পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তারেক সালমান : প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও জেলার প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের নেতারা। অর্থের বিনিময়ে ও অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে বিএনপি-জামায়াত, নব্য আওয়ামী লীগার, রাজাকারের সন্তান, মাদক ব্যবসায়ী, চোর-সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন অপরাধের আসামিকে দলের প্রার্থী হিসেবে নাম প্রস্তাব করা হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ করেছেন তারা। আবার নারী হওয়ায় অনেককে বঞ্চিত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। দলীয় প্রতীকে প্রথম ইউপি নির্বাচনে তৃণমূলের মতামত যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি বলে তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকের আশংকা তৃণমূলের এ ক্ষোভ স্থানীয় সরকার পরিষদের সর্বপ্রথম ধাপের এ ইউপি নির্বাচনের ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে দলের একাধিক যোগ্য প্রার্থী থাকায় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কেন্দ্রকে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে লিখিত এমন অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগগুলো বিশ্লেষণ করছেন দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এসএম কামাল হোসেন ও আমিনুল ইসলাম আমিন। খুব শিগগিরই তা আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাছে এসব অভিযোগ উত্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। যদিও গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার/ইউনিয়ন নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তৃণমূলের প্রস্তাব ও তিন স্তরের জরিপ রিপোর্টের ভিত্তিতে ৭৩৯ ইউপিতে প্রার্থী ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত করা হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার আগেই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
দলের দপ্তরে সরাসরি এসে ফ্যাক্স ও ই-মেইলের মাধ্যমে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের নেতারা।
ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় প্রভাব খাটিয়ে বিএনপি-জামায়াত ও রাজাকারের সন্তানকে মনোনয়ন দেয়ার তৃণমূলের অভিযোগ দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক নাকচ করে দেন। এ সম্পর্কে তিনি শুক্রবার বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সম্পর্কে যেসব সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে তা সত্য নয়।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, চুলচেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমেই ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে। সমাজবিরোধী কাউকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, এটা কেউ দেখাতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, রাজাকার, আলশামস, বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর কেউ মনোনয়ন যেন না পায়, এ জন্য কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জামায়াত-রাজাকার কিংবা বিএনপির সন্ত্রাসীরা মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে আমাদের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় অবস্থান তৈরি করতে পারেনি। এমন সংবাদের মাধ্যমে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকেই নয়, কুঠারাঘাত করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের মূলেও।
তৃণমূল থেকে একক প্রার্থীর নাম পাঠানোর জন্য দলের জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা চেয়ারম্যান প্রার্থীদের তালিকা কেন্দ্রে পাঠান।
পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলাধীন মরিচবুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন মৃধা, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল ওহাব মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক মো. জালাল উদ্দিন হাওলাদার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে লিখিত অভিযোগ করেন, মরিচবুনিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সকল ইউনিয়ন কমিটিকে বাদ দিয়ে একজনের নাম তৃণমূলের মনোনয়ন বোর্ড কেন্দ্রে পাঠিয়েছে। তাদের অভিযোগ মাদারবুনিয়া ইউনিয়নে বিএনপির জেলা শাখার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে (বর্তমানে আওয়ামী লীগে যোগদানকারী) প্রার্থী হিসাবে নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
পটুয়াখালীর মাদারবুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি লতিফ সিকদার অভিযোগপত্রে বলেছেন, ইমরান আহমেদ জুয়েলকে মনোনয়ন বঞ্চিত করার জন্য জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়ার নির্দেশে কোনো কারণ ছাড়াই ইউনিয়ন কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি গঠন এবং ওই কমিটির মাধ্যমে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমানকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এ জেলার স্থানীয় উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের রাঙ্গাবালি ইউনিয়নে সাইদুজ্জামান মামুনকে মনোনয়ন দিলেও জেলা নেতারা তা মানছেন না বলে অভিযোগ এসেছে। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন থেকেও অনিয়মের অভিযোগ পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজারের মহেষখালীর ধলঘাটা ইউনিয়নে মনোনয়নের বেলায় উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটির সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে স্থানীয় এমপি তার পছন্দের ব্যক্তির নাম পাঠিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
