Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বসবাসের অযোগ্য ঢাকা

| প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

যানজটের ভোগান্তি : শত জঞ্জাল ও পরিবেশ দূষণ: নগরজুড়ে দখলের রাজত্ব : গ্যাস সঙ্কটে নাকাল জীবন : বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট : নগরজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি : রাস্তার উপর মালামালের স্তূপ : ময়লা-আবর্জনায় দুর্গন্ধময় পরিবেশ : মশার সঙ্গে বসবাস : ওভারপাস-আন্ডারপাসে বেহাল অবস্থা সন্ধ্যা হলেই অন্ধকারে : অলিতে গলিতে মাদকের হাট : খাদ্য ও পণ্যসামগ্রীতে ভেজাল : সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ মাস্তানদের তৎপরতা
নূরুল ইসলাম : নানা সমস্যায় জর্জরিত রাজধানী ঢাকা এখন বিপণœ। নগরজুড়ে ভয়াবহ যানজট, সংস্কারের নামে খোঁড়াখুঁড়ি, গ্যাস স্বল্পতায় টিমটিম চুলা, পানির জন্য হাহাকার, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধময় রাস্তাঘাট, উন্নয়নের ধকল, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পরিবহন যান সংকট, রিকশার রাজত্ব, ভাড়া নিয়ে হট্টগোলসহ ঘর থেকে বেরুলেই শত জঞ্জাল-যন্ত্রণা। সমস্যার পাহাড় জমে নাগরিক দুর্ভোগ অনেকটা দুর্যোগে রূপ নিয়েছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, যেখানে সেখানে পার্কিং, ফুটপাত দখল করে বাণিজ্য, পরিবেশের বিপর্যয়, খাদ্য ও পণ্যসামগ্রীর ভেজালসহ নানা অনিয়মে ঢাকাবাসীর জীবন এখন শঙ্কিত। ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট এর তালিকায় ২০১৫ সালে বিশ্বে বসবাসের সবচেয়ে অযোগ্য শহর হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। এর আগের বছরও এই মন্দ তালিকায় ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। নগর পরিকল্পনাবিদ ও ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ নজরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, প্রতিবছর ঢাকা শহরে ৪/৫ লাখ করে নতুন মানুষ যুক্ত হচ্ছে। এর মানে হলো প্রতি বছর ঢাকায় একটা করে কাঠমুন্ডু যুক্ত হচ্ছে। এই বাড়তি মানুষের কারণে ভৌত অবকাঠামোগত, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, শিক্ষা, আবাসন, পরিবহনসহ সব সেক্টরেই সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। এক সাথে এতো সমস্যা মোকাবেলা করা অনেক কঠিন। তবে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধান করতেই হবে। তা না হলে ঢাকাকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নাই।
যানজটের ভোগান্তি
ভয়াবহ যানজট এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী। আগে ঢাকার ব্যস্ত এলাকাগুলোতে যানজট হতো। এখন সব এলাকা মিলেমিশে যানজটে একাকার। দিন রাতের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। আধা কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে সময় লাগে কয়েক ঘণ্টা। যান্ত্রিক যানবাহনের সাথে রিকশার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে সীমাহীন। যা একটা শহরের যাতায়াত ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করার জন্য যথেষ্ঠ। ঢাকা এখন রিকশার শহর। ১২ লক্ষাধিক রিকশা চললেও এগুলো নিয়ন্ত্রণে বা পরিচালনায় কোনো নিয়ম শৃঙ্খলা নেই। এ প্রসঙ্গে প্রফেসর নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় যানজটের প্রধান উপসর্গ এই রিকশা। এগুলোর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পরিচালনার জন্য নিয়ম থাকা দরকার। এগুলোর জন্য পৃথক লেন থাকা দরকার। তিনি বলেন, রিকশাসহ সব ধরনের গণপরিবহনকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার