পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার :সদ্য সমাপ্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ‘উপরে ফিটফাট ভেতরে ষড়যন্ত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
‘বড়দিন’ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাতে গুলশান কার্যালয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন বাইরে হলো সব ফিটফাট, ভেতরে হলো কী? বুঝতে পারছেন, ভেতরে যত রকমের দুনিয়ার ষড়যন্ত্র, আর বাইরে থেকে সব ফিটফাট দেখায়। বাংলাদেশের মানুষ যে কোনো ধর্মের মানুষ এতো বোকা নয়, আজকাল ছোট বাচ্চারাও এগুলো বুঝে। কাজেই এবার এটা দিয়ে তারা খুব বাহাদুরী নিতে চাইছে যে, আমাদের আমলে নিরপেক্ষ একটি ফেয়ার ইলেকশন হয়েছে, কিন্তু ফেয়ার হয়নি। ভোটের পার্সেন্টেজ দিয়ে বুঝা যায় সব কিছু।’
গত ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানকে পৌনে এক লাখ ভোটে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী।
বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনে উদ্যোগে গুলশানের কার্যালয়ে বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানাতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। অনুষ্ঠানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি শিশুদের নিয়ে বড়দিনের কেক কাটেন।
নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে খালেদা জিয়া বলেন, যেনতেন নির্বাচন কমিশন হলে এ দেশে গণতন্ত্র আসবে না। কেমন নির্বাচন কমিশন হওয়া উচিত তার একটা রূপরেখা আমরা দিয়েছি। সেখানে কিন্তু আমি কী সুবিধা পাবো, সেটা ওখানে লেখা নেই। সেটা সকলের জন্য সমানভাবে নিরপেক্ষভাবে করা হয় নির্বাচন কমিশনের রূপরেখাটা। আমরা বলেছি, এটা নিয়ে আরো আলোচনা হতে পারে, এখানে যদি আরো কেউ ভালো কিছু দিতে পারে, সেটার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে, আমাদের কিছু ভালো না লাগলে তা বাদ দেয়া যেতে পারে। কিন্তু সকলকে নিয়ে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন নিয়ে সমাধানে আসতে হবে।
সরকার প্রধানসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ওরা (সরকারি দল) মুখে বলছে, আপনারা ওদের খুব ভালো করে চেনেনÑ আওয়ামী লীগ। মুখে মুখে এখন বড় বড় কথা বলছে, মানুষের মাথার মধ্যে ঠুকিয়ে দেয়ার জন্যÑ জি হ্যাঁ, প্রেসিডেন্ট যা করবেন, সেটা আমরা মেনে নেবো। কিন্তু প্রেসিডেন্টকে যে ওরা কানে কানে কী বলবেন, প্রেসিডেন্টকে দিয়ে যে কী করাবেন, সেটা কি আমরা বুঝি না। সেজন্য এখন বলছেন, প্রেসিডেন্ট যা করবেন, সেটা আমরা মেনে নেবো। এটাই তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য।
নির্বাচনকালীন সরকারের যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা বলছি, শুধু স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন হলেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, তা কোনো কথা নয়। তার জন্য প্রয়োজন ভোটকালীন সময়ে তিন মাসের জন্য একটা নির্বাচন সহায়ক সরকার। যেটাকে আমরা বলছি নিরপেক্ষ সরকার। সেই সরকার যদি হয়, সেখানে কারচুপি করার সুযোগ থাকবে না বা কাউকে ব্যবহার করার কোনো সুযোগ থাকবে না। ওই রকম একটা সরকার হলে নির্বাচন ফেয়ার হতে পারে।
খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেন, দেশে গণতন্ত্র নির্বাসিত। কখন গণতন্ত্র আসবে কেউ জানে না। দেশে বিচার নেই। এই দেশের বিরোধী দলের জন্য একরকম বিচার আর আওয়ামী লীগের জন্য অন্যরকম। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়, জেলে বন্দি করে রাখা হয়। এরকম অবস্থা চলতে পারে না। সকলকে আজ ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অবশ্য অবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি বলেন, এদেশে এখন কোনো ধর্মের মানুষই নিরাপদ নয়, শুধু আওয়ামী লীগ নিরাপদ। তারা আরামে থাকতে পারে, আর কোনো ধর্মের মানুষ শান্তিতে নির্ভয়ে নিরাপদে থাকতে পারে না।
গাইবান্ধায় সাঁওতাল জনগোষ্ঠী ও ব্রাক্ষণবাড়ীয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনাও তুলে ধরেন বেগম খালেদা জিয়া।
দেশের জঙ্গিবাদ সৃষ্টির জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে খালেদা জিয়া বলেন, সাঁওতালের মতো গরিব মানুষদের বাড়িগুলো পুঁড়িয়ে দেয়া হলো। এটা কারা করেছে? পুলিশ করেছে। কোনো বিচার আছে। কোনো ঘটনা ঘটলে বিএনপি-জামায়াত, নইলে অমুক দল, নইলে তমুক দল, নইলে সন্ত্রাসী। এখন আমরা বলতে চাই যে, এই দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগ জড়িত। এরা সন্ত্রাস করছে, এরাই জঙ্গিবাদ করছে। তাদেরকে ধরলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বন্ধ হবে।
২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির সময়ে বিরোধী আন্দোলন তিন মাসের আন্দোলনের সময়ে পুলিশ ও শাসকদলের লোকজন গাড়িতে আগুন, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে বিএনপির ওপর দোষা চাপিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বেগম খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, আমি ওই সময়ে তিন মাস গুলশানের অফিসে বন্দি অবস্থায়। পুলিশ গেইটে তালা মেরে রেখেছে। ট্রাক- বালুর ট্রাক দিয়ে সব রাস্তা বন্ধ করে রেখেছিল। সরকার বলছে, আমি নাকী ওই সময়ে মিরপুরে গিয়ে গাড়িতে আগুন দিয়েছি। মামলা হয়েছে। আমি কী এতই শক্তিশালী হয়ে গেছি, আমি জ্বিন-ভূত এর আচর আছে, এতোই শক্তিশালী। এই আগুন তো দিয়েছে পুলিশ। যত আগুন ও পেট্রোল বোমা আওয়ামী লীগে মেরেছে। আন্দোলনকে বন্ধ করার জন্য, বিএনপির ইমেজ মানুষের কাছে নষ্ট করার জন্য এসব কাজ আওয়ামী লীগ করেছে।
বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যালবার্ট পি কস্টার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জন গোমেজ, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক মার্শেল এম চিরান, সুব্রত উইলিয়াম রোজারিও, অ্যাডভোকেট মাইকেল বি মালো, শশধর দ্রং, নির্ভয় দাস, ডিউক পি রোজারিও, দিপালী রংদি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খানও উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।