পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাছরুল ইসলাম নাবিল, রাবি থেকে : দুর্গম পথ চলতে সহায়ক এমন একটি ‘কোয়াড বাইক’ উদ্ভাবন করেছেন এবার রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) একঝাঁক তরুণ শিক্ষার্থী। যা বাংলাদেশের অটোমোবাইল জগতের উদ্ভাবনী ইতিহাসে প্রথম। বাইকটিতে একটি দেশি কোম্পানির ১৫০ সিসির মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। ৬০ কিলোমিটার বেগে তাদের তৈরি কোয়াড বাইকটি পাহাড় বা দুর্গম অঞ্চলের মাটির রাস্তায় চলতে পারবে। এতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চারটি চাকা লাগানো হয়েছে। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে রুয়েটের মেশিনশপেই তৈরি করা হয়েছে এটি। এবার তারা এ কোয়াড বাইক নিয়ে ফর্মুলা ওয়ান প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা উড়াতে চান। আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ইউরোপের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এক আসনের গাড়ির এই বিশেষ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। বর্তমানে সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
উদ্ভাবক দলের নেতা সুমিত কুমার জানান, তারা সবাই রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম থেকে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। রুয়েটের দুইজন ফ্যাকাল্টি অ্যাডভাইজরের (অনুষদ উপদেষ্টা) সহযোগিতায় তারা দশজন মিলে প্রায় তিন মাসের প্রচেষ্টায় কোয়াড বাইকটি তৈরি করেছেন। গবেষণা পর্যায়ে থাকায় তাদের এই বাইকটি বানাতে খরচ হয়েছে দুই লাখ টাকা। তবে এখন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে রি-প্রডাকশনে গেলে বাইকটির পেছনে প্রায় ৬০ হাজার টাকা ব্যয় হবে।
টিমের সাংগঠনিক নাম উচ্চারণ করে সুমিত কুমার দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ‘ক্র্যাক প্লাটুন’ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ করে ওই সময় কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছিল। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে তাদের টিমের নামও ক্র্যাক প্লাটুন রাখা হয়েছে। তাদের লড়াই হচ্ছে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে দেখতে পাওয়া।
উদ্ভাবক দলের সদস্য শাফিন মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে তারাই প্রথম কোয়াড বাইক তৈরি করেছেন। বর্তমানে এটির আরো অত্যাধুনিক রূপ দেয়ার চেষ্টা করছেন। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য ডিজাইনেও পরিবর্তন আনতে চাইছেন। এজন্য পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। বাইকটি বানানোর পর গত বছরের ২২ অক্টোবর ভারতের তামিল নাড়ুতে অনুষ্ঠিত কোয়াড বাইক ডিজাইন চ্যালেঞ্জে আমাদের ক্র্যাক প্লাটুনের টিম অংশ নেয়। এতে ২৩ ফাইনালিস্টের সঙ্গে লড়াই করে চ্যাম্পিয়ন হই আমরা। সঙ্গী ছিল নিজেদের তৈরি এই কোয়াড বাইকটি।
আরেক তরুণ উদ্ভাবক মুসা মাহমুদ রানা বলেন, সবার নজর কাড়তে এবার তারা জার্মানিতে অনুষ্ঠিতব্য ফর্মুলা ওয়ানে অংশ নিতে যান। ফর্মুলা ওয়ান এফ এক নামে বিশ্বব্যাপী পরিচিত ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ। ইন্টারন্যাশনাল অটোমোবাইল ফেডারেশন (এফআইএ) চক্রাবৃত্তে এই ফর্মুলা ওয়ান ক্রীড়া প্রতিযোগিতাটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আয়োজন করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি গাড়ি প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা। এবার সেখানে বাংলাদেশের পতাকা উড়াতে চান তারা।
এ ব্যাপারে রুয়েট ভিসি প্রফেসর মোহাম্মদ রফিকুল আলম বেগ বলেন, ছাত্ররা রুয়েটের পৃষ্ঠপোষকতায় কোয়াড বাইকটি তৈরি করেছে। এখন তারা জার্মানিতে ফর্মুলা ওয়ানে অংশ নিতে চাইলে অনেক অর্থের প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। জানালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।