পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ ইসিসহ নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার প্রয়োজন বিএনপি বা ধআওয়ামী লীগার বুঝি না মানুষ হত্যা-গুম বন্ধ করতে হবে
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বিএনপিকে তিন বার ক্ষমতায় নিয়ে এসেছি। এই সরকারের বিরুদ্ধে যথাসময়ে আন্দোলন হবে। আবার ক্ষমতায় আসবে ইনশাল্লাহ।
নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি জানিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শুধু নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন হলেই চলবে না, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, বছরের নতুন দিন খবরের কাগজ খুলে দেখতে পেলাম হত্যা, খুন, গুমের চিত্র। বিএনপি-আওয়ামী লীগ বুঝি না, এই হত্যা, খুন, গুম বন্ধ করতে হবে।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে রোববার সন্ধ্যায় ছাত্রদলের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছর উপলক্ষে ছাত্রদল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে তিনি জাতীয় পতাকা ও সংগঠনের পতাকা এবং পায়রা অবমুক্ত করে সমাবেশের শুভ উদ্বোধন করেন।
পরে দীর্ঘ বক্তব্যে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল, আছে, থাকবে। কিন্তু যারা দেশে সঙ্গে বেঈমানী করছে, দেশেকে অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে তাদেরকে মানুষ ক্ষমা করবে না। আল্লাহ ও ক্ষমা করবে না।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই এই শ্লোগান আমি মানতে রাজি না। কারণ রাজপথে থাকার কথা, রাজপথ থাকেনি। রাজপথ ছাড়ি নাই বললে ভুল হবে, দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও রাজপথে থাকে নাই।
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে দেশকে ধ্বংস করতে চায়। তারা ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করতে নতুন নতুন আইন করছে।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা, গোয়েন্দা, গোয়েন্দা, এখানে বাংলাদেশের না অন্য দেশের গোয়েন্দা আছে এটাও জানা দরকার। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, একটি স্বাধীন দেশে অন্য দেশের গোয়েন্দা থাকতে পারে না। নিজেদের দেশের স্বার্থ নিজেদেরই রক্ষা করতে হবে।
পুলিশের উদ্দেশে বলেন, আইন ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং ইউনিফর্মের মর্যাদা রক্ষায় কথায় কথায় গুলি করা বন্ধ করুন। আপনারাও এ দেশের মানুষ যাদের গুলি করে হত্যা করছেন তারাও এ দেশেরই মানুষ। কাজেই দেশবাসী জানতে চায়, এরা (পুলিশ) কী বাঙ্গালী নয়, বাংলাদেশী মানুষ নয়।
তিনি বলেন, বছরের নতুন দিন খবরের কাগজ খুলে দেখতে পেলাম হত্যা, খুন গুমের চিত্র। বিএনপি-আওয়ামী লীগ বুঝি না। এ হত্যা, খুন গুম বন্ধ করতে হবে।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা পরিকল্পিতভাবে দেশটা ধ্বংস করে দিতে চায়। দেশকে অন্য দিকে ঠেলে দিতে চায়। এই জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি। শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দিতে পারে না। বর্তমান সরকার স্বৈরাচার এরশাদের চেয়ে এক ডিগ্রি বেশি স্বৈরাচার বলে মন্তব্য করেন।
সরকারের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, যারাই নতুন কোনো প্রকল্প নিয়ে আসে তাই কমিশনের বিনিময়ে গ্রহণ করে এবং বড় কমিশনটা তারা নিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া একটা কথা বললেই শিয়ালগুলো হুক্কা হুয়া করে উঠে। যখন সীমান্তে বিএসএফ (ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী) যখন গুলি করে মারে তখন শেয়ালগুলোর মুখ বন্ধ করে থাকে। এসময় তিনি বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত ফেলানীর নাম উল্লেখ করেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, নতুন ইসি আমি বিএনপির মত করে চাইনি। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের কথা বলেছি। শুধু নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ হলেই হবে না। প্রেসিডেন্টের সাক্ষাতে সহায়ক সরকার চেয়েছি। যারা নিরপেক্ষ সরকার হবে। যারা ইসিকে সহায়তা দিবে। কারণ, আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৪ দলে কারা আছে, মহাজোট আছে, থাক, তারা কোনো দিনও নির্বাচিত হতে পারেনি। জামানতটাও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তারা আওয়ামী লীগকে ছাড়তে চায় না। তারা চায় না আওয়ামী লীগের প্রসার ঘটুক।
ছাত্রদলের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, দল গুছিয়ে আমরা আবার ক্ষমতায় আসবো। এটা হউক আজকের দিনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তোমাদের শপথ। কমিটি গঠনে কোনো লবিং কাজ হবে না।
কারো নাম উল্লেখ না করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে নিজ দলের নেতাকর্মীরা কাকুতি মিনতি করলেও তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চাননি। আর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুুল কাদের ভুঁইয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আল-মেহেদি তালুকদার।
অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের সাবেক নেতা শামসুজ্জামান দুদু, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, আমানউল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, নাজিমউদ্দিন আলম, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, শফিউল বারী বাবু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমীরুল ইসলাম খান আলীম উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুুল মঈন খান, আব্দুুল মান্নান, এ জেড এম ডা. জাহিদ হোসেন, নাজমুল হক নান্নু, আতাউর রহমান ঢালী, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিলকিস জাহান শিরিন, আফরোজা আব্বাস, আনোয়ার হোসেইন, হাফেজ আব্দুুল মালেক, শিরিন সুলতানা, রেহানা আখতার রানু, নিলোফার চৌধুরী মনি, রাশেদা বেগম হীরা, শাম্মী আখতার, মারুফ কামাল খান।
অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, ওবায়দুল ইসলাম ও আব্দুুল লতিফ মাসুম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিকেল ৩টায় গুলশানের নিজ বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে রওনা দেন বিএনপি প্রধান। সড়কে যানজটে প্রায় আধাঘণ্টা আটকা পড়েন। বেলা ২টায় ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও প্রধান অতিথি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আগমনে বিলম্ব হওয়ায় বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়।
এর আগে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্রদল নেতারা স্লোগান দিয়ে ব্যানার ফেষ্টুন নিয়ে সমাবেশস্থলে যোগ দেয়।
প্রথম প্রহরে কেক কাটা :
এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রথম প্রহর রাত ১২ টা ১ মিনিটে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেক কেটে দিবসের শুভ উদ্বোধন করেছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সাবেক ছাত্রনেতা এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাবেক ছাত্র নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান, সহ-সভাপতি আবু আল আতিক হাসান মিন্টু, নাজমুল হাসান, শাহাদত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহবুব মাছুম শান্তসহ ছাত্রদলের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাজিব আহসানকে সভাপতি ও মো. আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। তখন ১৫৩ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ২০১৬ সালে ৭ ফেব্রুয়ারি ৭৩৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর বিভিন্ন হল শাখা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা জেলা ও মহানগরের ৪ শাখায় নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা : জানান ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নওগাঁ বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা ও কেক কাটা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বেলা সাড়ে ১২টায় শহরের মুক্তির মোড় বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে একটি র্যালি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শফিউল আজম রানার সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শেরপুর জেলা সংবাদদাতা জনান, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শেরপুর জেলা ছাত্রদল দলীয় কার্যালয়ে কেক কাটা ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবু রায়হান রুপমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরপুর জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।