Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আ’লীগ কখনই সভ্য রীতি নীতি অনুসরণ করেনি

| প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ছেলের কবর জিয়ারত করলেন খালেদা জিয়া
স্টাফ রিপোর্টার : ছেলের কবরের পাশে বসে পবিত্র কুরআন পড়ে জিয়ারত করলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বাদ আসর বিএনপি চেয়ারপারসন বনানী কবরস্থানে আসেন। চেয়ার বসে প্রায় আধা ঘণ্টা আস্তে আস্তে কুরআন শরীফ পড়েন তিনি।
বেগম খালেদা জিয়ার পাশে মরহুম কোকোর ছোট মেয়ে জাহিয়া, দুই ভাইয়ের স্ত্রী এবং বোন সেলিনা ইসলাম ছিলেন। পরে পরিবারের সদস্য এবং নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন খালেদা জিয়া।
এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, বেগম সেলিমা রহমান, আমান উল্লাহ আমান, মীর মো. নাসিরউদ্দিন, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, বিলকিস জাহান শিরিন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, নাজিম উদ্দিন আলম, তাবিথ আউয়াল, আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, শায়রুল কবির খান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল থেকে বনানীর কবর প্রাঙ্গণে মাদরাসার এতিম শিক্ষার্থীরা পবিত্র কুরআন খতম দেয়। এর আগে দুপুর সোয়া দুইটায় বনানী কবরস্থানের গেইটে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে দুঃস্থ ও দরিদ্রদের মধ্যে খাবার ও শীতবস্ত্র বিতরণ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে মোহাম্মদ শাহজাহান, আবদুস সালাম, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আতাউর রহমান ঢালী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, এ বি এম আশরাফউদ্দিন নিজান, শাহ নুরুল কবির শাহিন, আশরাফউদ্দিন উজ্জ্বল, হেলাল খান, বাবুল আহমেদ, মনিরুজ্জামান মুনির, আসাদুল করীম শাহিন, সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মরহুম কোকোর রূহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ ও  দোয়া মাহফিল হয়। এতে দলের সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মইন খান, আবদুল্লাহ আল-নোমান, আবদুল কাইয়ুম, সঞ্জীব  চৌধুরী, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার প্রমুখ অংশ নেন।
আরাফাত রহমান কোকো যুব ও ক্রীড়া সংসদ : ক্রীড়াঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী মরহুম আরাফাত রহমান কোকো’র মৃত্যুবার্ষিকীতে দুঃস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন আরাফাত রহমান কোকো যুব ও ক্রীড়া সংসদ। বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, লে. কর্নেল (অব.) আবদুল লতিফ খান, বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক, আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা শাহরিয়া ইসলাম শায়লা, মো. আকতার হোসন তালুকদার, মকসেদুল আলম সবুর, রাফিউদ্দিন রনি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আলমগীর হোসেন লাবু। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। ২৮ জানুয়ারি তার লাশ ঢাকায় এনে দাফন করা হয়।
‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে বাণী
২৫ জানুয়ারি দিবসটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে বিএনপি। দিবস উপলক্ষে দলটির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার লক্ষ্যে বহুদলীয় গণতন্ত্রের গলাটিপে হত্যা করে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা ‘বাকশাল’ কায়েম করে।
তিনি বলেন, বাকশাল কায়েম করতে গিয়ে তারা জাতীয় সংসদে বিরোধী মতামতকে উপেক্ষা করে গায়ের জোরেই অমানবিক মধ্যযুগীয় চতুর্থ সংশোধনী আইন পাস করে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী মানুষের বাক, ব্যক্তি, চলাচল ও সমাবেশের স্বাধীনতাসহ সব মৌলিক অধিকার হরণ করে। সব সংবাদপত্র বাতিল করে তাদের অনুগত চারটি প্রকাশনা চালু রাখার ফরমান জারি করে। এর ফলে চিরায়ত গণতন্ত্রের প্রাণশক্তিকেই তারা সেদিন নিঃশেষ করে দেয়।  দেশবাসীর দীর্ঘ দিনের সংগ্রামের ফলে অর্জিত মানুষের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে তারা ভূলুণ্ঠিত করে সমাজে এক ভয়াবহ নৈরাজ্যের ঘন অমানিশা ছড়িয়ে দেয়।
বিএনপি প্রধান বলেন, এমনি এক দুঃসময়ে ৭৫’ এর ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার সম্মিলিত শ্রোতধারায় শহীদ জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। স্বেচ্ছাচারিতার লৌহকপাটের ভেতর থেকে তিনি গণতন্ত্রকে অর্গলমুক্ত করেন। পুনরায় শুরু হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা। নিশ্চিত হয় মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার।
বহু চক্রান্তের চোরাগলি দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে এখন আবারো অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী জোট বাকশালী চেতনায় নতুন করে অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রকে ভূগর্ভে সমাহিত করে ফেলেছে। এদের ঐতিহ্যই হচ্ছে গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার বিপন্ন করা। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তাদের ভরাডুবির বিপদ টের পেয়ে তারা সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। পঞ্চদশ সংশোধনী হচ্ছে মৃত বাকশালের প্রেতাত্মা, যা বর্তমানে ভয়াল দুঃশাসনের আত্মপ্রকাশকে প্রণোদিত করেছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীতে প্রধানমন্ত্রীকে একচেটিয়া ক্ষমতা দিয়ে মূলতঃ গণতন্ত্রকে কবরস্থ করে তার ওপর একক কর্তৃত্ববাদী নির্দয় শাসনের ইমারত নির্মাণ করা হয়েছে। এখন সর্বত্রই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর দখলবাজদের দখলের জয়জয়কার চলছে।
তিনি বলেন, একদলীয় বর্বর শাসন দীর্ঘায়িত করার অলীক স্বপ্নে শুধু গণতন্ত্রই নয়Ñ দেশের ঐক্য, সংহতি ও সার্বভৌমত্বকে তারা সঙ্কটাপন্ন করে তুলতেও দ্বিধা করেনি। বিরোধী দলের প্রতি আচরণে তারা কখনই সভ্য রীতি-নীতি অনুসরণ করেনি। সুতরাং নব্য বাকশালী জগদ্দল পাথরকে অপসারণ করার লক্ষ্যে জনগণ আজ দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ, আবারো কঠিন লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে চেপে বসা গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে পরাভূত করে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
পৃথক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাকশাল গঠন করে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও মানুষের বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতাকে গলাটিপে হত্যা করা হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ বর্তমানে ১৯৭৫ সালের সেই দুঃশাসনেরই পুনরাবৃত্তি করছে।
তিনি বলেন, বিএনপি সবসময় জনগণের মৌলিক অধিকার, বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় অঙ্গিকারাবদ্ধ। আগামীতে দেশ ও জাতির স্বার্থে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জনগণকে সাথে নিয়ে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের চলার পথকে নিষ্কণ্টক করবে ইনশাল্লাহ।



