Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অরক্ষিত এমপি হোস্টেল

| প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

হাবিবুর রহমান : জাতীয় সংসদের মানিক মিয়া এভিনিউ’র এমপি হোস্টেলের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাশে নাখালপাড়ার এমপি হোস্টেলে কোনো সিসি ক্যামেরা নেই এবং অনেকটাই অরক্ষিত।  
আততায়ীর গুলিতে নিহত গাইবান্ধা-১ আসনের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের হত্যাকা-ের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠিত সংসদ সদস্যরা। বিশেষ করে সংসদ সদস্যদের মানিক মিয়া এভিনিউর ছয়টি ও নাখালপাড়ার চারটি বাসভবন নিয়ে এই উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। এজন্য এমপিদের বাসভবনে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার এবং এমপিদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিধানে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানিয়েছেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া। জাতীয় সংসদের নাখালপাড়া এমপি হোস্টেলে দ্রুত সিসি ক্যামেরা লাগানোর প্রস্তাব দিয়েছেন জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় গাইবান্ধা-১ আসনের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের জানাযার আগে ডেপুটি স্পিকার বলেন, সব সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয় আমাদের সঙ্গে একমত পোষণ করে এমপিদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবেন।
এ প্রসঙ্গে সহকারী সচিব (হোস্টেল) আব্দুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, মাননীয় চীফ হুইপ সংসদের হাউজ কমিটিতে প্রস্তাব দিয়েছেন। সংসদের এমপি হোস্টেলগুলোর নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে  সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে। সংসদ সচিবালয়ের হোস্টেল শাখা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে। আমরা প্রস্তাব পেয়ে আজ (সোমবার) ফাইল উত্থাপন করেছি। তিনি বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। গণপূর্ত বিভাগ কাজ করবে। তিনি জানান, মানিক মিয়া এভিনিউ’র ছয়টিতে গণপূর্ত বিভাগ সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছে। এ জন্য তাদের দায়িত্ব দেয়া হবে। সংসদ সচিবালয়ের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, সংসদ ভবন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তায় সার্জেন্ট অ্যাট আমর্সের নেতৃত্বে সব মিলিয়ে তিন শতাধিক নিরাপত্তাকর্মী পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করেন।  নৌ ও বিমানবাহিনী, পুলিশ, আনসারের সদস্যদের নিয়ে এ নিরাপত্তাবলয় গঠিত।
সংসদ ভবন এলাকার চারপাশের ছয়টি প্রবেশপথে নিরাপত্তা চৌকি বা বাঁশকল দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করে। এর মধ্যে তিনটি প্রবেশপথ দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ। এ ছাড়া পুলিশের একটি টহল দলের সংসদ ভবনের চারপাশে সার্বক্ষণিক টহলের নির্দেশনা আছে। এর জন্য জাতীয় সংসদ থেকে আলাদা গাড়ি ও জ্বালানি তেলের বরাদ্দও রয়েছে। এমপি হোস্টেলে বহিরাগতদের অফিস খোলা এবং অবাধে যাতায়াত জাতীয় সংসদের নিরাপত্তার দুর্বলতা কি না- জানতে চাইলে সংসদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস আশরাফুল ইসলাম বলেন, সংসদের নিরাপত্তা খুব সুন্দরভাবে চলছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে কোন বাহিনীর কতজন আছেন, জানতে চাইলে তিনি জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে মানিক মিয়া এভিনিউয়ের ন্যাম ভবনের ছয়টি বিল্ডিংয়ে ২১৬টি ফ্ল্যাট রয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রীর অফিসের পেছনের দিকে নাখালপাড়ায় রয়েছে আরো ১০৮টি ফ্ল্যাট। সংসদ সদস্যদের রেফারেন্সে তাঁদের সহকারী ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাই  হোস্টেল এলাকায় অবস্থান করেন। এ সুযোগে অপরাধীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে জাতীয় সংসদের সংসদ (হাউস) কমিটি। ২০১৫ সালের ২২ এপ্রিল ৬ নম্বর ব্লকে অজ্ঞাত পরিচয় এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ এ হত্যাকা-ের কোনো কূলকিনারা বের করতে পারেনি। এছাড়া ২০১০ সালের ১৩ আগস্ট রাতে ঢাকা মহানগরীর ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা ইব্রাহিম সংসদ ভবন এলাকায় নিহত হন। এমপি হোস্টেলের গেটের কাছে ভোলা-৩ আসনের সরকারদলীয় এমপি নূরুন্নবী চৌধুরী শাওনের গাড়িতে তাঁরই ব্যক্তিগত অস্ত্রের গুলিতে নিহত হন ইব্রাহিম। ঘটনার সঙ্গে এমপি শাওনের নাম আলোচিত হলেও শেষ পর্যন্ত  তিনি মামলার তদন্ত থেকে রেহাই পান। ২০১৩ সালের শুরুতেই জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরের এমপি হোস্টেলের একটি বাথরুমে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ পাওয়া গিয়েছিল। ওই সময় বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এমপি হোস্টেল

৩ জানুয়ারি, ২০১৭
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