Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ইসি গঠনে প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তে সবাই আস্থা রাখবে ও নির্বাচনে অংশ নেবে

সরকারের তিনবছর পূর্তিতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধানমন্ত্রীর আশাবাদ

প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:৪১ এএম, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭

বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আশা করেন, প্রেসিডেন্টের উদ্যোগে  যে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে তার ওপর সব রাজনৈতিক দল আস্থা রাখবে এবং সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নেবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। প্রায় ৩৫ মিনিটের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী তিন বছরে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ, উন্নয়ন কর্মকা- ও অর্জনের কথা তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা তিন বছর আগের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, আপনারা জানেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আমরা অবৈধ পথে ক্ষমতা দখলের পথ রুদ্ধ করেছি।
দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে নিজের চেষ্টা চালানোর বিষয়টি তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, তখন জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সব দলকে নিয়ে নির্বাচনকালীন একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। সংবিধানের আওতায় আমরা সব ধরনের ছাড় দিতেও প্রস্তুত ছিলাম। এমনকি বিএনপি যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক, তাও আমরা দিতে  চেয়েছিলাম। কিন্তু বিএনপি নেতৃত্ব সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি, বরং উনি সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ কথায় নয়, কাজে বিশ্বাস করে। সব বাধা-বিঘœ অতিক্রম করে বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করা হবে। দুই মেয়াদে সরকারের নবম বছরে পদার্পণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পেরেছি সে বিচারের ভার তাদের ওপরই রইল। তবে দেশের এবং দেশের মানুষের উন্নয়ন এবং কল্যাণের জন্য সরকার চেষ্টার ত্রুটি করেনি।
আমাদের মনে রাখতে হবে, বিপুল জনসংখ্যার এ দেশে সম্পদের পরিমাণ সীমিত। দীর্ঘকাল দেশে কোনো আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়নি। বহু সমস্যা পুঞ্জিভূত হয়ে পাহাড় সমান হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মোকাবিলা করতে হয়েছে অভ্যন্তরীণ বিরুদ্ধ পরিবেশ। বৈশ্বিক বৈরী অর্থনৈতিক অবস্থাও উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বারবার।
কিন্তু সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের সর্বজনীন মডেল। দ্রুত সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশের সাফল্যকে বিশ্বব্যাংক মডেল হিসেবে বিশ্বব্যাপী উপস্থাপন করছে। আট বছর আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক নয়। আজকের বাংলাদেশ আত্মপ্রত্যয়ী বাংলাদেশ।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, জাতীয় সংসদকে সকল কর্মকা-ের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা হয়েছে। বিরোধী দলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তারা বিভিন্ন বিষয়ে অভিমত দিচ্ছেন, আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, বিএনপি জোট নির্বাচন বর্জন করলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দল এবং প্রার্থীর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠুভাবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের সময় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত ছিল। সরকার কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেনি। বিএনপির আন্দোলনে জ্বালাও-পোড়াওয়ের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশবাসী তাদের এ সন্ত্রাসী কর্মকা- প্রত্যাখ্যান করেছেন। জনগণ এ ধরনের কর্মকা-ের পুনরাবৃত্তি দেখতে চান না। তিন মাসে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের হাতে ২৩১ জন নিরীহ মানুষ নিহত এবং এক হাজার ১৮০ জন আহত হন। তারা দুই হাজার ৯০৩টি গাড়ি, ১৮টি রেলগাড়ি ও আটটি লঞ্চে আগুন  দেয়। ৭০টি সরকারি অফিস ও স্থাপনা ভাঙচুর এবং ছয়টি ভূমি অফিস পুড়িয়ে দেয়া হয়।
শেখ হাসিনা সন্ত্রাসী-জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ তবে ধর্মান্ধ নয়। হাজার বছর ধরে এ দেশের মাটিতে সকল ধর্মের মানুষ সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে শান্তিতে বসবাস করছেন। যারা এই ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়, তাদের ঠাঁই বাংলার মাটিতে হবে না। তিনি ইমাম, মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, স্থানীয় মুরুব্বি, আনসার-ভিডিপির সদস্য এবং অভিভাবককে জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সন্তানদের প্রতি নজর রাখুন। তাদের এমনভাবে পরিচালিত করুন, যাতে তারা ভুল পথে পা না বাড়ায়।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের সর্বজনীন মডেল। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশের সাফল্যকে বিশ্বব্যাংক মডেল হিসেবে বিশ্বব্যাপী উপস্থাপন করছে। আট বছর আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক নয়। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি দেশের একটি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন প্রায় আট লাখ  কোটি টাকারও বেশি, যা জিডিপির ভিত্তিতে বিশ্বে ৪৪তম এবং ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে ৩২তম। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। আগামী বছরের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০২১ সাল নাগাদ ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্য নিয়ে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বর্তমানে ৩২ বিলিয়ন ডলারেরও ওপর। বিগত আট বছরে দেশ-বিদেশে প্রায় দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। গত বছর রেকর্ড সাত লাখ ৫৭ হাজার ৭৩১ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। ৫ কোটি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত  শ্রেণিতে উন্নীত হয়ে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ, সুন্দর এবং বাসযোগ্য বাংলাদেশ উপহার দিই।
প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৯তম ও ২০৫০ সাল নাগাদ ২৩তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হবেÑ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের মাথাপিছু আয় ২০০৫-০৬ সালের ৫৪৩ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি  পেয়ে আজ ১ হাজার ৪৬৬ ডলার হয়েছে। দরিদ্রের হার ২০০৫-০৬ সালে ছিল ৪১.৫ শতাংশ। এখন তা হ্রাস পেয়ে হয়েছে ২২.৪ শতাংশ। অতি দরিদ্রের হার ২৪.২৩ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে দরিদ্রের হার ১৫-১৬ শতাংশে এবং অতিদরিদ্রের হার ৭-৮ শতাংশে নামিয়ে আনা।
