পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা: গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের খুনিরা এখনো আড়ালেই রয়েছে। পুলিশের দাবি সবদিক পর্যবেক্ষণ করে অগ্রসর হচ্ছেন তারা। গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা এমপি লিটনকে তার নিজ বাসার অতিথি কক্ষে গুলি করে পালিয়ে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পরেই তার মৃত্যু হলে প্রশাসনের টনক নড়ে। হত্যার পর র্যাব, পুলিশ, বিজিবিসহ সর্বোচ্চ পর্যায়ের গোয়েন্দারা খুনিদের সনাক্তসহ গ্রেফতার করতে মরিয়া হয়ে উঠলেও গত পাঁচ দিনে খুনিদের ধরা যায়নি। এদিকে এমপি খুন হওয়ার পর থেকেই মামলার বর্ণনা অনুযায়ী ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জামায়াত-শিবিরের দিকে সন্দেহের তীর ছোড়া হয়। কিন্তু বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনা চলছেই। কারণ এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল ছিল চরম পর্যায়ে। লিটন এমপি হওয়ার আগ থেকেই ছিল দলীয় কোন্দল। ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অডিটোরিয়ামহলে চলাকালে পরবর্তীতে আরেক দিন সভা হবে বলে ঘোষণা দিয়ে মুলতবি করা হয়। এ সভায় জেলা নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সভা মুলতবি ঘোষণা করে চলে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের একটি অংশ লিটনের উপর হামলা চালায়। এরপর দু’গ্রুপে পাল্টা-পাল্টি মিছিল ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়। দুই পক্ষ থেকেই মামলা করা হয়। এছাড়া গত বছর শিশু শুভকে গুলি করার পর আওয়ামী লীগের একটি অংশ এমপিকে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভসহ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করে কয়েকদিন ধরে। সেই সময়ে এমপির আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করে অস্ত্র জমা নেয়া হয়। কিছুদিন পুলিশ তার নিরাপত্তা দিলেও কয়েকমাস থেকে নিরাপত্তা দেয়া হয়নি। এর কিছুদিন পর সুন্দরগঞ্জ ডি ডব্লিউ ডিগ্রি কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় পর্বের অধিবেশনে কমিটি গঠন করা হবে বলে নেতৃবৃন্দ এমপির বাড়িতে দুপুরের খাওয়া খেয়ে আর ফিরে আসেনি। এ ঘটনায়ও আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ সম্মেলনের স্টেজসহ চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। এমনকি ওই রাতেই উপজেলা শহরের বিভিন্নস্থানে সাটানো এমপির ছবি সম্বলিত পোস্টার, প্যানা, ফেস্টুন ও বিল বোর্ড কে বা কারা সড়িয়ে ফেলে। এ ঘটনায়ও পাল্টা-পাল্টি মামলা করা হয়। কিন্তু দলীয় কোন্দলটা কখনো নিরসন হয়নি। এ ছাড়া এমপি লিটনের কাছে সবসময় অসংখ্য নেতা-কর্মী থাকত। এমপিকে গুলি করার সময় কেনই বা তেমন লোকজন ছিল না। এ নিয়ে নানান প্রশ্নের ঝড় উঠেছে। এমপির সুরক্ষিত বাড়িতে ঢুকে গুলি করে নির্বিঘেœ চলে যাওয়াটাও সহজসাধ্য নয়। বাড়ির সিসি ক্যামেরাও গত তিন মাস থেকে নষ্ট। এমপি লিটনকে হত্যার পর সুন্দরগঞ্জ উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে গতকাল বুধবার দিন পর্যন্ত ৩৯ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও প্রকৃত হত্যাকারী সনাক্ত না হওয়ায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তাই পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দফায় দফায় খুনের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে বৈঠক করছেন। এমপি গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় তার বাড়িতে থাকা বড় শ্যালক সৈয়দ বেদারুল আহসান বেতার ও এমপির সহধর্মিণী সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতি, এমপির ঘনিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সুজাসহ আরো বেশ কিছু ঘনিষ্টজনদের গত মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন তথ্য জানার চেষ্টা করেছেন। এদিকে এমপির লাশ দাফনের ২৪ ঘণ্টা না যেতেই তার সহধর্মিণী ছেলে সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। এমপির খুনের মামলার বাদীও হয়েছেন তার ছোট বোন ফাহমিদা বুলবুল কাকলী। এগুলো নিয়েও বিভিন্ন কথা উঠছে। এ ছাড়াও গত তিন বছরে তিন-চারবার এমপি লিটন জামায়াত-শিবিরের হামলার শিকার হলেও পুলিশের কারণে বেঁচে যান। এখন কে বা কারা এমপিকে খুন করতে পারে তার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে পুলিশ গভীরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এমপির বাড়িটি পুলিশ পাহারায় রয়েছে। সব মিলেয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে সর্বত্র। এ নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, হত্যাকারীদের সনাক্তসহ গ্রেফতার করতে আমরা তৎপর। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হব। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু হায়দার মো: আশরাফুজ্জামান জানান খুব শীঘ্রই আসল তথ্য জানতে পারবেন। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।