পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সর্বদলীয় ইসলামী শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আল্লাহ পৃথিবীতে শিরক তথা অংশীদারকে বিলুপ্ত করে একত্ববাদকে প্রতিষ্ঠার জন্য নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন। প্রত্যেক নবী ও রাসূল মূর্তির বিরুদ্ধে দাওয়াত দিয়েছেন এবং মূর্তি ধ্বংসে তাদের কার্যকরী ভূমিকা ছিল। শতকরা ৯৫ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে কোর্টের সামনে গ্রীক দেবীর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। এটা মুসলমানদের ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিরোধী। খিস্টানদের দেশ আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ফটকে সর্বশ্রেষ্ঠ আইন প্রণেতা হিসেবে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর নাম লেখা রয়েছে। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সামনেও আইন প্রণেতা হিসেবে কোনো মূর্তি নেই। পৃথিবীর কোনো মুসলিম দেশের সুপ্রিম কোর্টের সামনেও মূর্তির কোনো অবস্থান নেই। তাহলে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশ বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সামনে কেন গ্রীক নারীর মূর্তি থাকবে? বাম রাম ও নাস্তিকরা বাংলাদেশকে একটি পৌত্তলিক দেশ হিসেবে গড়তে মূর্তি স্থাপনের চক্রান্ত করছে। একই উদ্দেশ্যে তারা এদেশের শিক্ষা সিলেবাসে পৌত্তলিকতা সংযোজন করেছে। তাদের গভীর চক্রান্তে বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে আগামী প্রজন্মের জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে। এ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হলে মুসলমানদের অস্তিত্ব রক্ষা হবে না। শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বলেন, যে সংস্কৃতি মুসলমাদের একত্ববাদের পরিপন্থী তা মুসলমানদের প্রত্যাখ্যান করা বাধ্যতামূলক। না করলে আমাদের মুসলমানিত্ব থাকবে না। কারণ, ইসলাম হচ্ছে মূর্তি,
বাদ্যযন্ত্র ও ভাস্কর্য বিরোধী ধর্ম। তাই এসব চক্রান্ত প্রতিহত করতে ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দের ইসলামী জনতাকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ জিহাদের কর্মসূচী দেওয়া সময়ের দাবী।
সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে মূর্তি অপসারণ, শিক্ষা সিলেবাস ও অপসংস্কৃতি বন্ধের দাবীতে গতকাল বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ মজলিস মিলনায়তনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠকে সকল ইসলামী ও সমমনা দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। দলের আমীর প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবীবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের পরিচালনায় গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর মাওলানা ড. ঈসা শাহেদী, মাওলানা আব্দুল হামীদ পীর সাহেব মধুপুর, জামিআ মুহাম্মদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম, আন্তর্জাতিক তাহাফফুজে খতমে নবুওয়তের মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা এটি এম হেমায়েত উদ্দীন, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, নেজামে ইসলাম পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জিয়াউল হক মজুমদার, নয়াদিগন্তের সহ-সম্পাদক মাওলানা লিয়াকত আলী, জামিআ ওয়াহিদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা জোবায়ের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কোরবান আলী, মাওলানা জি এম মেহেরুল্লাহ, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা মুহসিনুল হাসান, সহপ্রচারও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূইয়া, নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ সাহাবুদ্দীন, হাফেজ শহীদুর রহমান, মাওলানা নিয়ামতুল্লাহ ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্দ আব্দুর রহীম সাঈদ, সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ রহমত আলী প্রমুখ। গোল টেবিল বৈঠকে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবীবুর রহমান বলেছেন, ইসলাম