জন্য আইনের শাসন জরুরী। যানজটের অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে ভাঙ্গাচোরা রাস্তাঘাট, সংস্কারের নামে নগরজুড়ে রাস্তার খোঁড়াখুঁড়ি, নির্মাণ কাজের ধকল, অবৈধ পার্কিং, ফুটপাত দখল করে বাণিজ্য, লেন ব্যবহার না করা, ম্যানুয়াল ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ইত্যাদি। এসব সমস্যা নিরসনে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই। নেই আইন প্রয়োগের ব্যবস্থাও। গত কয়েকদিন ধরেই দুঃসহ যানজটে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে থাকছে। স্থবির হয়ে পড়ছে জীবনযাত্রা। প্রধান রাস্তা থেকে তা ছড়িয়ে পড়ছে অলিগলি মহল্লাতেও। নগরীর একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে যাতায়াতে পুরোটা দিন লেগে যাচ্ছে। বাস-মিনিবাস, প্রাইভেটকার, রিকশা ব্যবহার করেও কতক্ষণে গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে তা কেউ হলফ করে বলতে পারেন না। অনিশ্চিত যাত্রাকে মেনে নিতে হচ্ছে নগরবাসীকে। বাস্তবে রাস্তার তুলনায় গাড়ি বেশি এবং গাড়ির তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। এর সাথে যাত্রী হয়রানী তো আছেই। নগরীতে চলাচলের ক্ষেত্রে ডাইরেক্ট, বিরতিহীন, গেইটলক, টিকিট কাউন্টার সিস্টেম, সিটিং নামের বিভিন্ন পরিবহন যাত্রীদের সঙ্গে নানারকম প্রতারণা করে চলছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, যেখানে সেখানে গাড়ি থামানো, যাত্রী উঠানো, যাত্রীদের সাথে পরিবহন শ্রমিকদের দুর্ব্যবহারসহ নানা যন্ত্রণা এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী।
শত জঞ্জাল ও পরিবেশ দূষণ
ঢাকা শহরে ঘর থেকে বাইরে পা ফেললেই শত জঞ্জাল। পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার উপর বিপজ্জনকভাবে ঝুলে আছে বৈদ্যুতিক, ইন্টারনেট ও ডিশের ক্যাবল। জনবহুল রাস্তার মাঝেই খোলা পড়ে আছে জোড়াতালির বিদ্যুৎ সংযোগ, ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল। পুরান ঢাকার ১০টি থানা এলাকাজুড়ে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে ২৫ হাজার কল-কারখানা ও গুদাম। অতি সরু অলিগলি পেরিয়ে ৭০ ভাগ বাড়িঘর পর্যন্ত পৌঁছে না এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। পুরান ঢাকায় অপরিকল্পিত ও পুরনো কয়েক হাজার ভবন এখন ঠাঁয় দাঁড়িয়ে। ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে যেগুলো ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই আশঙ্কা কবে যেনো সত্যি হয় সে আতঙ্ক কাটছে না। অথচ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেই। হাজারীবাগ ও লালবাগের ট্যানারীর বিষে বুড়িগঙ্গার পরিবেশ দূষণ এখনও ভয়াবহ পর্যায়ে। পরিবেশের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ৩০ লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত। নানা রোগে আক্রান্ত তারা।
এক সময় বুড়িগঙ্গাকে বলা হতো ঢাকার ফুসফুস। সেই ফুসফুসই এখন ঢাকাবাসীর জন্য কাল হয়েছে। বুড়িগঙ্গার দূষণের নানা রকমের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ঢাকাবাসীর উপর। পুরো ঢাকা শহরের বর্জ্যরে কারণে দূষিত হচ্ছে বুড়িগঙ্গার পানি। জানা গেছে, ঢাকা শহরের গৃহস্থালী ও বিভিন্ন কল-কারখানার উৎপাদিত ৭ হাজার টনের বেশি বর্জ্যরে ৬৩ শতাংশ অপরিশোধিত কঠিন বর্জ্য বিভিন্ন খাল ও ড্রেন দিয়ে প্রতিদিন বুড়িগঙ্গায় পড়ছে। সদরঘাট থেকে দেশের অর্ধশতাধিক নৌ-রুটে চলাচলকারী ৪ শতাধিক নৌযান বুড়িগঙ্গা নদীতে বছরে ১ দশমিক ৭০ থেকে ২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন টন বর্জ্য ফেলায় টনকে