 

Show all comments
  • Furkan ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ৪:০২ এএম says : 0
    i agree with you
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১১:০৫ এএম says : 0
    বিএনপির নেত্রীর কথা শুনতে খুবই ভাল লাগে কিন্তু কথাগুলো কতটা সত্য এবং তার নিজ দল এসব অভিযোগ থেকে কতটা মুক্ত এটও বিচার্য বিষয়। আমার মনে হয় রাজনৈতিক দলের অতীত নিয়ে কথা বলার চেয়ে বর্তমান নিয়ে কথা বলাটা অনেক ভাল। আমি বিএনপির নেত্রীকে বলতে চাই আপনি যখন কথা বলেন তখন বিদ্বেষ মূলক কথা না বলে গঠন মূলক সমালোচনা করুন দেখবেন আপনি সমাদৃত হয়েছেন। আপনি সব সময় ধর্মকে অগ্রধিকার দিয়ে রাজনীতি করে থাকেন কিন্তু আপনি কি নিজে ধর্মের উপর নির্ভর করে কথা বলেন??? আপনার উপর একটা দল নির্ভরশীল তাই আপনাকে প্রতিটি কথা সাবধানের সাথেই বলতে হবে নয়ত বিপদ অনিবার্য। আল্লাহ্‌ সবাইকে সঠিক পথে চলার তৌফিক দিন। আমীন
    Total Reply(0) Reply
  • Shahin Ahmed ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০৬ পিএম says : 0
    Akmot
    Total Reply(0) Reply
  • Md Billal ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০৭ পিএম says : 0
    ঠিক কথা
    Total Reply(0) Reply
  • Munna ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০৭ পিএম says : 0
    ১০০% সত্য
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