তিনি বলেন, একদিকে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যেমন বেড়েছে, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে থাকায় মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে। ২০০৯ সালে মূল্যস্ফীতি ছিল ডাবল ডিজিটে। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ৫.০৩ শতাংশ। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে রফতানি আয় ছিল মাত্র ১০.৫২ বিলিয়ন ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৪.২৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ২০২১ সাল নাগাদ ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমরা জাতীয় রফতানি নীতি ঘোষণা করেছি এবং বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সরকারের নেয়া বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি; বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও দুস্থ নারী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতাসহ বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি চালু; হিজড়া এবং বেদে সম্প্রদায়ের ভাতা; চা শ্রমিকদের জন্য অনুদান; একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের অধীনে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি; আশ্রয়ন প্রকল্প; ১০ টাকা মূল্যে চাল সরবরাহ; শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি; বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ ও ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।
উন্নয়নের লক্ষ্যে ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ইতোমধ্যে  শেষ হয়েছে। ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করার বিষয়ে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আমরা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেই, তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় ১৫ হাজার ৩০০  মেগাওয়াট। দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে চাই। সেই লক্ষ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। কয়েকটি বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজ শুরু করেছি। আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আমরা পরিবেশ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা এবং প্রত্যন্ত চরাঞ্চলসহ সারাদেশে প্রায় ৪৫ লাখ সোলার হোমসিস্টেম বসানো হয়েছে। মোট বিদ্যুতের ১০ শতাংশ উৎপাদন করা হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা পরমাণু ক্লাবে যুক্ত হতে যাচ্ছি। পাবনার রূপপুরে ২০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। আমাদের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল খাদ্য-নিরাপত্তা নিশ্চিত ও কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা। ৮ বছরে দেশে কৃষি খাতের ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। বছরে খাদ্যশস্য উৎপাদন প্রায় ৪ কোটি মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ এখন খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ এবং সবজি উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে। ৮ বছরে প্রায় ৪০ হাজার ৩০০ কোটি টাকার কৃষি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বর্গাচাষিদের জন্য কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্প সুদে বিনা জামানতে কৃষিঋণের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
যোগাযোগ খাতের উন্নয়ন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় কাচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা এবং দ্বিতীয় গোমতী সেতু নির্মাণের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ বিমানের জন্য ছয়টি সুপরিসর উড়োজাহাজ সংগ্রহ করেছি। ২০১৮ সাল নাগাদ আরো ৪টি উড়োজাহাজ সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে। পদ্মা সেতুর অপর প্রান্তে মাদারীপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণের সমীক্ষার কাজ শিগগিরই শুরু হবে।
তিনি আরো বলেন, ৪৮টি বৃহৎ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকায় হাতিরঝিল প্রকল্প, কুড়িল-বিশ্বরোড বহুমুখী উড়াল সেতু, মিরপুর-বিমানবন্দর জিল্লুর রহমান উড়াল সেতু, বনানী ওভারপাস, মেয়র হানিফ উড়াল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। মেট্রোরেল নির্মাণকাজও শুরু হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন চালু হয়েছে। নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা সড়ক এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক ৪ লেনে উন্নীত করা হয়েছে। চন্দ্রা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এবং ঢাকা-সিলেট চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম ৮ লেনের মহাসড়ক চালু করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার রেলওয়েকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে দ্রুতগতিসম্পন্ন এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয়েছে। ইলেকট্রিক ট্রেন ও পাতাল ট্রেনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে।
নতুন ২০টি মিটারগেজ এবং ২৬টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ, ১২০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী গাড়ি, ১৬৫টি ব্রডগেজ ও ৮১টি মিটারগেজ ট্যাংক ওয়াগন, ২৭০টি মিটারগেজ ফ্লাট ওয়াগন এবং ২০ সেট মিটারগেজ ডেমু সংগ্রহ করা হয়েছে। আরো ২০০টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহের জন্য প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। সব জেলাকে রেল যোগাযোগের আওতায় আনা হবে।
দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। দুর্নীতি প্রতিরোধে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের  দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একমাত্র আওয়ামী লীগই পারবে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে। আসুন, দলমত-নির্বিশেষে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়নে নিজেদের নিয়োজিত করি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত-সমৃদ্ধ, সুন্দর এবং বাসযোগ্য বাংলাদেশ উপহার দিই।
(প্রধানমন্ত্রীর পূর্ণ ভাষণ অনলাইনে দেখুন)



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ৭:৫৬ এএম says : 0
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সকল রাজনৈতিক দল যারা রাষ্ট্রপতির সাথে নির্বাচন কমিশন নিয়ে আলোচনা করেছেন তাদের প্রতি আশা রেখে বলেছেন আগামী নির্বাচন কমিশন দেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সকল দলের মতামতের উপর ভিত্তি করে গঠন করবেন সেটা সবাই মেনে নিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ নিবে। আমি জননেত্রীর এই আহ্বানকে স্বাগত জানাই এবং আমি আশাকরব বিএনপি সহ সকল রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতির উপর আস্তা রাখবেন এবং তার সিদ্ধান্তকে সম্মান দেখায়ে কোন রকম অরাজগতা না করে আগামী নির্বাচনে অংশ নিবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • হাবিব ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১১:৩৫ এএম says : 0
    But we are will be win
    Total Reply(1) Reply
    • tipu ১৪ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০৬ এএম says : 4
      right

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রেসিডেন্টের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