টন রাসায়নিক পদার্থ পলি হিসেবে নদীর তলদেশে জমা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বুড়িগঙ্গার তলদেশে প্রায় ৭ ফুট পলিথিনের স্তর জমে গেছে। নদী দূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী নদীর সঙ্গে যুক্ত ৩৬৫টি টেক্সটাইল মিল, ১৪৯টি ওষুধ প্রস্তুতকারক কারখানা, ১২৯টি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ, ১১৮টি রাসায়নিক ও কীটনাশক দ্রব্য প্রস্তুতকারক কারখানা, ৯২টি পাটকল, ৬৩টি রাবার ও প্লাস্টিক কারখানা, ৩৮টি খাদ্য ও চিনিজাত দ্রব্য প্রস্তুতকারক কারখানা, ১০টি পেপার এন্ড পাল্প ফ্যাক্টরী, ৫টি সিমেন্ট কারখানা, ৫টি সার কারখানা ও ৪টি ডিস্টিলারী কারখানা। নদী দূষণের প্রধান উপকরণ ১৯৮টি চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ ট্যানারী  ঢাকার বাইরে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি। এর সাথে যুক্ত হয়েছে কামরাঙ্গীরচরের ৩৮০টি ডায়িং ফ্যাক্টরীসহ সহস্রাধিক প্লাস্টিক ও পলিথিনের কারখানা।
নগরজুড়ে দখলের রাজত্ব
প্রভাবশালীদের দখলদারিত্বে গোটা রাজধানীজুড়েই তৈরী হয়েছেÑ হাট-বাজার। পুরান ঢাকার নর্থ-সাউথ রোডের অর্ধেকটা অনেক আগেই দখল করে নিয়েছে সংলগ্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। সিদ্দিকবাজার থেকে ইংলিশ রোডের মোড় পর্যন্ত সড়কে রড-সিমেন্ট, আসবাবপত্রের দোকানের মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা। সেখানে মাত্র ৩/৪ হাত সড়ক ফাঁকা রেখে মালামাল লোড-আনলোডের জন্য পাশেই পার্কিং করা থাকে সারি সারি মিনিট্রাক, ঠেলা গাড়ি। রাস্তা দখল করে রাখার জন্য কোনো যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে না। কমলাপুর স্টেডিয়াম থেকে মুগদা-বৌদ্ধমন্দির গেট পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যস্ততম বিশ্বরোডে দুই সারিতে গাড়ি রাখা হয়। বিভিন্ন কাউন্টার সার্ভিস বাস, কোচ, ট্রাক, লং ট্রেইলারসহ পণ্যবাহী গাড়িগুলো সারিবদ্ধভাবে পার্কিং করে রাখায় ওই চার কিলোমিটার এলাকা দিনভর ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে। নিউ মার্কেট ও নীলক্ষেত এলাকার ফুটপাত আর ফুটওভার ব্রিজজুড়ে রয়েছে হকারদের আধিপত্য। দোকান বসিয়ে পুরো ব্রিজকেই বাজার বানিয়ে ফেলা হয়েছে। গাউসিয়া মার্কেটের সামনে রাস্তা সারাক্ষণই ময়লা-আবর্জনার স্তূপ পড়ে থাকে। বঙ্গবাজারের সামনে থেকে শুরু করে গুলিস্তান-কাপ্তানবাজার পর্যন্ত রাস্তাটি ডাস্টবিন, বাজার, নাকি টার্মিনাল তা বোঝা মুশকিল। গুলিস্তানের ফুটপাত হকারমুক্ত করার জন্য পুলিশের প্রচেষ্টা বিফলে গেছে। গত বছরের শেষ দিকে ডিএসসিসি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে হকারদের প্রতিরোধে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। ছাত্রলীগের দুই নেতা সেদিন প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলী করে এখন জামিনে। হকার উচ্ছেদ তো দূরে থাক পুরো গুলিস্তানের রাস্তা দখল করে গড়ে তোলা বাজার এখন জমজমাট।   
গ্যাস সঙ্কটে নাকাল জীবন
গ্যাস সঙ্কটে রাজধানীবাসীর জীবন নাকাল। নগরীর অধিকাংশ এলাকায় এখন দুপুরের পর গ্যাস আসে। আবার কোনো এলাকায় আসে রাতে। টিম টিম করে জ্বলে চুলা। যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, মুগদা, বাসাবো, সবুজবাগ এলাকায় রাত ছাড়া গ্যাসের দেখা মেলে না। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় আছে বহুতল ভবনের বাসিন্দারা। যারা যত উঁচুতে থাকেন গ্যাস সমস্যা ভুগছেন তারা প্রত্যেকেই। পুরনো ঢাকার রহমতগঞ্জ লেন, নারিন্দা, মুসুরিখোলা, জেলখানা রোড, তাঁতীবাজার, শাখারিবাজার, কাজী আলাউদ্দিন রোডে সারাদিনই গ্যাস সরবরাহ থাকে, কিন্তু চুলা জ্বলে টিমটিম করে। রাজধানীর এই অবস্থার মধ্যেও ঢাকার কাছে নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে হাজার হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে। যেগুলোর দ্বারা তিতাসের একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থানীয় সরকারদলীয় কতিপয় নেতা অন্তত: আড়াইশ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।  
বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট
ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়া, খাল-বিল দখল, ওয়াসা কর্তৃপক্ষ নতুন পাম্প বসানোর জায়গা না পাওয়ায়, বেশিরভাগ স্থানে পানির লাইনগুলো পুরোনো হওয়ায়, পাইপ লাইনে ফাটল, এক পানির লাইনের সঙ্গে স্যুয়ারেজ লাইনের সংযোগ এক হওয়ায় ঢাকার মানুষ বিশুদ্ধ পানি সংকটে ভুগছে। কোনো কোনো এলাকায় ব্যবহার করতে হচ্ছে দুর্গন্ধ পানি। বর্ষাকালের কিছুদিন পানি সংকট কম থাকলেও সারাবছরই রাজধানীবাসীকে পানি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এর সাথে কোনো কোনো এলাকায় ড্রেনের পানি ওয়াসার লাইনে ঢুকিয়ে দেয়ায় দুর্গন্ধযুক্ত পানি বের হচ্ছে। এ পানি ফুটালেও দুর্গন্ধ দূর হয় না।
নগরজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ি
সারা বছরই বিভিন্ন রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি চলে এই নগরীতে। সংস্কারের নামে যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ি যানজটসহ ভোগান্তি বাড়ায়। ওয়াসা, বিদ্যুৎ, তিতাস, সিটি কর্পোরেশনসহ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় না থাকায় রাজধানীজুড়ে সারা বছরই খোঁড়াখুঁড়ি লেগে থাকে। এতে নাগরিক দুর্ভোগ বাড়ে কয়েক গুণ। আবার পানির পাইপ, স্যুয়ারেজের লাইন, গ্যাস লাইন যেটার জন্যই রাস্তা খোঁড়া হোক না কেন, কাজ শেষে সেই রাস্তা আর ঠিক করার কোনো দায় থাকে না কারও।  
রাস্তার উপর মালামালের স্তূপ
রাজধানীর সড়ক, ফুটপাথ, অলিগলিসহ পথচারীদের চলাচলের রাস্তাগুলো মালামালের স্তূপ আর নির্মাণ সামগ্রীতে আটকা পড়ে আছে। কোন কোন রাস্তার বেশিরভাগ অংশই দখল করে মাসের পর মাস পণ্য সামগ্রীর স্তূপ বানিয়ে রাখা হয়েছে। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হচ্ছে নগরবাসীকে। রাস্তাজুড়ে এলোপাতাড়িভাবে ফেলে রাখা রড, বালু, তার, ইট, পাথর, লোহা-লক্কড়ে প্রায়ই আঘাত পাচ্ছে লোকজন, রিকশা-গাড়ির দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। ভুক্তভোগিদের মতে, বারবার আবেদন-নিবেদন করেও জনবহুল রাস্তাগুলো থেকে অবৈধভাবে রাখা নির্মাণসামগ্রীর জঞ্জালসমূহ অপসারণ করা যাচ্ছে না। রাস্তা দখল ও যত্রতত্র পণ্য সামগ্রী ফেলে রেখে জনচলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি রোধকল্পে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ ভূমিকা পালন করার কথা। কিন্তু নির্দিষ্ট দায়িত্বটি পালনের ক্ষেত্রে উভয় সংস্থার গাফিলতির অভিযোগ ভুক্তভোগিদের। নগরবাসী আরেক দুর্ভোগের নাম শব্দদূষণ। আবাসিক এলাকার মধ্যেই মিকচার মেশিনে অনর্গল ইট, পাথর, সুরকি ভাঙ্গানো এবং সিমেন্ট, বালু সংমিশ্রণের একটানা ঘর ঘর শব্দে কানে কথা শোনা যায় না। রাতে নির্মাণ যন্ত্রের শব্দে ঘুম হারাম হয়ে যায়।
ময়লা-আবর্জনায় দুর্গন্ধময় পরিবেশ
