পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপের্টার : বিন¤্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ভাষা শহীদদের স্মরণ, সর্বত্র বাংলা ভাষা চালু, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের মধ্যদিয়ে জাতি আজ পালন করছে শোক আর গর্বের অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। একুশের প্রথম প্রহরে অসংখ্য রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। ফুলে ফুলে ভরে যায় শহীদ মিনার। শ্রদ্ধা অর্পণ করতে আসা অধিকাংশ মানুষের পোশাকে ছিল একুশের চেতনার ছাপ শোকের কালো রং। অনেকেই গালে, হাতে শহীদ মিনারের আল্পনা, বর্ণমালা, কবিতার চরণ বা গানের কলি এঁকে নিয়েছিলেন। ফুলের তোড়া হাতে অপেক্ষমাণ মানুষের সারি পলাশীর মোড় ছাড়িয়ে নীলক্ষেত পর্যন্ত চলে যায়। দীর্ঘ লাইনে ফুল আর ছোট ছোট পতাকা হাতে অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায় সব বয়সের, সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে। তাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় সেই চিরচেনা গান, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি...।’
একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাত ১২টা ১০ মিনিটের দিকে। পর্যায়ক্রমে তিনবাহিনী প্রধান, বিদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তা, অ্যাটর্নি জেনারেল, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নেতৃবৃন্দ এবং ভাষা সৈনিকরা শ্রদ্ধা জানান।
শহীদ মিনারে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ফুল দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় একুশে ফেব্রুয়ারির মূল কর্মসূচি। প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর্ব শেষ হলে শহীদ মিনার সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়। এসময় রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে ওয়ার্কার্স পার্টি, হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি, খালেকুজ্জামান ভূইয়ার নেতৃত্বে বাসদ, দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে সাম্যবাদী দল প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
এরপর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দিতে শুরু করেন।
এদিকে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে রাত ১২টা ২০ মিনিটেগুলশানের বাসা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের উদ্দেশ্যে রওনা হন খালেদা জিয়া। বাসা থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত নিñিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরী করা হয়। এদিকে, খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় পৌঁছালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেরিকেড প্রদান করে। এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বেরিকেড ভেঙে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে দোয়েল চত্বরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা বাধা প্রদান করে। সব বাধা অতিক্রম করে খালেদা জিয়া রাত ১টা ৩১ মিনিটে শহীদ মিনারে চত্বরে পৌঁছান এবং ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে একই বহরে দুইটি বড় বাসে করে দলীয় নেতৃবৃন্দ আসেন। তাদের মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্যরা হলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জেনারেল অব.) মাহবুবুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, আসম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সিনিয়র নেতা চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আব্দুল্লাহ আল নোমান, শামসুজ্জামান দুদু, আমান উল্লাহ আমান, মাহবুবউদ্দিন খোকন, রুহুল কবির রিজভী, ফজলুল হক মিলন, জয়নুল আবদিন ফারুক, খায়রুল কবীর খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার, হাবিবুর রহমান হাবিব, সেলিম রেজা হাবিব, হাবিবুল ইসলাম, শামীমুর রহমান শামীম, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু।
এছাড়া অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে শিরিন সুলতানা, রেহানা আখতার রানু, সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, শ্যামা ওবায়েদ, রাজীব আহসান, আকরাম হাসান প্রমূখ নেতারাও আছেন।
এ দিকে নেত্রী আসবে জেনে দলের নেতা-কর্মীরা দোয়েল চত্বরের কাছে কয়েক‘শ নেতা-কর্মী সমবেত হয়। ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বাইরে তারা সড়কের দুই পাশে দাঁড়ায় বিএনপি চেয়ারপারসনের অপেক্ষায়। গতবছর ফেব্রুয়ারিতে নিজের ডাকা লাগাতার অবরোধের মধ্যে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে যাননি বিএনপি চেয়ারপারসন। ওইবছর তার উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদল শহীদ মিনাওে শ্রদ্ধা অর্পন করেছিলেন।
দশম সংসদ নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিতে কর্মসূচি ঘোষণার পর গতবছর ৩ জানুয়ারি থেকে টানা ৯২দিন গুলশানের কার্যালয়ে অবস্থান করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। গত রাত ১টায় শহীদ মিনারে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার নেতৃত্বে শহীদ মিনারে ফুল দেন বিএনপি ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।