Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

এবার কলা চাষে ফ্রুট ব্যাগিং

| প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাজশাহী ব্যুরো : আম, পেয়ারার পর এবার কলা চাষে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি চালু হলো। ফলে ভোক্তাদের আর জোর করে পাকানো কলা খেতে হবে না। বিষমুক্ত কলা পাওয়া যাবে হাতের নাগালেই। কলা উৎপাদনে সাধারণত কীটনাশকসহ নানা রকম সারের ব্যবহার করা হয়।
কলা পাকাতে কিংবা মোটা করতেও বিভিন্ন ধরনের বিষ মাখানো হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। গবেষকরা বলছেন, ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তির মাধ্যমে বিষমুক্ত কলা চাষ করা যায়। এই পদ্ধতিতে কলা উৎপাদন সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডের মতো দেশে ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তির মাধ্যমে কলার বাণিজ্যিক উৎপাদন হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এই পদ্ধতিতে কলার চাষ খুব একটা হয় না। বিষমুক্ত কলা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।
সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও বাংলাদেশে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে কলা চাষ শুরু হয়েছে। রাজশাহীর পবা উপজেলার বিরস্তইল গ্রামের চাষি সুজাম্মেল হক। তিনি এই পদ্ধতিতে প্রথম কলা চাষ শুরু করেছেন। গত মৌসুমে আমের চাষ করে তিনি বাড়তি কয়েক লাখ টাকা আয় করেন। তাঁর আশা, কলা চাষ করে তিনি বাড়তি আয় করবেন।
কৃষি পরিসংখ্যান অনুসারে, এ দেশে ৪৬ হাজার ৭৩৪ হেক্টর জমিতে কলার চাষ হয় এবং এর মোট উৎপাদন ৭৭ লাখ সাত হাজার ৪২৭ মেট্রিক টন। এর মধ্যে রাজশাহী জেলায় প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে কলার চাষ হচ্ছে, যার উৎপাদন প্রায় ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। উৎপাদনের দিক থেকে আমের পরই কলার চাষ হয় এই অঞ্চলে।
আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণাকেন্দ্র চাঁপাইনবাবগঞ্জের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরফ উদ্দিন জানান, কলা বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ফল। এটি সুস্বাদু, সহজলভ্য ও পুষ্টিকর। ফিলিপাইন, থাইল্যান্ডের মতো দেশেও কলার বাণিজ্যিক উৎপাদনে ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তিটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু এখনো পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। তবে ভালোমানের কীটনাশক ও দাগমুক্ত কলা উৎপাদনে বহুমুখী গবেষণা কার্যক্রম এরই মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
পরীক্ষামূলকভাবে কলায় কাগজের তৈরি বিশেষ ধরনের ব্যাগ ব্যবহার করে চাষিরা সুফল পাওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি। এরই ধারাবাহিকতায় পবা উপজেলার বিরস্তইল গ্রামের কলাচাষি সুজাম্মেল হকের বাগানে বাণিজ্যিকভাবে ব্যাগিং শুরু করা হয়।
জানা যায়, গত বছর ২৪ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতিতে কলাচাষের উদ্বোধনও করা হয়।
কলাচাষি সুজাম্মেল হক এ পদ্ধতিতে কলা চাষ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বর্তমানে ব্যবহৃত বিশেষ ধরনের কাগজ দ্বারা তৈরি ব্যাগগুলো কলায় ব্যবহার করলে কোনো ধরনের দাগ পড়ছে না। এমনকি কোনো রোগ ও পোকার আক্রমণও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এতে করে বাজারের অন্যান্য কলার তুলনায় ব্যাগিং পদ্ধতির কলার দাম বেশি পাওয়া যাবে। আবার কীটনাশক ব্যবহারের ফলে যে ব্যয় হতো, সেটিও আর হবে না। ফলে দুই দিক থেকেই লাভবান হবেন চাষিরা। বিঘাপ্রতি ১০-২০ হাজার টাকা কৃষকদের অতিরিক্ত আয় হবে। পাঁচ বিঘা জমি থেকে অতিরিক্ত আয় হবে অন্তত এক লাখ টাকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফ্রুট ব্যাগিং
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