নগরীর প্রধান প্রধান রাস্তার উপরে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে রীতিমত ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় বসানো হয়েছে। একেকটি স্থানে ৭/৮টি করে কন্টেইনার বসিয়ে অলিগলি, বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা তুলে এনে সেসব কন্টেইনার ডাস্টবিনে রাখা হচ্ছে। এ যেনো ঘরের ময়লা রাস্তায় প্রদর্শনের মতো। কুড়িল, মালিবাগ, প্রগতি সরণি, বারিধারা ও মধ্যবাড্ডা এলাকায় এ ধরনের ময়লার বাজার আছে ঠিক রাস্তার মধ্যখানেই। যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে ধুলা-বালু ও ময়লা-আবর্জনাযুক্ত নোংরা পরিবেশ। রাস্তাগুলোও চলাচলের অযোগ হলেও কর্তৃপক্ষের নজর নেই।
মশার সঙ্গে বসবাস
দফায় দফায় বিদ্যুতের লোডশেডিং, তীব্র গ্যাস ও পানি সংকটের সঙ্গে মশার উপদ্রব নগর জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। মশার উপদ্রব বাড়লেও মশা নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়ছে না। মশা দমন, মশক প্রজননস্থলÑ যেমন ডোবা, নালা, বিল, ঝিল, নর্দমা ইত্যাদিতে নিয়মিত কীটনাশক ছিঁটানোর কথা থাকলেও সেসব বিষয় সিটি কর্পোরেশন শুধু বক্তৃতা, সেমিনার, লিফলেটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছে। মাঠ পর্যায়ে এখন আর আগের মতো মশক নিধন কার্যক্রম চোখে পড়ে না।
ওভারপাস-আন্ডারপাসে বেহাল অবস্থা
রাজধানীর বেশিরভাগ ওভারব্রিজ দীর্ঘদিন ধরেই বেদখল হয়ে আছে। ভিক্ষুক, পটেকমার, হকার ও বখাটেদের দখল কায়েম থাকায় ওভারব্রিজগুলোতে পথচারীরা সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এসব ভোগান্তির পাশাপাশি নতুন মাত্রা সংযোজন হয়েছে উলঙ্গ পাগল ও ভিক্ষুকদের উৎপাত। সব মিলিয়ে বিব্রতকর অবস্থার শিকার হচ্ছেন ব্রিজ পারাপারকারী মানুষজন। কোনো কোনো ওভারপাসগুলোর সিঁড়ির আশপাশের স্থানে ইতিমধ্যেই দোকনপাট গড়ে উঠেছে। নগরীর পুরাতন পাঁচটি প্রশস্ত ওভারব্রিজ দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে পায়ে হাঁটার মতো অবস্থা নেই। সেগুলোর সিঁড়ির গোড়া থেকে শুরু করে মধ্যবর্তী সবটুকু স্থানই সারাদিন ভাড়ার ভিত্তিতে দোকান বসছে। রাতে চলে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ। অন্যদিকে আন্ডারপাসগুলো এখন শতেক জঞ্জালে ঠাসা। রাস্তা পারাপার ক্ষেত্রে পথচারীরা পোহাচ্ছেন সীমাহীন ভোগান্তি। বজায় থাকছে না নিরাপত্তা। বিদ্যুৎ চলে যেতেই কারওয়ান বাজারের আন্ডারপাস পরিণত হয় অন্ধকার গুহায়। সেখানে মহিলারা শিকার হচ্ছেন নানা লাঞ্ছনার। গাবতলীর আন্ডারপাস পকেটমারদের দখলে। চলে দুর্বৃত্তদের আনাগোনা।
সন্ধ্যা হলেই অন্ধকারে
রাজধানীর ব্যস্ততম অনেক এলাকায় সড়ক বাতি অর্ধেক জ্বলে, অর্ধেক জ্বলে না। কাকরাইল ঘটা করে লাগানো সৌর বিদ্যুতের বাতিগুলো এখন পরিত্যক্ত। মিরপুর রোড ধরে ১০ নম্বর গোল চত্বর পর্যন্ত সড়কে যে অর্ধেক বাতি জ্বলছে তার মধ্যেও এক তৃতীয়াংশ অনেকটা না জ্বলার মতোই মিটমিট করছে। এসব সড়ক বাতির আলো আদৌ সড়কে এসে পৌঁছায় না। আবার এর মধ্যে কিছু বাতি মাঝে মাঝে বিজলীর মতো জ্বলছে এবং পরক্ষণেই নিভে যাচ্ছে দীর্ঘক্ষণের জন্য। ভুক্তভোগিদের মতে, সন্ধ্যায় মাগরিবের আজান ধ্বণির সাথে সাথে পাড়া, মহল্লা, অলিগলি যেন গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পর থেকে এই পুরো সড়ক পথে চলাচলকারী পথচারিরা দু’পাশের দোকান ও মার্কেটের আলো দেখে পথ চলেন। রাত ৯-১০টার পর সড়কের দু’পাশের মার্কেট ও দোকান বন্ধ হয়ে গেলে পুরো এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তখন সড়কে টহল পুলিশের তৎপরতাও কমে যায়। রাস্তার দখল নেয় মাদকসেবী, ছিনতাইকারীরা। এতে প্রায়ই পথচারীদের বিপদ ও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।  
অলিতে গলিতে মাদকের হাট
