পাওয়ার ও লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাপ্তাহিক লেনদেনে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বেড়েছে ২ দশমিক ০৪ শতাংশ। বর্তমানে ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৬ পয়েন্টে। যা গত সপ্তাহের শুরুতে ছিল ১৫ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট। অর্থাৎ পিই বেড়েছে ০ দশমিক ৩২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ০৪ শতাংশ।
বর্তমানে খাতভিত্তিক হিসাবে ব্যাংকিং খাতের পিই অবস্থান করছে ১১ দশমিক ৮১ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতে ৩৬ দশমিক ১৮, সিরামিকস খাতে ২৮ দশমিক ৬০, প্রকৌশল খাতে ২০ দশমিক ৯৪, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ২৫ দশমিক ০১, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ২৩ দশমিক ৪১, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ১২ দশমিক ৯০, বীমা খাতে ২১ দশমিক ৯২, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৩৮ দশমিক ২১, বিবিধ খাতে ২৭ দশমিক ৭৬, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১৮ দশমিক ০৪, সেবা ও আবাসন খাতে ১৮ দশমিক ৫৬, ট্যানারি খাতে ১৭ দশমিক ১৬, টেলিযোগাযোগ খাতে ১৮ দশমিক ৭৬, বস্ত্র খাতে ১৬ দশমিক ০৫ এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাত ৩৮ দশমিক ২৯ পয়েন্টে রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুুঁজিবাজার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