মেঠার জন্য আসেনি ইসলাম এসেছে থাকার জন্য। মুশরিকরা ইসলামকে মিটিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ ইসলামকে অন্য সকল ধর্মের উপর বিজয় করবেন। হযরত ইবরাহীম (আ.) দুআ করেছেন, হে আল্লাহ এ শহরকে নিরাপদ করুন এবং আমাকে ও আমার সন্তানকে মূর্তি পূজা থেকে রক্ষা কর। তিনি বলেন, অতীতে ইসলাম বিরোধীদের মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নেমে তাওহীদি জনতা বিজয়ী হয়েছে। একইভাবে সুপ্রিমকোর্টের সামনে মূর্তি স্থাপন, পাঠ্যসূচী এবং অপসংস্কৃতির চক্রান্তের বিরুদ্ধে তৌহিদী জনতার আন্দোলনে রাম পালরা পালাতে বাধ্য হবে।
হেফাজতের ঢাকা মহানগরের আমীর জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নুর হুসেন কাসেমী বলেন, এদেশ থেকে ইসলাম মুসলমানদের ঈমান আকীদা তাহযীব তামাদ্দুন ধ্বংসের চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে। মূর্তি সংস্কৃতি আমাদের ধর্ম দেশ ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। এসব চক্রান্তের মাধ্যমে দেশকে হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর লক্ষ্য নিয়ে তোড়জোড় চলছে। মতবিনিময়ের মাধ্যমে ইসলামী দল ও নেতৃবৃন্দকে এসব চক্রান্তের বিরুদ্ধে কর্মসুচী নিতে হবে এবং হেফাজতসহ সকল ইসলামী দলকে আন্দোলনে নামতে হবে।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ বলেন, মূর্তি ইসলামে সবচেয়ে বিরোধী অনুষঙ্গ। এটা মুসলমানদের ঈমান বিরোধী। সকল বাধা-বিপত্তি প্রতিহত করে ঈমান বিরোধী মূর্তি স্থাপন প্রতিহত করতে প্রদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মূর্তি স্থাপনের চক্রান্ত ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত না করলে ইসলামী দলসমূহ এবং নেতৃবৃন্দের আদর্শ ও উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ডক্টর ঈসা শাহেদী বলেন, মুসলমানের দেশে সর্Ÿোচ্চ আদালতের সম্মুখে মূর্তি স্থাপন চরম অবমাননা। তিনি আরো বলেন, নতুন শিক্ষানীতিতে অষ্টম শ্রেণীর পর ইসলাম শিক্ষা বাদ দেয়া হয়েছে। ৯০ ভাগ মুসলমানের সন্তানদেরকে ইসলাম থেকে সরিয়ে রাখার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, ভারত নানাভাবে আমাদের দেশ, তরুণ ও যুব সমাজকে ধ্বংসের পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সামাজিক ও ইসলামী রীতিনীতি সমূলে ধ্বংসের জন্য তাদের চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের সংস্কৃতি আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। তাদের অধিকাংশ চ্যানেলের প্রোগ্রামাদি মানুষের পরিবারিক জীবনের ঘর ভাঙ্গার নয়া কারিগর। এদেশের মানুষের সভ্যতা ও কৃষ্টিকালচারের আলোকে সংস্কৃতি চলতে হবে। ভিনদেশী কৃষ্টি কালচার দিয়ে আমাদের সংস্কৃতি ধ্বংস করতে দেয়া যায় না। আমাদের আগামী প্রজন্মের নীতি নৈতিকতা ও আদর্শ ঠিক রাখতে বাংলাদেশে ভারতের সকল চ্যানেল বন্ধ করতে হবে। না হয় ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
মুসলিম লীগের মহাসচিব এডভোকেট কাজী আবুল খায়ের বলেন, দেশের সর্বোচ্চ বিচার বিভাগের সামনে মূর্তি স্থাপন করে ইসলাম ও বিশ্ব স্বীকৃত আইন প্রণেতা রাসূল সা. এর অবমাননা করা হচ্ছে। মুসলমানদের সর্ব শ্রেষ্ঠ সম্পদ ঈমান রক্ষার জন্যই ঐক্যবদ্ধ কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব বলেন, মুসলমানদের ঈমান বিরোধী সকল চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিলে ইসলাম বিরোধী বাম রাম মহল তৌহিদী জনতার ¯্রােতে খড়কুটার মত ভেসে যাবে।
নেজামে ইসলাম পার্টির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জিয়উল হক মজুমদার বলেন, বাংলাদেশকে হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করার গভীর চক্রান্ত চলছে। এ চক্রান্ত প্রতিহত করতে তৌহিদী জনতাকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সূচনা করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষা সিলেবাসে এখনো শিরকী বিষয় রয়েছে। এগুলোকে পরিবর্তন করে শিক্ষার সর্বক্ষেত্রে কুরআন ও হাদিসের শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবী দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অধিকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।