কক্সবাজার থেকে অভিযোগে বলা হয়েছে, জেলা নেতারা বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন থেকে আসা প্রার্থী তালিকায় রদবদল করেছেন।
সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নে রাজাকারের সন্তান গাজী শওকত হোসেনকে একক প্রার্থী হিসাবে নাম প্রস্তাব করার অভিযোগ করা হয়েছে। তৃণমূলের আট নেতা লিখিত এ অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারীরা বলেন, ’৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে গাজী শওকত হোসেনের বাবা রাজাকার থাকাকালে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের বাড়িতে ডিনামাইটের বিস্ফোরণ ঘটায়।
দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-বিবাদের কারণে পটুয়াখালীর দশমিনার বর্তমান চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ লিটন দলের মনোনয়নই চাইতে পারেননি। তাকে স্থানীয়ভাবে তৈরি করা নির্ধারিত ফরম পূরণের সুযোগও দেয়া হয়নি। তিনি নিজে এসে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এ অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
জানা গেছে, অনেক ইউপিতে দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক ছিল। তাই তৃণমূল নেতারা চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী বাছাইয়ে রীতিমতো হিমশিম খান। এতে করে বেশিরভাগ ইউনিয়নেই যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ে বড় ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়। প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় না থাকার কেন্দ্রীয় নিদেশনার পরও স্থানীয় এমপিদের অনেকেই বিপত্তি বাড়িয়েছেন। তারা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেক ইউপিতে এমপিদের পছন্দের প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠাতে বাধ্য হয়েছে তৃণমূল।
জানা গেছে, তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে আসা অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে একাধিক বৈঠক করেন দলের কেন্দ্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করে স্থানীয় সরকার/ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের কাছে তা উপস্থাপন করা হয়। অভিযোগ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবদুস সোবহান গোলাপ, আফজাল হোসেন, আমিনুল ইসলাম আমিন।
গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার প্রায় দিনব্যাপী আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি কার্যালয়ের সামনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। এদের মধ্যে এইচএম মুরাদ হোসেন নিজেকে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌর যুবলীগের সভাপতি পরিচয় দিয়ে রাখঢাক না করেই বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক টাকা খেয়ে রাজাকার পরিবারের কাছে নৌকা বিক্রি করেছেন। এই ইউনিয়ন থেকে দুইজনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। দুইজনই চিহ্নিত রাজাকার পরিবারের সদস্য। তাদের পরিবারের সদস্যরা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলেও অভিযোগ করেন তিনি। কেন্দ্রে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার সাচিয়াদহ ইউনিয়নে বিএনপি সমথক, যুবলীগ নেতা হত্যা মামলার আসামী, ভিজিএফের চাল ও গাছ চুরি মামলার আসামী বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম আলমগীর শিকদারকে দল মনোনয়ন দিয়েছে বলে দাবি করে কেন্দ্রে অভিযোগ জমা দেয়া হয়েছে। সেখানে তার নাম বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা উকিল উদ্দিন লস্করকে মনোনয়ন দিতে আবেদন করা হয়েছে। এতে স্বাক্ষর করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এফ এম অহিদুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক কেএম আলমগীর হোসেন।
পটুয়াখালী জেলার রায়পুর ইউনিয়নের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুর রহমান মুক্তা মিয়া বলেন, পটুয়াখালীর অধিকাংশ ইউনিয়নেই জেলার নেতারা অর্থের বিনিময়ে একক সিদ্ধান্তে প্রার্থী দিয়েছেন। তৃণমূলের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি, পরামর্শ নেননি। যদিও নেত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন ইউনিয়ন নেতাদের নিয়ে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার।
কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়ন নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী আনোয়ার হোসেন শিকদার পটুয়াখালী-৪ আসনের এমপি মাহবুব তালুকদারের বিরুদ্ধে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ আনার পাশাপাশি প্রভাব বিস্তারেরও অভিযোগ করেন। পাশাপাশি দুই উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রতিটিতে এমপি একই কাজ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বিষয়টি ওবায়দুল কাদের ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের কাছে জানিয়েছেন বলে জানান বঙ্গবন্ধু সমসময়ের এই তৃণমূল রাজনীতিক।
