পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলের অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়াকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের দু’টি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আশাশুনির শ্রীউলা ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানসহ অন্তত ২৬ জন আহত হয়েছেন। তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, অর্থের বিনিময়ে ও অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে দলের ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করে নব্য আওয়ামী লীগার, রাজাকারের সন্তান, মাদক ব্যবসায়ী, চোর-সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন অপরাধের আসামিকে দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এসব অভিযোগ তুলে ধরে মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিপুল সংখ্যক লিখিত অভিযোগ কেন্দ্রে জমাও দেয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের আশংকা, তৃণমূলের এ অসন্তোষ আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। একই সঙ্গে বিরোধীদলের বাইরেও নিজ দলের প্রতিদ্বন্দ্বী নেতাদের মধ্যে রেষারেষি বাড়িয়ে গ্রামীণ রাজনীতিকে আরও সাংঘর্ষিক ও সমস্যাসংকুল করে তুলবে।
জানা যায়, ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রের নির্দেশনার বাইরে গিয়ে ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে প্রায় সব জায়গায়ই স্থানীয় সংসদ সদস্যরা প্রভাব সৃষ্টি করেছেন। অনেক স্থানে তৃণমূলের মতামতকে তোয়াক্কা না করেই স্থানীয় সংসদ সদস্য নিয়ন্ত্রণাধীন জেলা কমিটি দিয়ে তার অনুগত ও পছন্দের ব্যক্তির নাম একক প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তৃণমূল নেতারা এসব বিষয়ে গেল সপ্তাহেই লিখিতভাবে কেন্দ্রে অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
অবশ্য তৃণমূলের এসব অভিযোগ আমলে না নিয়ে তা খ-ন করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে নানক বলেন, ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় প্রভাব খাটিয়ে বিএনপি-জামায়াত ও রাজাকারের সন্তানকে মনোনয়ন দেয়ার তৃণমূলের অভিযোগ সত্য নয়।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, চুলচেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমেই ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে। সমাজবিরোধী কাউকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, এটা কেউ দেখাতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, রাজাকার, আলশামস, বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর কেউ মনোনয়ন যেন না পায়, এ জন্য কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।
শনিবার মনোনয়ন নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সরদার অভিযোগ করেন, তৃণমূল পর্যায় থেকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী বাছাই করার সময় তিনি ৬৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৫৫ জনের ভোট পেয়ে একক প্রার্থী ঘোষিত হন। সে অনুযায়ী তার নাম উপজেলার সাধারণ সম্পাদক জেলাপর্যায়ে পাঠান। তবে জেলা থেকে তার নাম এক নম্বরে এবং বর্তমান চেয়ারম্যান শাকিলের নাম দুই নম্বরে লিখে কেন্দ্রে পাঠানো হয়। কেন্দ্র আবু হেনা শাকিলকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিলে এলাকাজুড়ে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
নূর মোহাম্মদ আরও জানান, শনিবার সকালে তিনি তিন-চারটি মোটরসাইকেল নিয়ে এলাকার মাড়িয়ালায় যান। সেখান থেকে ফেরার সময় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী আবু হেনা শাকিল ও তার ছেলে যুবলীগ নেতা সাদ তার ওপর হামলা করেন। তারা নূর মোহাম্মাদকে ধারালো দা দিয়ে কোপাতে শুরু করলে সমর্থকরা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। এ সময় সমর্থকদের ওপরও হামলা করা হয় বলে দাবি করেন নূর মোহাম্মদ।
এদিকে এসব অভিযোগের বিষয়ে আবু হেনা শাকিল বলেন, নুর মোহাম্মদ মাড়িয়ালা গ্রামে এসে বলেন যে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নৌকার বিপক্ষে লড়বেন। তিনি নৌকায় ভোট না দেয়ার জন্য নানা রকম উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলেন।
শাকিল দাবি করেন, নূর মোহাম্মদ সরদারের লোকজনই তার ওপর প্রথমে হামলা চালায়। এতে তার পক্ষের ১৮ জন আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, অনেক ইউপিতে দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক ছিল। তাই তৃণমূল নেতারা চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী বাছাইয়ে রীতিমতো হিমশিম খান। এতে করে বেশিরভাগ ইউনিয়নেই যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ে বড় ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়। প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় না থাকার কেন্দ্রীয় নিদেশনার পরও স্থানীয় এমপিদের অনেকেই বিপত্তি বাড়িয়েছেন। তারা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেক ইউপিতে এমপিদের পছন্দের প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠাতে বাধ্য হয়েছে তৃণমূল।
আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় দলে এ ধরনের ছোটখাটো সমস্যা থাকবে। তারপরও আমরা এসব অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। প্রতিটি জায়গায় দলের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। এদের প্রায় সবাই যোগ্য ও ত্যাগী। কিন্তু সবাইকে তো আর মনোনয়ন দেয়া সম্ভব না। এজন্য সব দিক বিবেচনা করে একজনকে দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি খুব একটা সহজ কাজ নয়। তবে দ্রুত বিষয়গুলো মিটে যাবে বলে তিনি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।