নগরীর প্রতিটি এলাকার অলিতে গলিতে এখন মাদকের হাট বসে। দিনে রাতে সমানে চলে উঠতি বয়সী সন্ত্রাসীদের আড্ডা। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত তাদের ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে। অথচ এদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই বিপদ। প্রতিটি এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদেরকে প্রশয় দেয় প্রভাবশালী রাজনীতিকরা। এ কারণে মানুষ মুখ বুঝে সব কিছু সহ্য করতে বাধ্য হচ্ছে। পুলিশ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে বলে ভুক্তভোগিদের অভিযোগ।  
খাদ্য ও পণ্যসামগ্রীতে ভেজাল
নগরীর কোন খাদ্যজাতদ্রব্যটি ভেজালমুক্ত তা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারবে না। চাল, ডাল, তেল, সাবান, আটা থেকে শুরু করে জীবন রক্ষাকারী ওষুধেও ভেজাল। এ ছাড়া ব্যবহার্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও নকল হচ্ছে। টাকা দিয়ে কিনতে গিয়ে আসল নকলের বিভ্রান্তিতে ভুগছে মানুষ। ফরমালিনযুক্ত মাছ আর কার্বইডযুক্ত ফল খেতে খেতে নগরবাসী যেনো অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এখন শীতের মৌসুমে গুঁড়েও ভেজাল দেয়া হচ্ছে। পুরান ঢাকার শত শত ভেজাল কারখানায় তৈরী হচ্ছে লাইট, ফ্যান, মশার কোয়েল, ঘি, পানের জর্দ্দা, সেমাই, নুডুলসসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী। আর ভেজাল মিনারেল ওয়াটার কারখানা তো নগরীজুড়েই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।
সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ মাস্তানদের তৎপরতা
সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাস্তানদের উৎপাত রাজধানীবাসীর অন্যতম প্রধান সমস্যা। এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে এই তিন শ্রেণীর উৎপাত নেই। নতুন বাড়ি করা থেকে শুরু করে মেয়ের বিয়ে দিতে গেলেও চাঁদা দেত হয়। সাথে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান তো আছেই। শীতের মৌসুমে এখন চলছে পিকনিকের চাঁদা। এলাকা ও পাড়া-মহল্লায়  প্রভাবশালী, সন্ত্রাসী, দখলদার, চাঁদাবাজরা পিকনিকের নাম করে চাঁদা দাবি করছে। এই টাকার অঙ্ক এলাকাভেদে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে চাঁদা দাবির ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। তার উপর তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীরে টেলিফোনে চাঁদাদাবির ঘটনা তো আছেই। এ ছাড়াও ছিনতাইকারী, পকেটমার, মলমপার্টি, অজ্ঞানপার্টির তৎপরতা নগরবাসীকে সব সময়ই আতঙ্কিত করে রাখে। সাম্প্রতিককালে বেড়ে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনাও নগরবাসীকে তটস্ত রেখেছে। ঘর থেকে বেরিয়ে একজন মানুষ জীবন নিয়ে ঘরে ফিরতে পারবে কি-না তার  কোনো গ্যারান্টি নেই এই নগরে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পরিকল্পনাবিদ ও ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর মো: নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরে মানুষ বাড়ছে, সে তুলনায় আয়তন বাড়ছে না। এতে করে মানুষের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। সরকার অবশ্য দীর্ঘমেয়াদী কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন করা জরুরী। তিনি বলেন, সরকারী হিসাবে ঢাকা শহরের বস্তিতে বাস করে ৮ লাখ মানুষ। প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরো অনেক বেশি। এই বিশাল জনগোষ্ঠির জন্য পানি, বাতাস, শব্দ সবই দূষিত হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে এখানে খাল ভরাট করা হচ্ছে, নগরায়ণ হচ্ছে, বুড়িগঙ্গার পানি দূষিত হচ্ছে। যানজটের ভোগান্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাকে এখন (গতকাল সন্ধ্যায়) ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। কিভাবে যাবো ভাবছি। সকাল থেকে যানজটের যে অবস্থার খবর দেখছি তাতে আমি শঙ্কিত। তিনি বলেন, পরিবহন সেক্টরের উন্নয়নের জন্য কৌশলগত মহাপরিকল্পনা আছে। সেগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা দরকার। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বড় বড় প্রকল্পেও ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যেগুলোর আগে আরও চিন্তা-ভাবনা করা উচিত ছিল। যানজট নিরসনে তিনি গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার উপর গুরুত্বারোপ করেন। বলেন, গণপরিবহন ব্যবস্থাপনার উন্নতি করতে হবে। রাস্তাঘাট দখলমুক্ত করে সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, ঢাকার সমস্যা সমাধানের জন্য রাজউক, সিটি কর্পোরেশন, তিতাস, ওয়াসা, ডেসা, সড়ক ও জনপথসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার।



 

Show all comments
  • Shaikh Islam ৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ২:৫৮ এএম says : 0
    I live in USA for a long time. Sometime I visit Bangladesh but never stay in Dhaka city. Because its make me too sick. But I love my home town and my village. That's why I still like to visit in Bangladesh.
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ৯:৪৩ এএম says : 0
    সাংবাদিক নূরুল ইসলাম তার মেধা ও অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদেরকে যে তথ্য বহুল খবর দিয়েছে এটা খুবই প্রশংসনীয় তাই আমি নূরুল ইসলামকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি জানি এই তথ্য বহুল সংবাদ পরিবেশনের পরও এর কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে না তারপরও আমি এর উপর দুটা কথা বলতে চাই। আমি একজন প্রবাসী আমি দেখেছে সেখানে পুলিশ থেকে শুরু করে নগরের সব রকম দায়িত্ব পালন করে সিটি কর্পোরেশন। যেকারনে সেখানে কোন একটা কাজ করতে হলে সবকয়টা দিক নিয়ে ভেবে তারপর কাজ করা হয়। আর এখানে ওয়াশা, সড়ক ও সেতু, বিদ্যুৎ, গ্যাস অর্থাৎ উন্নয়ন মূলক কাজ কর্ম বিভিন্ন দপ্তর থেকে করা হয় এবং কেহই কাওর কথা শুনেনে কারন তারা ভিন্ন ভিন্ন অধিদপ্তরের লোকজন। এতে করে একবার রাস্তা মেরামত করে গেল পরের মাশেই ওয়াশা খন্ন করে রাস্তার এক অংশের রারটা বাজাল আবার একমাস পর বিদ্যুৎ এসে রাস্তার অপ্রদিকের বারটা বাজাল, এরপর গ্যাস ইত্যাদি দপ্তর রাস্তাটাকে পূর্নাংগ ভাবে বারটা বাজাল। তাই জননেত্রী শেখ হসিনার এবিষয়ে আর ছাড় দেয়ার প্রয়োজন নেই তিনি এসব দপ্তর গুলোকে সিটি কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রতে দিয়ে দেয়া দরকার। আল্লাহ্‌ বাংলাদেশের আমলা ও রাজনীতিবিদদেরকে সততার সাথে চলার তৌফিক দান করুন। আমীন
    Total Reply(0) Reply
  • Salim ৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ৪:১২ পিএম says : 0
    Traffic Jam dhakar sobchaye boro somossa
    Total Reply(0) Reply
  • ফিরোজ ৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ৪:১৪ পিএম says : 0
    ঢাকার পরিবেশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • মিলন ৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ৪:১৭ পিএম says : 0
    ঢাকা এখন মশার শহরে পরিণত হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • জহির ৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ৪:১৮ পিএম says : 0
    আমার এই সমস্যাগুলো নিয়ে নিউজ করায় নূরুল ইসলাম ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাকা

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