এছাড়া সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়ার বিরুদ্ধে মাদারবুনিয়া ইউনিয়নে বিএনপি নেতা মতিউর রহমানকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেয়ারও অভিযোগ জমা পড়েছে। তিনি অর্থের বিনিময়ে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম মিয়াকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দিয়েছেন। অভিযোগপত্রের সঙ্গে বিএনপির কমিটির তালিকাও যুক্ত করা হয়েছে।
একই জেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন মৃধা, সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল ওহাব মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক মো. জালাল উদ্দিন হাওলাদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মো, আলী আজগর মাস্টারসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাদের বাদ দিয়ে গরু চোর জাকির প্যাদার নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
বাগেরহাট উপজেলার শরণখোলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন আকন্দ লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল মনোনীত ৪টি ইউপির প্রার্থী তালিকা পরিবর্তন করা হয়েছে। তিনি প্রকৃত প্রার্থীদের নাম ও প্রাপ্ত ভোট সংবলিত কাগজ কেন্দ্রে জমা দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, তৃণমূল মনোনীত তালিকা জেলা পরিবর্তন করে অন্যদের নাম পাঠানো হয়েছে।
জেলা কমিটির সঙ্গে সঙ্গে মনোনয়নে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগও অপ্রতুল নয়। অভিযোগ জমা পড়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্যর প্রভাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন করাপুর ইউনিয়নের হাবিবুর রহমান খোকন, চরবাড়িয়ায় ইটালি শহিদ, চরমোনাইয়ে নুর ইসলাম মাস্টার ও চানপুরায় হেলাল উদ্দিন। হিজলায় স্থানীয় এমপির প্রভাবে মনোনয়ন পেয়েছেন বড়জালিয়া ইউনিয়নে শাহাবুদ্দিন আহমেদ, গুয়াবাড়িয়ায় অধ্যাপক শাহাজান তালুকদার আর মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়ায় আলতাফ হোসেন সর্দার ও বিদ্যান্দপুরে আবদুল জলিল।
বরগুনার আমতলী থানার আরপাঙ্গাসিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জমা দেয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, এখানে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন ৫ জন ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা। কিন্তু তাদের কাউকেই মনোনয়ন না দিয়ে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে সুলতান আহমেদ নওয়াবকে। নওয়াব আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত নন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, ইউনিয়ন পর্যায়ে কোন ভোট না করেই থানা সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক ওই ইউনিয়নের নেতাদের নাম বাদ দিয়ে নওয়াবের নাম পাঠিয়েছেন।
ওই ইউনিয়নের ৭৮ জন নেতার স্বাক্ষরিত অভিযোগ পত্রে বলা হয়, ওই ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান থানা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে আপসের ভিত্তিতেই নওয়াবকে প্রার্থী করা হয়েছে। এই আসনে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বিএনপি প্রার্থী মতিউর রহমান তালুকদারের ভাগ্নে আবুল কালাম আজাদ।
আমতলী থানার আঠারগাছী ইউনিয়নে সাবেক বিএনপি নেতা হারুনুর রশীদকে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রে নাম পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ জমা পড়েছে। সাতক্ষীরা জেলার তালা থানার খেসড়া ইউনিয়নের মনোনয়ন প্রত্যাশী কৃষিবিদ মুর্শিদা পারভীন পাপড়ী অভিযোগে বলেন, নারী প্রার্থী হওয়ায় তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা প্রার্থী নির্বাচনের তৃণমূলের ভোটের সময় ভোটারদের ভয়ভীতি ও লোভ-লালসা দেখিয়ে তাকে মাত্র দুই ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন। এরপর কেন্দ্রে নাম পাঠানোর সময় তাকে বাদ দিয়ে শুধু সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া ব্যক্তির নামই পাঠানো হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় দলে এ ধরনের ছোটখাটো সমস্যা থাকবে। তারপরও আমরা এসব অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। যেন এমন কেউ মনোনয়ন না পেয়ে যায়, যার মাধ্যমে দলের ক্ষতি হয় হবে। তাছাড়া প্রতিটি জায়গায় দলের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। এদের প্রায় সবাই যোগ্য ও ত্যাগী। কিন্তু সবাইকে তো আর মনোনয়ন দেয়া সম্ভব না। এজন্য সব দিক বিবেচনা করে একজনকে দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি খুব একটা সহজ কাজ নয়। তবে দ্রুত বিষয়গুলো মিটে যাবে বলে তিনি জানান।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করব। সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, দল করলে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। কেউ দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।