পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রথম হয়েও ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হতে পারেননি মালয়েশীয় শিক্ষার্থী
স্টাফ রিপোর্টার : মেডিকেলে ভর্তিতে অন্যান্য বছর প্রশ্ন জালিয়াতি, কম নম্বর পেয়েও ভালো মেডিকেলে ভর্তির নজির থাকলেও এ বছর পরীক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রমে তা থেকে বের হয়ে এসেছে প্রশাসন। কিন্তু দেশের শিক্ষার্থী ভর্তি স্বাভাবিক নিয়মে করতে পারলেও সরকারি মেডিকেলের বিদেশী ভর্তিতে ঠিকই অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। চলতি ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে মেধা তালিকায় প্রথম হয়েও দেশ সেরা প্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারেননি মালয়েশিয়ান শিক্ষার্থী সোহার্দ্রা রাজ। তবে, নবম অবস্থানে থেকেও এ সুযোগ পেয়ে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থী খন্দকার তামকিন সাকির। এদিকে গত শিক্ষাবর্ষের মতো এ শিক্ষাবর্ষেও সরকারি মেডিকেল কলেজে নন-সার্কভুক্ত দেশগুলো থেকে শিক্ষার্থী ভর্তিতে দুর্নীতি হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, এটাকে তার নমুনামাত্র বলে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নন-সার্কভুক্ত দেশসমূহের জন্যে এমবিবিএস কোর্সে সুপারিশকৃত আসন সংখ্যা ৬৪টি। এই আসনে এবার প্রাপ্ত আবেদনপত্রের সংখ্যা ৩১টি। এর মধ্যে সঠিক বলে বিবেচিত হয়েছে ২৮টি। জানা যায়, এই ২৮ জন শিক্ষার্থীকে মেধাক্রম অনুযায়ী ভর্তি করার কথা। কিন্তু মেধাক্রমের শুরুতে থাকার পরও অনেক শিক্ষার্থীকে প্রথম সারির মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মেডিকেল কর্মকর্তা এবং সরকারের ওপর মহলের যোগসাজশে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নন-সার্কভুক্ত দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের ভর্তির তালিকা প্রস্তুত করা হয়, যেখানে বঞ্চিত করা হয় মেধাবীদের। শিক্ষার্থীদের মেধা তালিকা অনুযায়ী, মেধাক্রমে সর্বোচ্চ ১০ নম্বরপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩ জন। এর মধ্যে প্রথম দু’জন মালয়েশিয়ান এবং তৃতীয় জন আমেরিকান। মেধা তালিকায় সবার ওপরে থাকলেও সোহার্দ্রা রাজ ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিবর্তে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন রাজধানীর বাইরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে। আর তার পরের দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেয়েস্তেন বি এবং তৃতীয় স্থানের ফারজানা আফরিন ঠিক পেয়ে গেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ।
মেধাক্রমে ৯ দশমিক ৬০ নম্বর পেয়ে চতুর্থ স্থানে থাকা আমেরিকার উরিশমিন জাহুর খান সুযোগ পেয়েছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির। একই নাম্বার পেয়ে পঞ্চম অবস্থানে থাকা মালয়েশিয়ার সারভিন রাওকে ভর্তির জন্যে সুপারিশ করা হয়েছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে। যা থাকে শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকার অনেক পেছনে।
আবার ৯ দশমিক ৩৪ নম্বর পেয়ে আমেরিকার তানভীন দোলা পেয়েছেন দ্বিতীয় প্রধান প্রতিষ্ঠান স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে। অথচ মেধাক্রমে তার অবস্থান ষষ্ঠ। একই নাম্বার পেয়ে আমেরিকার আদিবা গাফফারের স্থান হয়েছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে। তার মেধাক্রম সপ্তম।
চতুর্থ থেকে সপ্তম মেধাক্রম পর্যন্ত কাউকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ দেওয়া না হলেও অষ্টম এবং নবম অবস্থানে থাকা শিক্ষার্থীরা ঠিকই আবার পেয়ে গেছেন এই সুযোগ। ৯ দশমিক ৩৩ নম্বর পেয়ে অষ্টম অবস্থানে থাকা মালয়েশিয়ান শিক্ষার্থী জেসিনা বাত্রিসিয়া বিনতি জামিরি এবং একই নাম্বার পেয়ে নবম অবস্থানে থাকা আমেরিকার খন্দকার তামকিন সাকির পেয়ে গেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নের সুযোগ।
প্রথম ১৬ জনের তালিকা থেকে দেখা যায়, কানাডার ফাতেমা হাসান ১৫তম অবস্থানে থেকেও সুযোগ পেয়েছেন ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নের। যেখানে ১০ম থেকে ১৪তম অবস্থানে থাকা সব বিদেশি শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে ঢাকার বাইরের ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেটের মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এ ধরনের দুর্নীতি হয়েছে। বিদেশী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে মেধাবী বিদেশি শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) প্রফেসর ডা. মো. আবদুর রশীদ ইনকিলাবকে বলেন, শিক্ষার্থীদের চয়েসের ভিত্তিতে কলেজ দেয়া হয়। একই সঙ্গে বিষয়টি মন্ত্রণালয় দেখে। তাই এ বিষয়ে না জেনে বলতে পারবো না উল্লেখ করেন ডা. আব্দুর রশিদ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (স্বাস্থ্য শিক্ষা) সালমা আক্তার জাহান ইনকিলাবকে বলেন, প্রথমে ফরেন মিনিস্ট্রির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আসে। শিক্ষার্থীদের চয়েস থাকে কোন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবে। পরে এ সংক্রান্ত কমিটি (ডীন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক, মন্ত্রণালয়) শিক্ষার্থীর পছন্দ অনুযায়ী ঠিক করে শিক্ষার্থী কোথায় ভর্তি হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।