পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর যে মতামত ও প্রস্তাব এসেছে, তা বিবেচনা করে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে বলে আশা করছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। নতুন ইসি গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের শেষ দিনে এই আশাবাদ প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট। তবে কী প্রক্রিয়ায় নতুন ইসি গঠন হবে, তা জানাননি তিনি। শেষ দিনে গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) ও জাকের পার্টির সঙ্গে আলোচনা করেন মো. আবদুল হামিদ। এ নিয়ে ৩১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ করলেন প্রেসিডেন্ট।
বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনায় প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠনে অনেক সুচিন্তিত প্রস্তাব এবং মতামত দিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট আশা প্রকাশ করেন, এসব প্রস্তাব ও মতামত বিবেচনা করে একটি শক্তিশালী ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাব ও মতামত শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে ইতিবাচক অবদান রাখবে। দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে সব রাজনৈতিক দলকে সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বানও প্রেসিডেন্ট রেখেছেন বলে প্রেস সচিব জানান।
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপে বেশির ভাগ দল সংবিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে, তা না হওয়া পর্যন্ত সার্চ কমিটির পক্ষেই মত দিয়েছে বেশির ভাগ দল। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলেছে, ইসি গঠনে সম্ভব হলে এখনই আইন প্রণয়ন কিংবা অধ্যাদেশ জারি করা যেতে পারে; তবে তাদের এই উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি। আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, ভবিষ্যৎ নির্বাচন নিয়ে কোনো বিতর্ক তারা চান না, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চান তারা। তবে তাদের আন্তরিকতা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে বিএনপির।
এদিকে বিএনপি সাবেক একজন প্রধান বিচারপতিকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপিসহ অধিকাংশ দলই আশা প্রকাশ করেছে, প্রেসিডেন্ট শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। সংলাপে আবদুল হামিদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে সংলাপ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দলগুলোর সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি। জাতীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতৈক্য প্রতিষ্ঠার গুরুত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন আবদুল হামিদ। রাজনৈতিক দলগুলোর পরমত সহিষ্ণুতার সংস্কৃতি চর্চার উপরও জোর দিয়েছেন তিনি।
এদিকে গতকাল জাকের পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা আমীর ফয়সলের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় তারা আশা প্রকাশ করেন, সংবিধান অনুযায়ী একটি গ্রহণযোগ্য, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রেসিডেন্টের চলমান উদ্যোগ সফল হবে।
প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানান, জাকের পার্টি সব নিবন্ধিত দলের থেকে একজন করে প্রতিনিধি সমন্বয়ে সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন। এ ছাড়া স্বাধীন, স্বতন্ত্র ও আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মাওলানা এ এ মান্নান ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেন। প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন বলেন, ইসলামী ফ্রন্টের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশন গঠনে ছয় দফা প্রস্তাব পেশ করেন। তারা বলেন, স্বাধীন, শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারে। তারা নির্বাচন কমিশনের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠন এবং কমিশন সচিবালয়ের আর্থিক স্বাধীনতা প্রদানের প্রস্তাব করেন।
বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল আলোচনায় বসেন প্রেসিডেন্ট। এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের সভাপতি এ এই এম কামরুজ্জামান খান।
মুসলিম লীগ নেতারা বলেন, দেশের উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন জরুরি।
রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে দৃঢ় মনোবৃত্তি সম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেয় মুসলিম লীগ। ইসিতে একজন নারী কমিশনার রাখারও প্রস্তাব দেয় তারা।
গত এক মাসে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ মোট ৩১টি দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বসেছেন প্রেসিডেন্ট। সংলাপে অংশ নেয়া অন্য দলগুলো হলোÑ লিবারেল ডেমোক্রেটি পার্টি (এলডিপি), কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), ইসলামী ঐক্যজোট, জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), সাম্যবাদী দল, বিকল্প ধারা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), জাসদ (আম্বিয়া), বাসদ, ইসলামী আন্দোলন, গণতন্ত্রী পার্টি, গণফোরাম, খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, গণফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) ও জাকের পার্টি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।