Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

গণতন্ত্র সুসংহত না হলে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার কথা না ভাবাই ভালো

প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৪ এএম, ২০ জানুয়ারি, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : সুপ্রিমকোর্ট-হাইকোট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি শরিফউদ্দিন চাকলাদার বলেছেন, আমেরিকান সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দিয়ে বলেছেন জনগণের জন্য, জনগণের দ্বারা, জনগণের সরকার। কিন্তু এখন আমাদের দেশে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা হচ্ছে সরকার জনবিচ্ছিন্ন, জনগণের ভোট কিনে, সরকার জনগণ থেকে দূরে। তিনি আরো বলেন, তৃতীয় বিশ্বে গণতন্ত্র ক্ষমতায় যাওয়ার এক ধরনের অস্ত্র। ক্ষমতায় গেলে যাহা বাহান্নো তাহা তেপ্পান্ন। স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার পূর্ব শর্ত গণতন্ত্র। গণতন্ত্র সুসংহত না হলে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার কথা চিন্তা না করাই ভালো। গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে শেষ কর্মদিবসে সুপ্রিমকোর্টের এনেক্স ভবনের ২৩ নং বিচারকক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিচারপতি চাকলাদার এসব কথা বলেন। অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনজীবী সমিতির এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিচারপিত শরিফউদ্দিন চাকলাদার বলেন, একাত্তর টিভির টকশোতে যেসব কথা বেঞ্চ এবং বারকে নিয়ে বলা হচ্ছে সেগুলো উচ্চ আদালতের ভাবমর্যাদা নষ্ট করা হচ্ছে। টকশো প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেলের সম্মান থাকলেও বিচারকদের সম্মান বলতে কিছু থাকছে না। বিচারপতি শরিফউদ্দিন চাকলাদার বলেন, ১/১১ এর পরের ঘটনা সবার জানা। ও সময়টা এক ধরেনের শাসন ছিল (ব্রুট ল) জংলি বলে। সে সময় ফৌজদারি বেঞ্চের দায়িত্ব পরলো আমার উপর। যে দিক দিয়েই জামিন দেই না আপিল বিভাগ গিয়ে স্থগিত। কিন্তু যে পথ জানে তার পথরুদ্ধ করবে কে ৫৬১ এ চলে গেলাম। যেটা হাইকোর্টের একক অধিকার। বর্তমানের প্রায় সকল রাজনৈতিক নেতা জামিন পেল। আবার পথ হল নির্বাচনের। যদি আপিল বিভাগের দিকে তাকিয়ে থাকতাম তবে কোর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মুক্ত আকাশে বিচরণ করতে পারতেন না। মুচলেকা দিয়ে কালো আইনের তাঁবেদার হয়ে বাঁচতে হতো। তাই একজন বিচারকের বুঝতে হবে কোনটি আইনের শাসন আর কোনটি শাসনের আইন। তিনি আরো বলেন, বিচার করা কঠিন সত্য। ন্যয় বিচারক আল্লাহর প্রতিচ্ছবি। তিনি বলেন, বিচার করাটা কঠিন এটা সত্য, তবে এটা এক ধরনের ইবাদত। ন্যায় বিচার করা তখনই সম্ভব। যখন বিচারক (রিটিগেশন) মামলাটি মাথায় নেয়। কিন্তু যখন বিচারক মামলার পেছনে কে দাঁড়িয়ে আছে তার প্রতি দৃষ্টি দেয় তখন ন্যায়বিচার করা সম্ভব নয়। ন্যায়বিচার আল্লাহর কণ্ঠস্বর। কোরআন শরীফে বলা আছে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার। অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, বিচারপতি চাকলাদার দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করে রায় ঘোষণা করেছেন। সেখানে অনেক বিচারপতি দুই থেকে তিন বছর রায় ঝুলিয়ে রেখেছেন সেখানে বিচারপতি চাকলাদার রায় দিয়ে সাথে সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে রায় ঘোষণা করেছেন, যাতে করে কেউ তার রায়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ হলে আপিল করতে পারে। আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা বিচারপতি চাকলাদারকে এখান থেকে বড় পরিসর আপিল বিভাগ থেকে বিদায় দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের এই আকাক্সক্ষা পূরণ হয়নি। আপিল বিভাগে চারজন বিচারপতির পদ খালি থাকা সত্ত্বেও রহস্যজনক কারণে জেষ্ঠ অভিজ্ঞ বিচারপতিদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। অনুষ্ঠানে প্রবীণ আইনবীদ ব্যারিস্টার রফিক উল হক, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ.জে মোহাম্মাদ আলী, সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সাবেক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদলসহ দুই শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গণতন্ত্র সুসংহত না হলে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার কথা না ভাবাই ভালো
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